নিরুপমা রহমান, যিনি নীরা রহমান নামেও পরিচিত, তিন বছর বয়সে সংগীতে হাতেখড়ি হয় শ্রীমতি স্বপ্না রায়ের কাছে। তারপর গুরু কৃঞ্চকান্ত আচার্য, পণ্ডিত বারীণ মজুমদার, শ্রীমতী দিপালী নাগের কাছে শেখার সুযোগ পান।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে অনার্স করে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি ভাষাতত্ত্ব নিয়ে মাস্টার্স করেন। তারপর অস্ট্রেলিয়ার মনাশ ইউনিভার্সিটি থেকে ডীনস এ্যাওয়ার্ডসহ রিসার্চ মাস্টার্স এবং ইউনিভার্সিটি অফ মেলবোর্ন থেকে পিএইচডি শেষ করেন । বর্তমানে মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটিতে কলা ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদে অধ্যাপনার পাশাপাশি উচ্চতর ও বৈশ্বিক শিক্ষাপদ্ধতি উদ্ভাবন আর তার প্রায়োগিক পরিপ্রেক্ষিত গবেষণা করছেন নিরুপমা।
এসবিএস বাংলার সাথে নিরুপমা রহমান কথা বলেছেন তার সংগীত চর্চ্চা এবং পেশাগত জীবন নিয়ে।
নিরুপমা রহমান বলেন, "গান, সঙ্গীত বা সুর যেটাই বলি না কেন এর মধ্যে যে সার্বজনীনতা আছে, জাতি, ধর্ম, বর্ণ ছাপিয়ে মানুষকে আকৃষ্ট করার যে ক্ষমতা, সেটাই গানকে অন্যরকম জায়গায় নিয়ে গেছে।"
নিরুপমা রহমানের শিক্ষাজীবন অত্যন্ত কৃতিত্ত্বপূর্ণ, তার পাশাপাশি গানের চর্চা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "পড়াশোনাটা আমি যেমন ভালোবেসেছি, তেমনি গানকেও আমি ভালোবেসেছি।""তবে ছোটবেলা থেকে পারিবারিকভাবে গানবাজনা করলেও, এটাও জানতাম গানটা ঠিক আমাদের পেশাগত জায়গা নয়।"
Nirupama Rahman Source: সুবীর কুমার দাস
তিনি বলেন, শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম নেয়ার কারণে এর একটি প্রভাব তার মধ্যে ছিল।
বিদুষী শ্রীমতী দিপালী নাগ নিরুপমা কে শুধু গানই শেখাননি, তিনি শিখিয়েছেন সঙ্গীতকে কিভাবে নিজের মাঝে ধারন করতে হয়, শাস্ত্রীয় সঙ্গীতকে অনুভব করতে শিখিয়েছেন, প্রতিটি রাগের প্রকাশে কিভাবে অনুভুতি তুলে ধরতে হয়, তাও শিখিয়েছেন।
আর বিশিষ্ট রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ ওয়াহিদুল হকের কাছে তালিম নিরুপমাকে বাণীপ্রধান বাংলা গানকে, গানের বাণীকে , বাণীর সাথে সুরের মেলবন্ধনকে খুঁজতে, চিনতে আর ধারণ করতে শিখিয়েছে।
দীপালি নাগ আর ওয়াহিদুল হক এই দুইজন মানুষ নিরুপমার সঙ্গীত জীবনে বিরাট প্রভাব ফেলেছেন।
পছন্দের গানের ধারা সম্পর্কে বলতে গিয়ে নিরুপমা বলেন "নজরুলের গান আমার ভীষণ ভালো লাগার জায়গা, আমার গুরু কৃষ্ণকান্ত আচার্য অসম্ভব ভালো নজরুলের গান গাইতেন, এটিও আমার একটি অনুপ্রেরণার জায়গা ছিল।"
বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে দু'দশকের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন নিরুপমা রহমান বর্তমানে মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষক। তিনি কলা ও সমাজ বিজ্ঞানে উচ্চতর শিক্ষা ব্যবস্থাকে কিভাবে বৈশ্বিক, কর্মমুখী এবং সৃজনশীল করা যায় সে বিষয়ে গবেষণা করছেন।
স্বামী ও একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিরুপমা রহমান মেলবোর্নে বাস করছেন প্রায় বিশ বছর ধরে।
তিনি বলেন, "অস্ট্রেলিয়ার বাঙালি কমিউনিটিতে আমাদের মধ্যে রক্তের সম্পর্ক না থাকলেও আমাদের মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ক হয়ে যায়, সেটা আমাকে ভীষণভাবে আনন্দ দেয়।"
নিরুপমা রহমানের পুরো সাক্ষাৎকারটি শুনতে ওপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন
আরও দেখুনঃ