হাইলাইটস
- বিশ্বের বৃহত্তম স্বাস্থ্য সঙ্কটের মুখোমুখি হওয়ার পরেও অস্ট্রেলিয়া তার কৌশলী আর্থিক নীতির কারণে ভোক্তা এবং অর্থনীতিকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় অভূতপূর্ব মাত্রায় সুরক্ষিত রাখতে পেরেছে।
- বেকারত্বের হার কমিয়ে আনতে ফেডারেল এবং রাজ্য সরকারগুলো যৌথভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
- অস্ট্রেলিয়ার মার্কেট অত্যন্ত স্হিতিশীল, তবে এই মুহূর্তে বাড়ি কেনার উপযুক্ত সময় নয়। আবাসন খাতের ক্ষেত্রে সরকার বিপুল অর্থ প্রণোদনা দিচ্ছে যা মার্কেটকে স্ফীত করছে, যা 'ডিমান্ড-সাপ্লাই ড্রিভেন' মার্কেট নয়, বরং কৃত্রিম।
- করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব দীর্ঘায়িত হলে কঠিন সংকটে পড়তে পারে অভিবাসী নির্ভর অর্থনীতি।
২০২০ অনেক মিশ্র স্মৃতি দিয়ে শেষ হতে চলেছে। তবে অস্ট্রেলিয়ার আর্থিক বাজারের ইতিবাচক দিকটি বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় খুব মন্দ ছিল না। বিশ্বের বৃহত্তম স্বাস্থ্য সঙ্কটের মুখোমুখি হওয়ার পরেও অস্ট্রেলিয়া তার কৌশলী আর্থিক নীতির কারণে ভোক্তা এবং অর্থনীতিকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় অভূতপূর্ব মাত্রায় সুরক্ষিত রাখতে পেরেছে।
২০২১ সালের আর্থিক বাজারে আমাদের গ্রাহকদের পরবর্তী করণীয় বিষয়ে এসবিএস বাংলার সাথে কথা বলেছেন ডঃ তন্ময় চৌধুরী।ডঃ তন্ময় চৌধুরী পার্থের অ্যাডিথ কাউয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল অফ বিজনেস অ্যান্ড ল বিভাগে ফাইন্যান্স এন্ড অ্যাকাউন্টিংয়ের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত। তিনি আর্থিক বাজার এবং প্রতিষ্ঠানগুলিতে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা নিয়ে গবেষণা করছেন এবং বর্তমানে তিনি আর্থিক বাজারে ভবিষ্যত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করছেন। তিনি আমাদের ব্যাখ্যা করেছেন অস্ট্রেলিয়ান গ্রাহকরা আর্থিক বাজারে ২০২১ সালে কী আশা করতে পারেন।
Dr Tonmoy Choudhury Source: Dr Tonmoy Choudhury
আরও দেখুনঃ
অস্ট্রেলিয়া অন্যান্য দেশের তুলনায় কোভিড ১৯ মোকাবেলায় যথেষ্ট ভালো করেছে বিশেষ করে আর্থিক খাতে, প্রশ্ন হচ্ছে ২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়ার আর্থিক বাজার কি আবারও কোভিড ১৯ পূর্ব অবস্থায় ফিরে আসতে সক্ষম হবে?
ডঃ তন্ময় চৌধুরী মনে করেন, অস্ট্রেলিয়ার কোভিড ১৯ পূর্ববর্তী অবস্থা হয়তো কখনোই ফেরত আসবে না, তবে সেই মাত্রার সাফল্য পেতে অস্ট্রেলিয়ার পুরো অর্থনৈতিক কাঠামো একটু অন্য দিকে পরিচালিত করে আগের জায়গায় ফেরত নিয়ে আসতে হবে।
“কিন্তু আপনারা সকলেই জানেন যে কথাটা বারবার বলা হচ্ছে 'ওয়ার্ল্ড উইল নট বি সেইম আফটার কোভিড নাইনটিন' এবং আমি বিশ্বাস করি সাফল্য হয়তো একটা মাত্রায় পাবো, কিন্তু আমার মনে হয় না অর্থনীতি ঠিক সেই মাত্রায় পরিচালিত হবে। তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস ২০২১ সালে আমাদের বাজার আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসবে, যদি অস্ট্রেলিয়াসহ সারা বিশ্বে ভ্যাকসিনেশন সফলভাবে পরিচালিত হয়।”
বর্তমানে বেকারত্বের হার কমে এসেছে যদিও তা কোভিড ১৯ পূর্বাবস্থায় এখনো নেমে আসেনি, এ অবস্থায় ২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিতে ব্যক্তি আয়ের ক্ষেত্রে কর্মক্ষম অস্ট্রেলিয়ানদের সার্বিক চিত্রটি কেমন হবে?
