ব্যবসার মাধ্যমে স্বাবলম্বী হচ্ছেন অভিবাসী নারীরা

Hawanatu Bangura

Hawanatu Bangura. Source: SBS

গবেষণায় দেখা গেছে যে, অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসী পটভূমির নারীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কর্মহীন থাকে, নির্ধারিত হারের চেয়ে কম অর্থ পায় কিংবা কাজের চেয়ে অতিরিক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন হয়ে থাকে। দু’জন নারী উদ্যোক্তার সঙ্গে কথা বলেছে এসবিএস নিউজ। তারা দু’জন নিজেরাই ব্যবসা চালু করেছেন এবং নিজেদের আর্থিক স্বাধীনতাকে শক্তিশালী করছেন।


সোশ্যাল ওয়ার্কার হিসেবে কাজ করতেন Hawanatu Bangura. গত বছর তার কাজ চলে যায়। বিষয়টিকে তিনি সমস্যার ছদ্মবেশে আশীর্বাদই মনে করেন। তিনি বলেন, নিজের ব্যবসা শুরু করার জন্য এ রকম একটি ধাক্কা খাওয়ারই দরকার ছিল তার।

ফিল্ম-মেকার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছেন Ms Bangura. তার পরিবার যখন সিয়েরা লিওনের যুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসছিল তখন তাদের সঙ্গে টিনেজার হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় আসেন তিনি।

তিনি বলেন, ফিল্ম-মেকিংয়ের মাধ্যমে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় আশ্রয় প্রার্থনার অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে পারবেন।

এ ধরনের গল্প বলাটা তার প্যাশন। এসব গল্পের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি ছোট একটি ব্যবসা খুলেছেন, এর নাম: মাহাওয়া ক্রিয়েটিভ।

এই স্টোরিটেলিং এজেন্সিটিতে স্থানীয়, কর্পোরেট এবং সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে। তারা মানুষকে সাহায্য করছে তাদের নিজেদের গল্পগুলো বলতে।

মিজ বাঙ্গুরা বলেন, অস্ট্রেলিয়ান বিজনেস নাম্বার বা এবিএন নিবন্ধন করা এবং সামাজিক যোগাযোগের নীতিমালা তৈরি করার বিষয়গুলোর সঙ্গে তিনি পরিচিত ছিলেন না।

তার ব্যবসাটি শুরু করাটা বড় ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। অন্যান্য নারীর সহায়তা না পেলে তিনি এটা করতে পারতেন না, বলেন তিনি।

সেটেলমেন্ট সার্ভিসেস ইন্টারন্যাশনালের গবেষণা অনুসারে কর্মক্ষেত্রে নারীদের বৈচিত্রময় উপস্থিতির ঘটনা খুবই বিরল।

অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসী পটভূমির নারীদের কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণের হার শতকরা ৪৭ ভাগ, যা সাধারণ নারীদের হার ৫৯.২ শতাংশর চেয়ে অনেক কম।

ASX ডিরেক্টরদের মাত্র ২ শতাংশ অভিবাসী পটভূমির নারী। ৩০ শতাংশ নারী ডিরেক্টরদের খুব ছোট অংশ এটি।

সাংস্কৃতিক বাধার কারণে কর্মক্ষেত্রে চার জনে এক জনকে জোর-পূর্বক কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

সেটেলমেন্ট সার্ভিসেস ইন্টারন্যাশনালের সিইও ভায়োলেট রোমেলিয়টিস বলেন, এসব নারীদেরকে কর্মক্ষেত্রের জন্য তৈরি করাটা, যেমন, ইংরেজি ক্লাসের মাধ্যমে, শিক্ষাগত যোগ্যতার স্বীকৃতি কিংবা সাধ্যের মধ্যে চাইল্ডকেয়ারের ব্যবস্থা করার বিষয়গুলো অগ্রাধিকার পাচ্ছে না।

আরও একজন নতুন ছোট ব্যবসার মালিক, ইরানি অভিবাসী Zhila Hasanloo বলেন, তিনিও নানা রকম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন।

মিজ Hasanloo চোখে সমস্যা রয়েছে। তিনি বলেন, তিনি যে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সেটা ইরানে কেউ জানতো না, এমনকি তার বাবা মাও জানতেন না।

হাই স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করে তিনি ইউনিভার্সিটি অফ সিডনিতে আসেন পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করার জন্য।

সেখানে এসে তিনি নতুন নুতন চ্যালেঞ্জর মুখোমুখি হন, যেমন, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা।

তিনি বলেন, বহু অভিবাসী নারী এর জন্য সংগ্রাম করতে পারেন।

সেটেলমেন্ট সার্ভিসেস ইন্টারন্যাশনালের ইগনাইট-অ্যাবিলিটি প্রোগ্রামের সহায়তায় মিজ হাসানলো তার নিজের ব্যবসা 'Ability Beyond Borders' শুরু করেন। ইগনাইট-অ্যাবিলিটি প্রোগ্রামটির মাধ্যমে ডিজেবল বা প্রতিবন্ধী অভিবাসীদেরকে স্বনির্ভর হতে সহায়তা করা হয়ে থাকে।

এটি এখনও মডেলিং ধাপে রয়েছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে সেমিনারের আয়োজন করে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করছে তারা। অস্ট্রেলিয়ার ইরানি কমিউনিটির প্রতিই তারা বিশেষভাবে নজর দিচ্ছে।

মিজ হাসানলো বলেন, তিনি আশা করেন এটি অনেক বড় প্রভাব রাখবে।

প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।

Follow SBS Bangla on .

Share