অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসনের ক্ষেত্রে আপনাকে অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এগুলোর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি হলো অস্ট্রেলিয়ার ঠিক কোথায় এসে বাস করবেন সে বিষয়টি নির্ধারণ করা।
বহু অভিবাসী এমন সাবার্বে বাস করার সিদ্ধান্ত নেন যে সাবার্বটিতে বা তার কাছাকাছি এলাকায় তার নিজের দেশের লোকজন বেশি বসবাস করে। নিজের ভাষায় কথা বলার সুবিধা, যারা একই রকম পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছেন, সে রকম অভিজ্ঞতার লোকজনের কাছ থেকে সহায়তা নেওয়ার সুবিধা এবং একই সংস্কৃতির কারণে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।
রিজিওনাল অপরচুনিটিস অস্ট্রেলিয়ার সিইও মাহির মোমান্ড বলেন, সেটেলমেন্টের ক্ষেত্রে পরিচিত গ্রোসারি স্টোর থেকেও কখনও কখনও সহায়তা পাওয়া যায়।
বড় বড় অভিবাসী সম্প্রদায়গুলোকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বড় বড় শহরগুলোতে বাস করতে দেখা যায়। তাদের আশেপাশে নানা রকম সহায়তা পাওয়া যায়। যেমন, মাইগ্রান্ট সেন্টার। মাহির মোমান্ড বলেন, বড় শহরে বাস করাটা ভাল। সেখানে বিভিন্ন সাহায্যকারী সংগঠন পাওয়া যায়।
অ্যাডিলেইডের অস্ট্রেলিয়ান রিসোর্স সেন্টারে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেন বেরিভানা মোহাম্মদ। বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনা থেকে ১৯৯৫ সালে শরণার্থী হিসেবে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় আসেন। বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে তিনি যুক্ত। তবে, মায়ের মাধ্যমে বসনিয়ান সম্প্রদায়ের সঙ্গে তিনি শক্তিশালী একটি সম্পর্ক বজায় রাখেন।
তিনি বলেন, অ্যাডিলেইডে বসনিয়ান সম্প্রদায়ের কাছাকাছি থাকার বিষয়টি ইতিবাচক বিষয়। তবে, এ কারণে তার মায়ের জন্য ইংরেজি শেখাটা অনেক কঠিন হয়ে গেছে।
ফাতিমা সালিহি অ্যাডিলেইডের নিকটবর্তী এলাকায় বাস করেন। ২০১৮ সালে আফগানিস্তান থেকে তার পরিবারের সঙ্গে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় আসেন।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন এবং বেশ কয়েকটি ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত। তবে, এতো কিছুর পরও তিনি আফগান সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে চান।
তার বাবা-মা এখনও ইংরেজি শিখছেন। তাদের জন্য আফগান সম্প্রদায়ের সংস্পর্শে থাকাটা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার নিজ সম্প্রদায়ের সহায়তা যেখানে গুরুত্বপূর্ণ, সেখানে মোমান্ড “লিভিং ইন পকেটস” সম্পর্কে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, এসব এলাকায় যারা নিজেদের ভাষায় কথা বলেন, তারা নিজেদেরকে অস্ট্রেরিয়ার অন্যান্য সম্প্রদায়ের কাছ থেকে গুটিয়ে রাখেন এবং তারা ইংরেজি ভাষাও শিখেন না। এভাবে তারা অস্ট্রেলিয়ার সংস্কৃতি অনুধাবন করতে ব্যর্থ হন।
এসব সত্ত্বেও, মোহাম্মদ বলেন, নিজের সম্প্রদায়ের কাছাকাছি থাকাটা অভিবাসীদের জন্য ইতিবাচক, বিশেষত যখন তারা প্রথম আসেন। আর, পরবর্তীতে তাদের মধ্যে অনেকেই অস্ট্রেলিয়ার সমাজে অবদান রাখেন।
আপনার নিজের সম্প্রদায়ের কাছাকাছি থাকার অর্থ সবসময় এটা নয় যে আপনাকে বড় শহরে থাকতে হবে। অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন রিজিওনেও অনেক অভিবাসী সম্প্রদায় বাস করে।
বেশিরভাগ অভিবাসী বিশেষত, যারা এদেশে নতুন আসে, তারা তাদের সম্প্রদায়ের কাছ থেকে নানা রকম সহায়তা পেয়ে থাকে। তবে, অন্যান্য অস্ট্রেলিয়ানদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়াও একই রকম গুরুত্ব রাখে।
প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।