অস্ট্রেলিয়ায় উৎপাদিত হতে যাওয়া সম্ভাব্য করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের ৫০ মিলিয়ন ডোজ কেনার সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে ফেডারেল সরকার।
শুক্রবার সকালে ইউনিভার্সিটি অফ কুইন্সল্যান্ড এবং বায়োটেক কোম্পানী সিএসএল ঘোষণা দেয় যে তারা কোভিড ১৯ ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ট্রায়ালটি করবে না, কারণ ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারী কিছু ব্যক্তির ফলস-পজেটিভ এইচআইভি ফলাফল পাওয়া গেছে।
বৈজ্ঞানিক ফলাফল ও পরামর্শের ভিত্তিতে ন্যাশনাল সিকিউরিটি কমিটি গত বৃহস্পতিবার এই চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় এবং অস্ট্রেলিয়ান সরকারের এই সংক্রান্ত পরিকল্পনা থেকে ভ্যাকসিনটি বাদ দেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, "কোভিড ১৯ প্রাদুর্ভাব নিজেই তার নিয়মে চলমান, আমরা সেই নিয়মের বশবর্তী হতে পারি না।"
"আমাদের ভ্যাকসিন ট্র্যাটেজী ছিল চারটি ভ্যাকসিন চিহ্নিত করা, আমরা ভেবেছিলাম এই ভ্যাকসিনগুলোর যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে, এগুলো তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শেষে অস্ট্রেলিয়ায় সবার নিকট পৌঁছবে। তবে এই পর্যায়ে এসে তা আর সম্ভব হচ্ছে না।"
ইউনিভার্সিটি অফ কুইন্সল্যান্ড এবং বায়োটেক কোম্পানী সিএসএল-এর সাথে চুক্তি বাতিলের পর মিঃ মরিসন ঘোষণা করেছেন যে সরকার ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানী এস্ট্রাজেনেকার কাছ থেকে ২০ মিলিয়ন ডোজ কিনছে, এছাড়া নোভা ভ্যাক্স থেকে কিনছে অতিরিক্ত ১১ মিলিয়ন ডোজ।
হেলথ মিনিস্টার গ্রেগ হান্ট বলেন সব মিলিয়ে সরকার ১৪০ মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন কিনবে যা অস্ট্রেলিয়ার পুরো জনসংখ্যার জন্য যথেষ্ট।
মিঃ হান্ট বলেন, ভ্যাকসিন ক্রয়ের এই অনুপাত বিশ্বের যে কোন দেশের তুলনায় বেশি।
তিনি বলেন, সিএসএলের সাথে চুক্তি বাতিলের বিষয়টি পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে করা হয়েছে এবং এটা বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া।
এদিকে কুইন্সল্যান্ডের প্রিমিয়ার আনাস্তাসিয়া পালুসেই এবিসি নিউজকে বলেছেন যে ইউনিভার্সিটি অফ কুইন্সল্যান্ডের ট্রায়াল বাতিলের ঘটনায় তিনি 'খুবই হতাশ', তবে তিনি উল্লেখ করেন যে অনেক কোম্পানীই ভ্যাকসিন উৎপাদনের প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে।
তিনি বলেন,"আমরা সত্যিই হতাশ, তবে যুক্তরাজ্যে ভ্যাকসিন প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং সেদিকে আমাদের সকলেরই চোখ।'
ইউনিভার্সিটি অফ কুইন্সল্যান্ড এবং সিএসএল শুক্রবার এএসএক্স-এর নিকট এক বিবৃতিতে বলে যে ট্রায়ালের প্রথম পর্যায়ে ২১৬ জন অংশগ্রহণকারীর কোন নিরাপত্তা উদ্বেগ ছিল না।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই ভ্যাকসিন যদি পুরো জনগোষ্ঠীর জন্য উন্মুক্ত করা হতো তবে এইচআইভি পরীক্ষার সুপ্রতিষ্ঠিত কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হতো, তাই এই ট্রায়ালকে আর এগিয়ে না নিতে সিদ্ধান্ত হয়।
সরকার এর আগে নতুন বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ান কমুনিটির কাছে ভ্যাকসিন পৌঁছবে বলে প্রত্যাশা করেছিল।
এর আগে গত সপ্তাহে প্রথম পশ্চিমা দেশ হিসেবে ব্রিটেনে ব্যাপকহারে কোভিড ১৯-রোধী ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হয়, যা উৎপাদন করেছে ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানী ফাইজার ও বায়োএনটেক।
আরো দেখুন: