কোভিড-১৯ আক্রান্তদের যেসব সামাজিক বিরূপতার মুখোমুখি হতে হয়

typical COVID-19 vaccination certificate

Source: SBS

অস্ট্রেলিয়ায় কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণের পর কোভিডে সংক্রমিত হওয়া মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভ্যাক্সিনেশনের পরেও যারা আক্রান্ত হন, তাদের মধ্যে কোভিডের মৃদু উপসর্গ দেখা দেয়।


 লুইজা ছদ্মনামের ২৫ বছর বয়সী তরুণী সম্প্রতি কোভিড-১৯ অসুখ থেকে সেরে উঠেছেন। তিনি সিডনী থাকেন। তিনি কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পূর্বাপর অভিজ্ঞতা বিনিময় করেছেন এসবিএস নিউজের সাথে।  

এক সপ্তাহ আগে লুইজার কোয়ারেন্টিন বা সংগ নিরোধ কাল শেষ হয়েছে। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ "নিউ সাউথ ওয়েলস হেলথ" তাকে এক সপ্তাহ আগে ছাড়পত্র দিয়েছে। 

কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র মিললেও সমাজের বিরূপতা থেকে তার ছাড় মেলেনি। কোভিডে আক্রান্ত কারোর প্রতি সামাজিক বিরূপতা অতিমারীর শুরু থেকে দেখা গেছে।
করোণাভাইরাস নিয়ে জনমানসে বিভিন্ন ভ্রান্তি ও অপবিশ্বাস আছে। এই অসুখে যারা আক্রান্ত হন, বা অসুখ থেকে সেরে উঠেন, তাদেরকে সমাজে বিরুপ প্রতিক্রিয়ায় সম্মুখীন হতে হয়। 

লুইজার কোভিড হয়েছে জানার পর মানুষ আতংকিত হয়েছে। এই ভয় যেন অস্পৃশ্যতা বা ছুতমার্গের মতই। 

শুধু তাই নয় আক্রান্ত ব্যক্তিদের নানান বিধিমালার বেড়াজালে পড়তে হয়। সরকারের ভ্যাক্সিনেটেড ইকোনমির কঠিন বিধিবিধান মানতে হয়।

উদাহারণস্বরূপ নিউ সাউথ ওয়েলসে কারোর করোণা সেরে যাওয়ার পর ছয় মাসের মধ্যে তিনি এই রোগের পরীক্ষা করাতে পারেন না, কেননা তার মধ্যে আবার রোগ সনাক্ত হতে পারে৷ যদিও তিনি সংক্রমনশীল নাও হতে পারেন। 

লুইজাকে কাজে যাওয়ার আগে প্রতিদিন র‍্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট করতে হয়। কিছু ক্ষেত্রে সাক্ষাতের আগে তাকে পিসিআর টেস্টও করতে হয়। 

সব ডোজ টিকা নেওয়া নিউ সাউথ ওয়েলস অধিবাসীদের ভ্যাক্সিনেশন সার্টিফিকেট সাথে রাখতে হয়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা পরিষেবা কেন্দ্রে যেতে হলে এই টিকাসনদ দেখাতে হয়।  

অতিসম্প্রতি ভাইরাসে আক্রান্ত হবার কারণে  লুইজা তার দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে পারছেন না।

এই কারণে তাকে নিউ সাউথ ওয়েলস কর্তৃপক্ষ আলাদা একটি মেডিক্যাল ক্লিয়ারেন্স নোটিশ দিয়েছে। 

 এই সনদ দিয়ে তিনি সম্পূর্ন টিকাপ্রাপ্তদের মত সবখানে যেতে পারবেন।  কিন্তু অনেক জায়গাতেই তার এই বিশেষ সনদ মানুষ চিনতে পারেনি।   

নিউ সাউথ ওয়েলস হেলথ এর বিবৃতি অনুযায়ী সরকার ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করে কি ধরনের ছাড়পত্র বা ডকুমেন্টস ব্যবহার করতে হবে তা অবহিত করা হয়েছে। জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে তার ছবি অনলাইনে দেওয়া হয়েছে। 

সিডনীর জেনারেল প্রাকটিশনার ডক্টর এলিজাবেথ অলিভার ঘরে থাকা কোভিড-১৯ রোগীদের টেলিহেলথ সেবা দিয়ে আসছেন। 

তার মতে কোভিড নিয়ে জনসচেতনতা সামনের দিনে আরও বাড়বে আর এই রোগ নিয়ে বিভ্রান্তি ও ভুল ধারণা দূর হবে; কেননা কোভিড থেকে সেরে উঠা মানুষের সংখ্যা উত্তরোত্তর বাড়ছে। 

সরকারকে কোভিড- ১৯ সংক্রমণের মডেলিং করতে সহায়তা করেছে  বারনেট ইন্সটিটিউট। এই সংস্থার ভাইরোলজিস্ট এবং ডেপুটি ডিরেক্টর ডেভিড এন্ডারসন বলেন,  এটা খুবই দুঃখজনক। 

তিনি পরিবর্তনশীল পরিস্থিতি অনুযায়ী সবাইকে খাপ খাইয়ে নেওয়ার পাশাপাশি সে অনুযায়ী বিভিন্ন নীতিমালা অনুসরণের আহবান জানান। 

 লুইজা তার দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেওয়ার অপেক্ষায় আছেন। কোভিড থেকে সেরে উঠার ছয় সপ্তাহ পর তাকে এই ডোজ নিতে হবে। 

কোভিড পরবর্তিতে এই বিষয়ে আরও জনসচেতনতা বাড়ানো দরকার বলে তিনি মনে করেন। 

কোভিডে আক্রান্ত হওয়া সহ বিভিন্ন সামাজিক বৈরি পরিবেশের মধ্যে তিনি জীবনের নতুন এক অর্থ খুঁজে পেয়েছেন। 

  বাংলা সহ বিভিন্ন ভাষায় করোনাভাইরাস বিষয়ে স্বাস্থ্যগত তথ্য আর সরকারের বিভিন্ন পরিষেবা নিয়ে জানতে ভিজিট করুন sbs.com.au/coronavirus

প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন। 

Follow SBS Bangla on 


 


Share