ফেডারাল বাজেট নিয়ে ড. শরীফ রাসেল বলেন, “যারা নিম্নবিত্ত তারা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন”

Budget

Indigenous analysts say the Coalition's Federal Budget 2019 does not adequately address Indigenous disadvantage. Source: AAP

অস্ট্রেলিয়ার কোয়ালিশন সরকারের প্রস্তাবিত ফেডারাল বাজেট নিয়ে সমাজের বিভিন্ন স্তরে নানা রকম আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। মেলবোর্নের মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অফ ম্যানেজমেন্টের লেকচারার ড. শরীফ রাসেল কথা বলেছেন এসবিএস বাংলার সঙ্গে।


কোয়ালিশন সরকারের প্রস্তাবিত বাজেটকে অনেকেই নির্বাচনী বাজেট বলে অভিহিত করছেন। এই বাজেটে কারা উপকৃত হবেন জিজ্ঞাসা করা হলে মেলবোর্নের মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অফ ম্যানেজমেন্টের লেকচারার ড. শরীফ রাসেল বলেন,

“যেহেতু সরকার ট্যাক্স-রেট কমিয়ে আনছে, আয়করদাতাদেরকে একটা ক্যাশ ইনসেন্টিভ দিতে যাচ্ছে, এর ফরে যারা একমাত্র উপার্জনকারী তাদেরকে ১০৮০ ডলার এবং একটা পরিবারে যারা দু’জন চাকুরি করেন তাদের ক্ষেত্রে ২১৬০ ডলার পর্যন্ত একটা ক্যাশ ইনসেন্টিভ আসবে, ক্যাশ রিলিফ আসবে।”

এই বাজেটের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে তিনি বলেন, এই বাজেটে যে ৭.১ বিলিয়ন ডলার উদ্বৃত্ত থাকার কথা বলা হচ্ছে, তা কিছু অনুমানের উপর নির্ভর করছে। একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ মজুরি প্রবৃদ্ধি হতে হবে, অর্থনৈতিক উন্নয়ন হতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
Regardless of who wins the election, low to middle income workers are set to get a personal income tax cut
Regardless of who wins the election, low to middle income workers are set to get a personal income tax cut. Source: AAP
এই ৭.১ বিলিয়ন ডলার উদ্বৃত্ত থাকার বিষয়টি এসেছে ন্যাশনাল ডিজেবিলিটি স্কিম-এর অব্যবহৃত অর্থ থেকে, যার পরিমাণ ৩.৪ বিলিয়ন ডলার।

আন্তর্জাতিক বাজারে অস্ট্রেলিয়ান পণ্যের যে চাহিদা রয়েছে সেখানে কী ধরনের অর্থনৈতিক বিকাশ হবে, যুক্তরাজ্য ও চীনের অর্থনীতিতে কী রকম প্রবৃদ্ধি হবে, এই বিষয়গুলোও এক্ষেত্রে নিয়ামক ভূমিকা রাখবে, বলেন তিনি।

ড. রাসেল বলেন, “এ সবকিছু মিলিয়েই এই পূর্বানুমান করা হয়েছে। এর ফলে একটা বড় ঝুঁকি রয়ে গেছে যে, সরকার এই ৭.১ বিলিয়ন ডলার যে উদ্বৃত্ত আশা করছে, সেটা আসলে তারা অর্জন করতে পারবেন কিনা।”

জিএসটি আয়ের ঘাটতির বিষয়টি রাজ্য-সরকারগুলোর উপর কী রকম প্রভাব ফেলবে, এ সম্পর্কে ড. রাসেল বলেন, ৭.৩ বিলিয়ন ডলার ঘাটতি হবে জিএসটি আয়ের ক্ষেত্রে।

তার মতে, “অস্ট্রেলিয়ায় মজুরি প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ায় লোকজনের হাতে কম অর্থ থাকার কারণে, ব্যয়যোগ্য উপার্জন কমে যাওয়ার কারণে, লোকজনের ক্রয়-ক্ষমতা হ্রাস পাবে।”

ট্যাক্স-রেট ফ্লাট হওয়ার সমস্যা সম্পর্কে তিনি বলেন, সরকার একটা ট্যাক্স-রিলিফই শুধু দিচ্ছে না, তার পাশাপাশি সরকার পরিকল্পনা করেছে যে, অস্ট্রেলিয়ায় ট্যাক্স-রেট বাড়ানোর যে ‘প্রোগ্রেসিভ কর-কাঠামো’ রয়েছে, সেটাকে মোটামুটিভাবে ফ্লাট করে ফেলার।
Australian dollars
Australian tax payers among the winners in Budget 2019 Source: SBS
ড. রাসেল বলেন,

“যাদের বার্ষিক উপার্জন ৫০ হাজার ডলার এবং যার উপার্জন দুই লাখ (২০০ হাজার) ডলার, তারা উভয়ে একই হারে ট্যাক্স দেবেন। ৫০ হাজার ডলার যিনি বছরে উপার্জন করেন তার ট্যাক্স-রিলিফ হবে ১২০৫ ডলার। আর, যিনি বছরে দুই লাখ ডলার আয় করে থাকেন, তার যে ট্যাক্স-রিলিফ হবে তার পরিমাণ ১১,৬৪০ ডলার।”

“এর ফলে, যাদের উপার্জন বেশি তারা একটা বড় সুবিধা পাবেন। তাদের ক্রয়-ক্ষমতা বেশি থাকবে। অন্যদিকে, তার তুলনায় যাদের উপার্জন কম, তাদের ক্রয়-ক্ষমতা কম থাকবে।”

তার মতে, মজুরি-প্রবৃদ্ধিতে ধীরগতি থাকার কারণে সমাজে যারা নিম্নবিত্ত, তাদের উপার্জনের উপর একটা বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
Budget 2018
Dr Sharif Rasel, Lecturer, Department of Management at Monash University, Australia. Source: Courtesy of him
তিনি বলেন,

“এই ট্যাক্স-রিলিফ এবং মজুরি-প্রবৃদ্ধিকে একসঙ্গে করলে এর ফলে মধ্যবিত্ত এবং উচ্চ-মধ্যবিত্ত [শ্রেণী] অনেক বেশি উপকৃত হবে। যারা নিম্নবিত্ত, তারা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”

“আপনি যদি রিজিওনালি দেখেন, যে-সব সাবার্ব ধনী সাবার্ব, তারা এই ট্যাক্স-রেটের নতুন সিস্টেমের কারণে বেশি উপকৃত হবেন।”

“অন্যদিকে, গরীব সাবার্বগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সিটির সাথে রিজিওনাল অস্ট্রেলিয়ার ব্যবধানটা আরও বাড়বে।”

ড. শরীফ রাসেলের সাক্ষাৎকারটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।

Follow SBS Bangla on .

Share