কোভিড- ১৯ লকডাউনে যারা অর্থকষ্টে ছিলেন তাদের জন্য সরকারি ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তবে আশ্রয়প্রার্থী বা এসাইলাম সিকার এবং অস্থায়ী ভিসাধারীরা এই ভাতা পেতেন না। তাদের জন্য সম্প্রতি জরুরী আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অস্থায়ী ভিসাধারীরা ২০২০ সালে সরকার ঘোষিত জব কিপার প্রোগ্রামের আওতার বাইরে ছিল। এ বছর কিছু অস্থায়ী ভিসাকে কোভিড ডিজেস্টার পেমেন্ট বা দুর্যোগকালীন অর্থসাহায্যের আওতায় আনা হয়েছে। স্বাস্থ্য নির্দেশনার কারণে যারা অর্থোপার্জন করতে পারছেন না, এমন টেম্পোরারি ভিসাধারীরা এই ভাতা পাবেন।কিন্তু সরকারের এই আর্থিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা থেকে অনেকে বঞ্চিত হতে পারেন। রেড ক্রস অস্ট্রেলিয়ার মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম এর প্রধান কর্মকর্তা ভিকি মাউ বলেন,
Store owner putting up a closed sign in the window Source: stock photo Getty Images /Courtneyk
“আমরা এমন এক সংকট পরিস্থিতিতে আছি, যখন মানুষ গৃহহীণ হয়ে গাড়িতে বাস করছে বা বন্ধুবান্ধবীর বাসায় রাত কাটাচ্ছে। অনেকের মেডিকেয়ার নেই বা প্রাইভেট মেডিকেলের খরচ যোগার করতে পারছেন না।”
অনেক মানুষ চলতি সংকটে মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে হিমসিম খাচ্ছেন।
এই পরিস্থিতিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে রেড ক্রস অস্ট্রেলিয়া। মিস মাউ জানান,
“যেসব অস্থায়ী ভিসাধারী সেন্টারলিংক বা সরকারী অর্থ সহায়তা পান না তারা রেড ক্রসের কাছে জরুরী সহায়তা পাবেন।
এছাড়াও যাদের ভিসার মেয়াদ পেরিয়ে গেছে বা ভিসার স্ট্যাটাস নিয়ে অনিশ্চিত তারাও রেড ক্রসের এমারজেন্সি রিলিফের আবেদন করতে পারবেন”
খাদ্য আর ওষুধের মত ব্যক্তিগত এবং পরিবারিক জরুরী প্রয়োজনে ২০০ ডলার থেকে ৪০০ ডলার পর্যন্ত এককালীন অর্থ সাহায্যের ব্যবস্থা করা হয়েছে।রেডক্রসের জরুরী অর্থ সহায়তার জন্য ভিজিট করুন রেডক্রস ডট ও আর জি ডট এ ইউ, ফরোয়ার্ড স্ল্যাশ এমারজেন্সি রিলিফ [[redcross.org.au/emergencyrelief]] এই সাইটে গেলে আপনারা এমারজেন্সি রিলিফ আবেদনের লিঙ্ক পাবেন। আবেদনের জন্য আপনাদের ভিসার বিবরণ এবং আপনার আর্থিক বিবরণ বা ব্যাংক স্টেটমেন্ট দরকার হবে। ভিসা না থাকলে রেডক্রস আপনার সাথে যোগাযোগ করবে।
Charities Work To Provide Food For People In Need During Melbourne Lockdown Source: Getty Images/Asanka Ratnayake
কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর শুরু থেকে ফেডারেল সরকার চরম অভাবগ্রস্তদের সহায়তায় ১৬০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছে।
