এক শতাব্দিরও বেশি সময় ধরে হৃদরোগ বা করোনারি হার্ট ডিজিজ মানুষের মৃত্যুর প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া ওয়াইড ফার্স্ট এইড।
অস্ট্রেলিয়ান ব্যুরো অফ স্ট্যাটিসটিক্স এর তথ্য অনুযায়ী ২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়ার প্রায় ১৩ হাজার মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
আমরা জানতে চেয়েছিলাম হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ গ্যারি জেনিংস এর কাছে, ঠিক কী ঘটে যখন কারোর হার্ট অ্যাটাক হয়...
"যে ধমনীর মাধ্যমে হৃদপিণ্ডের মাংসপেশীতে অক্সিজেন আর প্রয়োজনীয় পুষ্টি পৌঁছায়, সেটা বন্ধ হয়ে যায় বা তার পথ সংকুচিত হয়ে যায়, ফলে হৃদপিন্ডের কার্যকারীতা হ্রাস পায় বা বন্ধ হয়ে যায়। হৃদপিন্ডের কার্যকারীতা থেমে যাওয়ার অবস্থাকে আমরা হার্ট অ্যাটাক বলতে পারি” অবশ্য হার্ট এটাকের পূর্বলক্ষণগুলো ব্যক্তিভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে, তবে তার মধ্যে কিছু কিছু লক্ষণ সবার ক্ষেত্রে দেখা যায়—যেমন বুকের ব্যথা। এ বিষয়ে কুইন্সল্যান্ড কার্ডিওভাস্কুলার গ্রুপ এর কার্ডিওলজিস্ট রব পেরেল বলেন,
Heart xray graphic Source: Getty Images/zf L
হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে বুকের বাম দিকের কেন্দ্রের দিকে বিরামহীন যন্ত্রণা অনুভূত হয়। আরেক ধরনের ব্যথা দেখা দেয় যাকে 'এনজাইনাল' বলা হয়। এই ক্ষেত্রে রোগীকে দীর্ঘকাল যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়।
হৃদরোগের আরও বিভিন্ন লক্ষণের মধ্যে রয়েছে শ্বাসকষ্ট বা গলা আটকে যাওয়র অনুভূতি, মাথাঘোরা বা মাথা ঝিমঝিম করা, শীতল ঘাম আর হাতের বাহু ভারী লাগা।
হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে মনে হলে দ্রুত ট্রিপল জিরো অর্থাৎ শূণ্য শূণ্য শূণ্য’তে ডায়াল করার পরামর্শ দিয়েছেন মিস্টার রব পেরেল। তার পাশাপাশি আর যা করতে পারেন তা হচ্ছে একটা এস্পিরিন ট্যাবলেট খেতে পারেন আর দেরি না করে এম্ব্যুলেন্স ডাকতে পারেন।মানুষের সংকটপূর্ণ সময়ে প্রতিটি মুহুর্তই মূল্যবান। গ্যারি জেনিংস এর মতে তাই যদি আপনার বিন্দুমাত্র মনে হয়, আপনার হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে তাহলে কালবিলম্ব না করে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যান।
Ambulances Source: AAP Image/Bianca De Marchi
অস্ট্রেলিয়ার মোট জনসংখ্যার এক দ্বিতীয়াংশ পুরুষ আর এক তৃতীয়াংশ নারী, যাদের বয়স ৪৫ এর উপর, তারা জীবনের কখনো না কখনো হৃদরোগে আক্রান্ত হন। অঙ্ক বা সংখ্যায় এই লোকসংখ্যা খুব বেশি মনে হতে পারে, তবে রব পেরেল মনে করেন স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের মাধ্যমে এই সংখ্যাটা কমানো যায়।
READ MORE
নতুন এসবিএস রেডিও অ্যাপ ডাউনলোড করুন
স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরী। এ বিষয়ে গ্যারি জেনিংস বলেন,
"অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যার অন্তত অর্ধেক মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন। অনেকে এই বিষয়ে অবগত নন, বা জানলেও রক্তচাপ কমিয়ে স্বাস্থ্যকর পর্যায়ে রাখেন না। আমরা সবাই জানি এই একটা কারণে আমাদের কমিউনিটির মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যায় তারতম্য দেখা যায়।"
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা জীবনদায়ী আরেকটি উপদেশ দিয়ে থাকেন; আর তা হচ্ছে…
চেয়ার থেকে থেকে উঠে দাঁড়ান আর নড়াচড়া করুন!
হৃদরোগের ঝুঁকি এড়ানোর আসল উপায় হচ্ছে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করা। তবে তা আবার আপনার জীবনের অনুষঙ্গ এবং জীবনসঙ্গীর উপরেও নির্ভর করে। সবার আগে হৃদরোগের লক্ষণগুলো মনে রাখবেন, সে অনুযায়ী স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করবেন আর বিপদাপন্ন সময়ে দেরি না করে যথাশিঘ্র উদ্যোগ নেবেন।
আরও জানতে হার্ট ফাউন্ডেশনের সাইট ভিজিট করুন- পুরো প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
Source: Getty Images/lzf
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: