প্রফেসর রেজা মোনেম একজন অভিজ্ঞ শিক্ষক। বাংলাদেশ ছাড়াও সিঙ্গাপুর ও অস্ট্রেলিয়ায় ২৫ বছর ধরে তিনি শিক্ষকতা করছেন। তিনি বলেন,
“আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা-জীবন আমি শুরু করি বাংলাদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, আইবিএ-তে (ইনস্টিটিউট অফ বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন)। এছাড়াও আমি সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সিঙ্গাপুরে দু’বছর শিক্ষকতা করেছি, অস্ট্রেলিয়ায় আসার আগে। আর, অস্ট্রেলিয়াতে আমি ইউনিভার্সিটি অফ কুইন্সল্যান্ড-এ পড়িয়েছি পাঁচ বছর। আর, গত ১৫ বছর যাবৎ আমি গ্রিফিথ ইউনিভার্সিটিতে পড়াচ্ছি। এছাড়াও, পিএইচডি করার সময়ে আমি খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে ইউ-কিউ-তে (ইউনিভার্সিটি অফ কুইন্সল্যান্ড) নিয়োজিত ছিলাম।”
READ MORE
নতুন এসবিএস রেডিও অ্যাপ ডাউনলোড করুন
“সেই হিসেবে ধরতে গেলে, অস্ট্রেলিয়াতে আমার প্রায় ২৫ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা।”
গতানুগতিক ক্যাম্পাস-ভিত্তিক পড়াশোনার সঙ্গে অনলাইনে পড়াশোনার তুলনা করে তিনি বলেন,
“গতানুগতিক ক্যাম্পাস-ভিত্তিক পাঠদানের সাথে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের বেশ কিছু তফাত রয়েছে এবং দুটো দিকেরই বেশ কিছু সুবিধা-অসুবিধা রয়েছে।”
অনলাইনে পড়াশোনার নানা দিক তুলে ধরেন তিনি। তার মতে, অনলাইনে শিক্ষা-কার্যক্রমের দুটি অংশ রয়েছে। তিনি বলেন,
“অনলাইন কার্যক্রমে দুটো অংশ থাকে। একটাকে বলতে পারি সিনক্রোনাস। আরেকটা হচ্ছে, অ্যাসিনক্রোনাস।”
“সিনক্রোনাস হচ্ছে, যেখানে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী একই সময়ে ইন্টারেক্ট করছেন। যেমন, একটি লাইভ ওয়ার্কশপ, টিউটোরিয়াল। এসবে প্রশ্নোত্তরের সুযোগ থাকে।”
“কিন্তু, অ্যাসিনক্রোনাসে শিক্ষক হয়তো এক ঘণ্টার একটা লেকচার রেকর্ড করলেন, তার সুবিধা মতো সময়ে সেটা তিনি, যে অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটাতে তিনি আপলোড করে দিলেন এবং সেই শিক্ষার্থীরা তাদের সময়-সুযোগ অনুযায়ী সেটা দেখলেন, শুনলেন, বারবার শুনলেন, বা সেই লেকচারের বিশেষ একটা অংশ, যেখানে তাদের কোনো একটা কনসেপ্ট হয়তো বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে বা পরিষ্কার না, সেটা হয়তো কয়েকবার তারা প্লে করতে পারবেন।”অনলাইনে পড়ানোর বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে বিস্তারিত বলেন প্রফেসর রেজা মোনেম। গতানুগতিক ক্লাস-রুমের সঙ্গে অনলাইন লেসনের তুলনা করে তিনি বলেন,
ড. রেজা মোনেম বলেন, “গতানুগতিক ক্যাম্পাস-ভিত্তিক পাঠদানের সাথে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের বেশ কিছু তফাত রয়েছে এবং দুটো দিকেরই বেশ কিছু সুবিধা-অসুবিধা রয়েছে।” Source: Professor Reza Monem
“অনলাইনে পাঁচ সেকেন্ড নীরবতা কিন্তু অনেক দীর্ঘ নীরবতা, যেটা আমরা ফিজিকাল ক্লাসে অনুভব করবো না।”
অনলাইন টিচিংয়ের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে টাইম জোন, বলেন তিনি। এছাড়া, শিক্ষার্থীদের এজন্য উপযোগী প্রযুক্তি থাকতে হবে। যেমন, ইন্টারনেট স্পিড, কম্পিউটার।
শিক্ষার্থীরা অনলাইন টিচিং কীভাবে গ্রহণ করছে, এ বিষয়ে ড. রেজা মোনেম বলেন,
“অনলাইনে শিক্ষাদানের আরেকটা বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, শিক্ষার্থীরা যেহেতু কেউ কাউকে দেখছেন না, তারা শুধু যখন শিক্ষা-কার্যক্রম হচ্ছে, তাদের উপস্থিতি দেখতে পাচ্ছেন, স্ক্রিনে তাদের নাম দেখতে পাচ্ছেন, বা ছবি দেখতে পাচ্ছেন; কিন্তু, সরাসরি কোনো ইন্টারেকশন হচ্ছে না। সেই হিসেবে, একটা সোশাল ডিসট্যান্স, একটা আইসোলেশন তৈরি হচ্ছে। একটা সামাজিক দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। শিক্ষার্থী মনে করতে পারেন, এই কোর্সে আমি একাই।”
অনলাইনে শিক্ষার্থীদেরকে মূল্যায়নের বিভিন্ন দিক নিয়েও বলেন তিনি।
পরিশেষে তিনি বলেন,
“অনলাইন প্লাটফর্ম আপনার ফিজিকাল ক্লাসরুমের যে পরিবেশ, সেটাকে ঠিক রেপ্লিকেট করতে পারছে না।”
প্রফেসর রেজা মোনেমের সাক্ষাৎকারটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।