মঙ্গলবার বিকালে অরবিন্দ কেজরিওয়াল অতিশী মারলেনা এবং মণীশ সিসোদিয়াকে সঙ্গে নিয়ে দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরের বাসভবনে যান। সেখানেই নিজের ইস্তফার কথা সরকারিভাবে ঘোষণা করেন তিনি। একই সঙ্গে অতিশী মারলেনাও নতুন সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছেন।
এর আগে সকালেই আম আদমি পার্টি বা আপের বিধায়কদলের বৈঠকে অতিশী মারলেনাকে দিল্লির পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে। তাঁর নাম প্রস্তাব করেন আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল নিজেই। ২৬-২৭ সেপ্টেম্বর দিল্লি বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন চলাকালীন শপথ নেবেন অতিশী মারলেনা। তবে মুখ্যমন্ত্রীর পদে অতিশী মারলেনার মেয়াদ বেশিদিনের নয়। আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতেই দিল্লিতে ভোট হওয়ার কথা। অরবিন্দ কেজরিওয়াল নিজে অবশ্য নভেম্বরেই দিল্লিতে ভোট চান।
দু’দিন আগে অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়েছিলেন, দু'দিনের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেবেন তিনি এবং মানুষ রায় না দেওয়া পর্যন্ত তিনি ফের মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসবেন না। তিনি প্রত্যেক বাড়িতে যাবেন, দরজায় দরজায় পৌঁছবেন। মানুষের রায় না পাওয়া পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসবেন না তিনি।
কেন এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তা ব্যাখ্যা করে অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, আদালত জামিন দিয়েছে। এই মামলা চলবে। আইনজীবীদের তিনি বলেছেন, আদালত থেকে মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসবেন না। কিন্তু আইনজীবীরা বলেছেন, মামলা ১০-১৫-২০ সাল চলতে পারে। আদালত যা করতে পারত করেছে। যে আইনে জামিন হয় না, সেই আইনে আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন তিনি। কিন্তু এখন তিনি জনতার আদালতে এসেছেন। জনতা বলুক, তাঁরা তাঁকে দোষী মনে করেন না নির্দোষ। অরবিন্দ কেজরিওয়াল সৎ না অসৎ। উল্লেখ্য, প্রায় ছ'মাস দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি ছিলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
মঙ্গলবার আম আদমি পার্টি বা আপের পরিষদীয় বৈঠকে দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তারপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অতিশী মারলেনা বলেছেন, দিল্লিতে একজনই মুখ্যমন্ত্রী আছেন, তিনি হলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তাঁকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যেই আগামী কয়েক মাস কাজ করবেন তিনি।
অতিশী মারলেনা বলেছেন, তিনি যদি অন্য কোনও দলে থাকতেন, তাহলে তাঁকে হয়তো ভোটে লড়ার জন্য টিকিটই দেওয়া হত না। কিন্তু অরবিন্দ কেজরিওয়াল তাঁকে বিশ্বাস করেছিলেন। তাঁকে বিধায়ক বানিয়েছিলেন। পরে তাঁকে মন্ত্রীও করেন। এখন মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন। অতিশী মারলেনার সংযোজন, যতদিন তিনি এই বড় দায়িত্বে থাকবেন, ততদিন একটাই লক্ষ্য থাকবে, তা হল দিল্লির জনগণকে রক্ষা করা। সেই চেষ্টাই তিনি করবেন। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নির্দেশে সরকার পরিচালনা করবেন।
READ MORE
দিল্লিতে আবারও অরবিন্দ কেজরিওয়াল
অন্যদিকে, অতিশী মারলেনাকে দিল্লির পাপেট মুখ্যমন্ত্রী বলে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। দিল্লির বিজেপি প্রধান বীরেন্দ্র সচদেভা বলেছেন, অরবিন্দ কেজরিওয়াল অতিশী মারলেনাকে অনিচ্ছাকৃতভাবে মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত করেছেন। ফলে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর মুখ বদলালেও দুর্নীতিগ্রস্ত চরিত্রের পরিবর্তন হয় নি।
বিরোধী বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র প্রদীপ ভান্ডারি বলেছেন, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের তার দলের প্রতি আস্থা নেই বলে তার চেয়ে দুর্বল কাউকে মুখ্যমন্ত্রী করেছেন। তিনি বলেছেন, অরবিন্দ কেজরিওয়াল একজন পুতুলকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী করেছেন। দিল্লিতে সরকারের অন্দরে অভ্যন্তরীণ ক্ষমতা দখলের লড়াই চলছে।
অন্যদিকে, দিল্লি কংগ্রেস প্রধান দেবেন্দ্র যাদব বলেছেন, অতিশী মারলেনা মাত্র তিন মাসের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকবেন। আর ২০২৫ সালের দিল্লিতে কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী হবে।
এর মধ্যে আবার দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী অতিশী মারলেনা সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগে রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে স্বাতী মালিওয়ালকে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আম আদমি পার্টি। তাঁকে পুতুল মুখ্যমন্ত্রী বলে কটাক্ষ করে স্বাতী মালিওয়াল বলেছেন, দিল্লির জন্য একটি দুঃখের দিন। এমন একজন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হলেন, যার পরিবার সন্ত্রাসবাদী আফজল গুরুর ফাঁসি আটকাতে দীর্ঘ লড়াই লড়েছিল।
উল্লেখ্য, দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রীর বাবা-মা আফজল গুরুকে বাঁচাতে রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। আর স্বাতী মালিওয়ালের বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পরেই আপের তরফে দিলীপ পান্ডে বলেছেন, যদি তাঁর ন্যূনতম লজ্জা থাকে, তবে স্বাতী মালিওয়াল রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিন। তিনি বরং বিজেপির টিকিটে রাজ্যসভায় যান। উল্লেখ্য, ১৩ মে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ঘনিষ্ঠ বৈভব কুমারের বিরুদ্ধে নিগ্রহের অভিযোগ তুলেছিলেন এই স্বাতী মালিওয়াল।
READ MORE
এসবিএস বাংলা ফেসবুক নীতিমালা
এসবিএস বাংলা এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত দক্ষিণ এশীয় সকল জনগোষ্ঠীর জন্য এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেলের অংশ।
এসবিএস বাংলা লাইভ শুনুন প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় এসবিএস সাউথ এশিয়ান-এ, ডিজিটাল রেডিওতে, কিংবা, আপনার টেলিভিশনের ৩০৫ নম্বর চ্যানেলে। এছাড়া, এসবিএস অডিও অ্যাপ-এ কিংবা আমাদের ওয়েবসাইটে। ভিজিট করুন .
আর, এসবিএস বাংলার এবং ইউটিউবেও পাবেন। ইউটিউবে সাবসক্রাইব করুন চ্যানেল। উপভোগ করুন দক্ষিণ এশীয় ১০টি ভাষায় নানা অনুষ্ঠান। আরও রয়েছে ইংরেজি ভাষায় ।