অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিকে অনেক বেশি স্থিতিস্থাপক বলে মনে করেন ড. শরীফ রাসেল।
“অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি অনেক বেশি রিজিলিয়েন্ট। অতীতে আমরা দেখেছি অনেক বড় শকও অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি খুব সহজেই আত্মীভূত করতে পেরেছে। যেমন, করোনা-পরবর্তীতে ২০২১ সালে আমরা দেখেছি অস্ট্রেলিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪.২ শতাংশ।”
অস্ট্রেলিয়া ও রাশিয়ার অর্থনৈতিক আকার প্রায় একই রকম, বলেন তিনি।
READ MORE
নতুন এসবিএস রেডিও অ্যাপ ডাউনলোড করুন
“বিশ্ব-বাজারেও এই দুই দেশ প্রায় একই রকম পণ্য রপ্তানি করে থাকে। অস্ট্রেলিয়ার মতো রাশিয়াও খনিজ এবং খাদ্য-শস্য রপ্তানি করে থাকে।”
অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব সম্পর্কে তিনি বলেন,
“সাম্প্রতিক ইউক্রেন সঙ্কট কোভিড-পরবর্তী অস্ট্রেলিয়ার অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে একটি বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিবে।”
“এই একই রকম রপ্তানির কারনে রাশিয়া বা ইউক্রেনের সাথে অস্ট্রেলিয়ার খুব জোরালো বাণিজ্যিক সম্পর্ক কিন্তু গড়ে উঠে নি। ফলে এই দুই দেশের উপর অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি খুব নির্ভরশীল নয়। এই কারণে আমি মনে করি, ইউক্রেন সঙ্কটের সরাসরি কোনো প্রভাব অস্ট্রেলিয়ার উপর পড়বে না। তবে, অস্ট্রেলিয়া যেহেতু বিশ্ব-অর্থনীতির উপর অনেকটা নির্ভর করে থাকে, সেহেতু এই সঙ্কটের পরোক্ষ একটি প্রভাব কিন্তু থাকবে এবং আমি মনে করি, এই পরোক্ষ প্রভাবটি অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ হবে।”
ইউক্রেন ও রাশিয়া অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ না হলেও বিশ্বের অর্থনীতিতে এ দেশ দু’টির গুরুত্ব রয়েছে, বলেন ড. রাসেল।
“ইউক্রেন ও রাশিয়া অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ না হলেও বিশ্ব-অর্থনীতিতে এই দু’দেশের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইউক্রেনের মাটি অনেক উর্বর হওয়ায় বিশ্ব-বাজারে গমের একটি বড় সরবরাহ কিন্তু ইউক্রেন হতে আসে। এই সঙ্কটে এই সরবরাহ অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।”
“রাশিয়াও একটি প্রধান গম রপ্তানিকারক দেশ। তাই বিশ্ব-বাজারে গমের মূল্য বৃদ্ধির একটি আশঙ্কা রয়েছে। এতে অস্ট্রেলিয়ার গম রপ্তানিকারকদের রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পেতে পারে।”
এ রকম পরিস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়ার কয়লার চাহিদা বৃদ্ধি পাবে বলে মন্তব্য করেন ড. রাসেল।
“অস্ট্রেলিয়ার মতো রাশিয়াও কয়লা ও অ্যালুমিনিয়াম রপ্তানি করে থাকে। এই সঙ্কটে এগুলোর মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন।”
“এই সঙ্কটে অস্ট্রেলিয়ার কয়লার চাহিদা বৃদ্ধির কারণে রপ্তানিকারকদের বাজার সম্প্রসারিত যেমন হবে, তেমনি রপ্তানির তুলনায় রপ্তানি আয়ও বাড়বে। এতে অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিও অনেক লাভবান হবে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন।”
জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি সম্পর্কে ড. রাসেল বলেন,
“অস্ট্রেলিয়া যেহেতু জ্বালানি তেলের আমদানিকারক দেশ, সেহেতু এই তেলের দাম এখানে স্বাভাবিকভাবেই বৃদ্ধি পাবে।”
“তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে শুধু আমদানি-পণ্যের দামই বাড়বে না, বরং পণ্য সরবরাহ খরচ বাড়বে, অন্যান্য দ্রব্যের মূল্য কিন্তু বাড়বে। এক কথায় বলতে গেলে, এই সঙ্কটের কারণে অস্ট্রেলিয়ায় রপ্তানিকারকেরা বিশ্ব-বাজারে একটি সুবিধাজনক অবস্থায় থাকবেন। কিন্তু, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় মূল্যস্ফীতি অনেক বাড়বে এবং এতে সাধারণ লোকদের ক্রয়-ক্ষমতা হ্রাস পাবে।”
“তবে, সঙ্কট দীর্ঘায়িত হলে রপ্তানিকারকদের যে অ্যাডভান্টেজ থাকবে, সেটাও সাময়িক হবে। কারণ, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা হলে রপ্তানি-চাহিদা হ্রাস পাবে বলে অনেকেই মনে করছেন। তাই, ইউক্রেন সঙ্কটের পরোক্ষ প্রভাবের যে নেতিবাচক দিকটা, তা আমি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছি।”ড. শরীফ রাসেলের সম্পূর্ণ সাক্ষাৎকারটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
ড. শরীফ রাসেল বলেন, অস্ট্রেলিয়া যেহেতু জ্বালানি তেলের আমদানিকারক দেশ, সেহেতু এই তেলের দাম এখানে স্বাভাবিকভাবেই বৃদ্ধি পাবে। Source: Dr Sharif Rasel
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: