করোনাভাইরাস মন্দা থেকে 'দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে' অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি, কমেছে বেকারত্ব

প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুতগতিতে অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর প্রেক্ষাপটে ট্রেজারার যশ ফ্রিইডেনবার্গ তার বাজেট আপডেটে বেশ কিছু ভালো খবরের পূর্বাভাস দিয়েছেন।

20201217001509191297-original.jpg
হাইলাইটস 

  • বাজেট ঘাটতি $২১৪ বিলিয়ন থেকে কমে $২০০ বিলিয়নেরও নীচে থাকবে 
  • বেকারত্বের হার শতকরা ৮ ভাগের নীচে রয়েছে 
  • জবকীপার স্কিম থেকে বিপুল সাশ্রয়
     
ট্রেজারার যশ ফ্রিইডেনবার্গ বলেছেন প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুত অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি করোনাভাইরাস মন্দা থেকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তবে তিনি তার বাজেট আপডেটে বেশ কিছু ভালো খবরের পূর্বাভাস দিলেও সামনের দিনগুলোতে চ্যালেঞ্জ যে থেকেই যাচ্ছে সেটিও জোর দিয়ে বলেছেন।

গত বৃহস্পতিবার মিঃ ফ্রিইডেনবার্গ তার মধ্য বছরের বাজেট আপডেট জানান, গত অক্টোবরে বাজেট ঘাটতির পূর্বাভাস যেখানে ২১৪ বি. ডলার ছিল, বর্তমানে তা কমে ২০০ বি. ডলারে নেমে এসেছে। 



বেকারত্বের হার শতকরা ৮ ভাগেরও নীচে থাকবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। 

এই ইতিবাচক ধারার উল্লেখযোগ্য কারণগুলোর মধ্যে আছে জবকীপার স্কিম থেকে সাশ্রয় এবং লৌহ আকরিকের দর থেকে অপ্রত্যাশিত আয়।  

মিঃ ফ্রিইডেনবার্গ বলেন, "গ্রেট ডিপ্রেশনের পর সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক ধাক্কা থেকে অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।" 

আরও পড়ুনঃ
"অস্ট্রেলিয়ানরা আবার খরচ করতে শুরু করেছে এবং কাজে ফিরেছে, সেইসাথে সারা দেশে মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াতে শুরু করেছে।"  

অক্টোবর বাজেটে প্রায় ২.২ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান জবকীপার ভর্তুকির ওপর নির্ভরশীল ছিল যা এখন কমে ১.৬ মি. হয়েছে। 

বাজেটে আরো দেখা যায় প্রাদুর্ভাবের সবচেয়ে খারাপ সময়ে চাকরি হারানো ১.৩ মিলিয়ন ব্যক্তিদের ৮৫ ভাগই কাজে ফিরে এসেছে।
"সামনের দিনগুলোতে চ্যালেঞ্জ রয়ে যাচ্ছে, সেটা কঠিন চ্যালেঞ্জ। আমতা এখনো ভাইরাস নির্মূল করতে পারিনি, এটি এখনো বিদ্যমান।"
২০২১ সালের প্রথম কোয়ার্টারে বেকারত্বের হার সর্বোচ্চ ৭.৫ ভাগ থাকবে বলে পূর্বাভাষ দেয়া হয়েছে, অক্টোবরে যা ছিল ৮ ভাগ।  

তবে মিঃ ফ্রিইডেনবার্গ বলেন কোবিদ ১৯-এর ফলে অর্থনীতি কিছু কিছু ক্ষেত্রে ক্ষতির মুখে থাকবে। 

তিনি বলেন, "সামনের দিনগুলোতে চ্যালেঞ্জ রয়ে যাচ্ছে, সেটা কঠিন চ্যালেঞ্জ। আমতা এখনো ভাইরাস নির্মূল করতে পারিনি, এটি এখনো বিদ্যমান।" 

আরও পড়ুনঃ
তবে লেবার দলের ট্রেজারী মুখপাত্র জিম চালমার্স মনে করেন অক্টোবরে সরকারের বিশাল খরুচে বাজেট অস্ট্রেলিয়ানদের যথেষ্ট সংখ্যায় কাজে ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছে। 