এ প্রসঙ্গে ডঃ চৌধুরী এসবিএস বাংলাকে বলেন, কর্মক্ষম অস্ট্রেলিয়ানদের ক্ষেত্রে 'পার্টিসিপেশন রেইট' (যারা কাজ করতে চান তাদের হার) প্রায় কোভিড পূর্ব অবস্থায় চলে এসেছে, এবং 'আনএমপ্লয়মেন্ট রেইট' (বেকারত্বের হার) পূর্বাবস্থায় না থাকলেও অনেক উন্নতি হয়েছে।
আরও দেখুনঃ
‘'আনএমপ্লয়মেন্ট রেইট নামিয়ে আনতে ফেডারেল এবং রাজ্য সরকারগুলো যৌথভাবে অনেক চেষ্টা করেছে। আমরা মনে করি ২০২১ সালে না হলেও ২০২২ সালের মধ্যে বেকারত্বের হার কমে আবারো ৫.৫ শতাংশে নেমে আসবে।”
তবে তিনি বলেন, কোভিড ১৯ পরবর্তী অবস্থায় অনেকেই দক্ষতা বাড়িয়ে ভিন্ন পেশায় চলে যাবে।
“অস্ট্রেলিয়া যেটা ভালো করেছে, তা হলো পুরো সিস্টেমটিকে দ্রুত গতিতে সিদ্ধান্ত নিয়ে আগের অবস্থায় নিয়ে এসেছে। যদিও বাজেট ঘাটতি অনেক বেশি, তারপরেও আমার ধারণা ২০২১-২২ সালের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া আগের অবস্থায় ফিরে আসবে।”
সার্বিকভাবে অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি এবং কর্মসংস্থানের ইতিবাচক দিকগুলো বিবেচনা করে যারা বিনিয়োগ করতে চান তাদের জন্য কি পরামর্শ থাকছে? তাদের জন্য সরকারের দেয়া প্রণোদনা ব্যবহার করে এখনই কি বাড়ি কেনার উপযুক্ত সময়?
আবাসন খাতের ক্ষেত্রে সরকার বিপুল অর্থ প্রণোদনা দিচ্ছে যা মার্কেটকে স্ফীত করছে, যা 'ডিমান্ড-সাপ্লাই ড্রিভেন' মার্কেট নয়, বরং কৃত্রিম।
এ বিষয়টি ডঃ চৌধুরী কিছুটা ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেন।
বিনিয়োগ বিষয়ে তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ার মার্কেট অত্যন্ত স্হিতিশীল, তবে এই মুহূর্তে বাড়ি কেনার উপযুক্ত সময় নয়। আবাসন খাত ছাড়া শিক্ষা, চিকিৎসাসহ আরো অন্যান্য খাত রয়েছে বিনিয়োগের জন্য সেগুলোও ভাবা উচিত।
“আবাসন খাতের ক্ষেত্রে সরকার বিপুল অর্থ প্রণোদনা দিচ্ছে যা মার্কেটকে স্ফীত করছে, যা 'ডিমান্ড-সাপ্লাই ড্রিভেন' মার্কেট নয়, বরং কৃত্রিম। এতে বাড়ির দামও বাড়ছে হু হু করে। তবে সরকার যখন এই প্রণোদনা বন্ধ করে দেবে এই বছরের মাঝামাঝি তখন প্রপার্টি মার্কেট আবারো চাহিদা-সরবরাহ নির্ভর হবে এবং সেসময় বাড়ির যে মূল্য হবে সেটাই হচ্ছে প্রকৃত বাজার দর, সেটাই হবে বাড়ির কেনার ভালো সময়।”
ডঃ তন্ময় চৌধুরীর পুরো সাক্ষাতকারটি বাংলায় শুনতে ওপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
আরও দেখুনঃ