অস্ট্রেলিয়ায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করতে সরকারের অনুমতি লাগবে

অস্ট্রেলিয়ায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করার আগে অ্যাটর্নি-জেনারেলের অনুমোদন নিতে হবে। অ্যাটর্নি-জেনারেল ক্রিস্টিয়ান পোর্টারের এই ঘোষণা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্থানীয় আইনী সংস্থা। তারা মনে করছে এর ফলে আরও জটিলতার সৃষ্টি হবে।

Attorney-General Christian Porter during House of Representatives Question Time.

Source: AAP

সংবাদ-মাধ্যমের স্বাধীনতার উন্নয়নে মরিসন সরকারের উদ্যোগের সমালোচনা করছে অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্থানীয় আইনী সংস্থা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে লেবার দল। সাংবাদিকদের আরও সুরক্ষার প্রয়োজন বলে মনে করছে তারা।

অ্যাটোর্নি-জেনারেল ক্রিস্টিয়ান পোর্টার ফেডারাল প্রসিকিউটরদেরকে বলেন, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার পূর্বে অবশ্যই তার অনুমোদন নিতে হবে।

ল কাউন্সিল অফ অস্ট্রেলিয়ার প্রেসিডেন্ট আর্থার মোজেস মনে করেন, সরকারকে নিয়ে রিপোর্ট করার দায়ে কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হবে কিনা সে সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়টি কোনো রাজনীতিবিদের হাতে ছেড়ে দেওয়াটা উচিত হবে না।

তিনি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন যে, অ্যাটর্নি-জেনারেলের কাছ থেকে অনুমোদন নেওয়ার এই নির্দেশনা ফেডারাল প্রসিকিউটরদের কাজের স্বাধীনতাকে খর্ব করতে পারে।

তিনি বলেন,

“এদেশে প্রেস ফ্রিডম বৃদ্ধি করবে যে বিষয়টি তা হলো আমাদের আইনগুলোর একটি যথার্থ পর্যালোচনা, যা সাংবাদিকদরে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করাটা সুনিশ্চিত করবে। সরকার যে অপরাধ করছে না সেটা লক্ষ রাখার ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা কাজ করবেন।”

শ্যাডো অ্যাটর্নি-জেনারেল মার্ক ড্রেইফাস বলেন, লেবার দল এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানায়। তবে তিনি মিস্টার পোর্টারের প্রতি আহ্বান জানান সে-সব সাংবাদিকদেরকে আইনের আওতায় না আনতে যাদেরকে নিয়ে ইতোপূর্বে অভিযান চালানো হয়েছে এবং যার ফলে সংবাদ-মাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।”

মঙ্গলবার তিনি এবিসি রেডিওকে বলেন,

“সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের অভিযান বন্ধ করবে না এটি।”

“সরকারের অন্যান্য ভীতি প্রদর্শনকারী কার্যক্রম বন্ধ করবে না এটি। আমাদের যেটা জরুরি ভিত্তিতে দরকার সেটা হলো সংবাদ-মাধ্যমের স্বাধীনতার এবং জনগণের জানার অধিকারের অধিকতর সুরক্ষা।”
AFP offices are searching the ABC offices in Sydney.
AFP officers searching the ABC offices in Sydney. Source: Twitter
ফাঁস হওয়া সরকারি তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি পৃথক পৃথক সংবাদ-প্রতিবেদনের জন্য এবিসি-র সিডনির কার্যালয়ে এবং ক্যানবেরায় নিউজ কর্পের এক সাংবাদিকের বাড়িতে গত জুনে অভিযান চালায় অস্ট্রেলিয়ান ফেডারাল পুলিশ (এএফপি)।

মিস্টার মোজেস বলেন, অ্যাটর্নি-জেনারেলের সদিচ্ছা নিয়ে তার মনে কোনো সংন্দেহ নেই। তবে, এই পরিবর্তনগুলো গণমাধ্যমকে কঠিন অবস্থায় ফেলে দিয়েছে।

তিনি বলেন,

“সাংবাদিকদের দিক থেকে এটি আশঙ্কার জন্ম দিয়েছে যে, প্রসিকিউশন থেকে বাঁচতে হলে তাদেরকে সরকারের তোষামোদ করে অনুগ্রহ লাভের চেষ্টা করতে হবে।”

“গণমাধ্যমকে অবশ্যই জনস্বার্থের বিষয়গুলো নিয়ে আইনানুগ রিপোর্ট করতে হবে, কোনো প্রকার ভীতি কিংবা আনুকূল্য ছাড়া।”

এই নির্দেশনা নিয়ে নিউজ কর্পও সতর্ক রয়েছে।

নিউজ কর্পের গ্রুপ একজিকিউটিভ ক্যাম্পবেল রেইড বলেন,

“জনগণকে অবহিত করার ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ভূমিকা সনাক্ত করতে চাচ্ছিল গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলো। এক্ষেত্রে, তথাকথিত এই সুরক্ষা দীর্ঘ পথকে সংক্ষিপ্ত করেছে।”

জাতীয় সম্প্রচারমাধ্যম এবিসি এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের একজন মুখপাত্র একটি স্টেটমেন্টে বলছেন,

“তদন্তগুলো থেকে এবং এবিসির সাংবাদিকদের উপর পরিচালিত এএফপির তদন্তের উপসংহার থেকে প্রাপ্ত সেই সুপারিশগুলো দেখতে চায় এবিসি।”

এ সম্পর্কে ইংরেজিতে আরও পড়ুন এই 

Follow SBS Bangla on .

Share
Published 1 October 2019 12:16pm
Updated 1 October 2019 12:20pm
By Sikder Taher Ahmad

Share this with family and friends