এই আর্থিক বরাদ্দ প্রায় ২০০টি দাতব্য সংস্থা ও কমিউনিটি প্রতিষ্ঠানে বিলিবন্টন করা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতার বর্ণনা করেছেন গ্যারি পেইজ। তিনি সেটলমেন্ট সার্ভিসের ইন্টারন্যাশনালের জরুরী ত্রাণ সমন্বয়কারী। ত্রাণ সাহায্যের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় তারা বর্তমানে খুব চাপের মধ্যে আছেন। অনেকে কাজ হারিয়েছেন কিন্তু হয়তো সুন্দর দালানে আছেন; তাদের ক্ষেত্রে বর্তমান পরিস্থিতি সামলে উঠা আরও কষ্টকর হয়ে পড়েছে কেননা বাড়ি ভাড়া মর্টগেজের খরচ বাকি পড়ে যাচ্ছে।
সেটলমেন্ট সার্ভিসের ইন্টারন্যাশনাল বা এস এস আই আশ্রয়প্রার্থী ও টেম্পোরারি ভিসাহোল্ডারদের সহায়তা দিয়ে থাকে।
এ কাজের জন্য তারা সরকার এবং ব্যক্তিগত তহবিল বরাদ্দ নিয়ে থাকে।
প্রতিষ্ঠানটির এসাইলাম সিকারস সার্ভিসের ম্যানেজার মার্গারেট ব্রিকউড বলেন গত বছরের লক ডাউনের থেকে
এ বছরে তাদের সেবার চাহিদা ৫০ থেকে একশো শতাংশে বেড়েছে।
লক ডাউন নিষেধাজ্ঞার কারণে কিছু জায়গায় মানুষের মৌলিক প্রয়োজন মেটাতেও কষ্ট হচ্ছে।
পাঁচ কিলোমিটার পরিধি বিধিনিষেধের কারণে অভাবী মানুষেরা খাদ্যের জন্য লোকাল জোনের বাইরে যেতে পারছেন না।
সংস্থাটির স্বেচ্ছাসেবীরা মঙ্গলবার আর বৃহস্পতিবার খাদ্য ও অন্যান্য সহায়তা সিডনী এলাকার মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে।
মিস ব্রিকউড আরও জানান, কোভিড-19 লক ডাউন শুরুর পর থেকে তাদের ত্রাণ বিতরণে পরিবর্তন এসেছে। মহামারী উপদ্রুত মানুষের দরজায় তারা ত্রাণের প্যাকেট পৌঁছে দিয়ে থাকেন যাকে কেয়ার প্যাকেজ বলা হয়। সেখানে থাকে জরুরী খাদ্য যেমন রুটি, দুধ আর প্রক্রিয়াজাত বা রান্না করা খাবার।রেড ক্রস অস্ট্রেলিয়া এ পর্যন্ত ১ লক্ষ ষাট হাজার মানুষের কাছে জরুরী ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে। সংস্থাটির কর্মকর্তা ভিকি মাউ তাদের এ সকল সহায়তা কার্যক্রম ব্যাখ্যা করে আরও বলেন, এই ইমার্জেন্সি রিলিফ ছাড়াও রেড ক্রস অস্ট্রেলিয়া পারিবারিক সহিংসতা ও অন্যান্য বিভিন্ন সাহায্য প্রদান করে থাকে।
Food Rescue Charity OzHarvest Continues To Serve Community During Coronavirus Outbreak Source: Getty Images/ Lisa Maree Williams
ভিসা জটিলতা থাকা অবস্থায় যারা পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন তাদের জন্য রয়েছে বিশেষ সহায়তা কার্যক্রম।
১৯৭ টি সেবাদানকারী সংস্থা ১ হাজার তিনশ’ টি শাখার মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া জুড়ে উল্লেখিত ইমার্জেন্সি রিলিফ পাওয়া যাবে। আপনার এলাকায় এই সেবা খুঁজতে বা সম্পুর্ন তালিকাটি পেতে হলে ডিপার্টমেন্ট অফ সোশ্যাল সার্ভিসের গ্রান্ট সার্ভিস ডিরেক্টরি দেখুন।
আপনি বা আপনার পরিচিত কেউ যদি পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়ে থাকেন তাহলে কল করুন লেখার সময় ১৮০০ রেসপেক্ট
যদি কোন ক্ষতিকর বিপদে পড়ে থাকেন তাহলে ট্রিপল জিরো কল করুন ।
প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
আরও দেখুন: