অস্ট্রেলিয়া জুড়ে সাঁতার-দক্ষতার অভাব রয়েছে বলে একটি রিপোর্টে উঠে এসেছে

Little girl at edge of pool

WIMSAFER Report discovers 56 per cent of Australian parents are unsure if their child could get themselves to safety in a water emergency. Source: Getty / Bolot/Getty Images

নতুন একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, অস্ট্রেলিয়ায় সাঁতার না জানা ব্যক্তির সংখ্যা সন্তোষজনক নয়। অস্ট্রেলিয়ায় এ বছর পানিতে ডুবে যাওয়ার ঘটনা ১৫ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি পাঁচ জনের মাঝে মাত্র এক জন প্যারেন্ট মনে করেন তার সন্তান সাঁতার জানেন। তবে, বহু প্যারেন্ট বলেন, তাদের সন্তানদেরকে সাঁতার প্রশিক্ষণে পাঠানোর মতো আর্থিক সামর্থ্য তারা রাখেন না।


গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো
  • বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার প্রায় ৫০ শতাংশ শিশু সাঁতারের প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য কোথাও ভর্তি হয় নি।
  • ২৫ শতাংশ পরিবার সামর্থ্যের অভাবে তাদের সন্তানদেরকে সাঁতার প্রশিক্ষণের জন্য পাঠাতে পারেন না।
  • ২১ থেকে ২৭ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়া জুড়ে সুইমসেফার উইক পালন করছে পাঁচ শতাধিক স্কুল।
শিশুদের পানি-নিরাপত্তার বিষয়টি অনেক গুরুত্ববহ। কিন্তু, বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার প্রায় ৫০ শতাংশ শিশু সাঁতারের প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য কোথাও ভর্তি হয় নি।

সুইম অস্ট্রেলিয়ার নতুন সুইমসেফার রিপোর্টে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এতে আরও দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়ায় অর্ধেকেরও বেশি সংখ্যক প্যারেন্ট অর্থাৎ, বাবা-মা এবং অভিভাবক জানেন না যে, ওয়াটার ইমার্জেন্সিতে তাদের শিশু সন্তানেরা নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারবে কিনা।

আরেকটি বিষয় হলো, কিছু সংখ্যক বাবা-মা কিংবা অভিভাবক নিজেরাই সাঁতার জানেন না। অস্ট্রেলিয়ায় এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি সংখ্যক প্যারেন্ট দাবি করেন যে, এ সংক্রান্ত জরুরি পরিস্থিতি দেখা দিলে তারা সেটা সামাল দিতে পারবেন কিনা সে বিষয়ে তারা আত্মবিশ্বাসী নন।
অস্ট্রেলিয়ান অলিম্পিক সুইমার জিয়ান রুনি সুইমসেফার উইক অ্যামব্যাসাডর হিসেবে কাজ করছেন। তিনি বলেন, এসব পরিসংখ্যান বিপদাশঙ্কাপূর্ণ।

আর্থিক সামর্থ্যের অভাবে অনেকেই তাদের শিশু সন্তানদেরকে সাঁতার প্রশিক্ষণে ভর্তি করতে পারেন না। এক্ষেত্রে পরিস্থিতির উন্নয়নে সুইম ইট ফরোয়ার্ড নামে নতুন একটি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

সুইম অস্ট্রেলিয়ার সিইও ব্রেন্ডন ওয়ার্ড এ সম্পর্কে বলেন, ২৫ শতাংশ পরিবার সামর্থ্যের অভাবে তাদের সন্তানদেরকে সাঁতার প্রশিক্ষণের জন্য পাঠাতে পারেন না।

সাঁতার শেখার গুরুত্বের ওপর জোর দেন একজন অভিভাবক অ্যাশ ফ্লেমিং। সাঁতার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা যে ব্যয়-বহুল সে বিষয়ে তিনি একমত হন। তিনি বলেন, তার পরিবার অনেক ভাগ্যবান যে, তাদের এই সামর্থ্য ছিল।

লাইফ সেভিং স্কিলস-এর এই প্রশিক্ষক আরও বলেন, তার শিশু-সন্তানের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রেও এ বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।

ভাষা ও সংস্কৃতির দিক দিয়ে বৈচিত্রপূর্ণ জনগোষ্ঠীগুলোকে অস্ট্রেলিয়ায় সংক্ষেপে CALD বা কল্ড বলে অভিহিত করা হয়। সুইম অস্ট্রেলিয়ার সিইও ব্রেন্ডন ওয়ার্ড বলেন, পরিসংখ্যানে দেখা যায়, পানিতে ডুবে যাওয়ার ঘটনার রিপোর্ট তাদের কাছ থেকেই বেশি পাওয়া যায়।

কোরিয়া থেকে অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসন করেছেন এডিথ মিন। তিনি বলেন, কোরিয়ায় সাঁতার শেখার প্রশিক্ষণ সহজে পাওয়া যেত না।

তিনি তার সন্তানদেরকে সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি করেছেন। তিনি মনে করেন যে, অস্ট্রেলিয়ায় সাঁতার শেখা বাধ্যতামূলক করা দরকার।
মিস্টার ওয়ার্ড বলেন, অভিবাসী জনগোষ্ঠীগুলোকে সাঁতার শেখার ক্ষেত্রে আগ্রহী করার জন্য বৈচিত্রপূর্ণ বহুসাংস্কৃতিক পটভূমি থেকে প্রশিক্ষক নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। এটা করা হলে তারা সাঁতার শিখতে আগ্রহী হবে।

কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর কারণে সাঁতার প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছে। মিস্টার ওয়ার্ড বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় প্যারেন্টদের প্রায় অর্ধেক সংখ্যকেরই তাদের সন্তানদেরকে সাঁতার প্রশিক্ষণে পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা নেই।

আর, সাঁতার শেখার বিষয়টি নিজের সুরক্ষা নিশ্চিত করার চেয়েও বেশি কিছু।

অস্ট্রেলিয়ার সকলের উদ্দেশে অলিম্পিয়ান এবং সুইমসেফার উইক অ্যামব্যাসাডর মিজ রুনি বলেন, তিনি মনে করেন প্রত্যেক অস্ট্রেলিয়ানের উচিত সাঁতার জানা।

২১ থেকে ২৭ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়া জুড়ে সুইমসেফার উইক পালন করছে পাঁচ শতাধিক স্কুল। শিশুদেরকে সাঁতার শিখতে উৎসাহিত করাই এর উদ্দেশ্য।

প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।

এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: 

আমাদেরকে অনুসরণ করুন 

Share