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, "তারা ট্রিলিয়ন ডলার ঋণ করেছে, কিন্তু সেই অনুপাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারেনি।"

"অর্থনীতি মন্দা থেকে বেরিয়ে আসছে কিন্তু যথেষ্ট দ্রুততার সাথে ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না।"

বাজেট আপডেটে বলা হয়েছে সারা বিশ্বে কোবিদ ১৯ প্রাদুর্ভাব এখনো চ্যালেন্জিং রয়ে গেছে, এটি থেকে বাঁচতে নানা ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে এবং সেইসাথে বাণিজ্য বিরোধ অস্ট্রেলিয়ার রপ্তানী খাতকে ঘতিগ্রস্ত করছে।
"এই বাজেট আপডেটে এটাই প্রতিফলিত হচ্ছে যে অর্থনীতিতে নানা বাধা রয়ে গেছে, এটি সেইসব ঝুঁকি স্বীকার করে নিচ্ছে।"
চীনের নানামুখী তৎপরতা এবং বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার ফলে অস্ট্রেলিয়ার তুলা, কাঠ, রক লবস্টার, গরুর মাংস, ওয়াইন, এবং বার্লির মতো পণ্যের রপ্তানীতে প্রভাব ফেলছে। 

মিঃ  ফ্রিইডেনবার্গ বলেন, সাম্প্রতিককালে তাদের সবচেয়ে বড়ো বাণিজ্য অংশীদার চীনের সাথে বাণিজ্য বিরোধ 'ভীষণ বড়ো বিষয়' ছিল।  

তিনি বলেন, "সন্দেহ নেই এটি বিরাট ইস্যু, সরকার তাই আমাদের নতুন রপ্তানী বাজার খুঁজতে ব্যাপক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।"
ফাইন্যান্স এন্ড ট্রেড মিনিস্টার সাইমন বার্মিংহাম বলেন, সরকার চীনের নানা সিদ্ধান্তের ফলে সাধারণ ব্যবসা, বিভিন্ন খাত এবং অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতির ওপর যে প্রভাব ফেলবে তা 'খাটো' করে দেখছে না।  

"এই বাজেট আপডেটে এটাই প্রতিফলিত হচ্ছে যে অর্থনীতিতে নানা বাধা রয়ে গেছে, এটি সেইসব ঝুঁকি স্বীকার করে নিচ্ছে।"

তিনি বলেন, "অবশ্যই আমরা রপ্তানিকারক এবং ফার্মারদের জন্য অন্যান্য বিদ্যমান সুযোগ সুবিধার কথা ভাবছি যাতে ঝুঁকি কমে আসে।" 

আরও পড়ুনঃ 
বাজেট আপডেটে আরো রয়েছে ৩.২ বি. ডলারের করোনাভাইরাস অতিরিক্ত প্রণোদনা যা সরকারের কল্যানভাতার সাথে দেয়া হবে, এক্ষেত্রে আগামী মার্চ পর্যন্ত প্রতি পাক্ষিকে ১৫০ ডলার করে দেয়া হবে। 

এই অতিরিক্ত ভাতা এর আগে ছিল পাক্ষিক ৫৫০ ডলার করে, সেসময় বেকার হয়ে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ানদের সহায়তা হিসেবে প্রাথমিকভাবে দেয়া হয়েছিল।  

এছাড়া সরকার আগামী দুই বছরে ৬১ মিলিয়ন করোনাভাইরাস-রোধী ডোজ কিনতে ১.৫ বিলিয়ন ডলারের বরাদ্দ রেখেছে।  

আরো আছে হোম কেয়ার প্যাকেজসহ প্রবীণ সেবা খাতে ১ বিলিয়ন ডলারের অতিরিক্ত বরাদ্দ। 

 ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর জন্য বরাদ্দ রয়েছে ১২৮ মিলিয়ন ডলার। 

২০২৩/২৪ অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি আরো কমে ৬৬ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। 

মিঃ ফ্রিইডেনবার্গ বলেন, "সুড়ঙ্গ শেষে আলো দেখা যাচ্ছে, তবে অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে  আরো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে।" 

আরো দেখুনঃ

Share
Published 18 December 2020 1:31pm
Updated 18 December 2020 2:02pm
By Tom Stayner
Presented by Shahan Alam
Source: SBS


Share this with family and friends