গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো
- ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা-যুদ্ধে চতুর্থ সর্বোচ্চ উপাধি ‘বীর প্রতীক’ লাভ করেছেন ৪২৬ জন।
- একমাত্র বিদেশী হিসেবে বীর প্রতীক খেতাব পান ডাচ-অস্ট্রেলিয়ান উইলিয়াম এ এস ওডারল্যান্ড।
- ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার পার্থে ২০০১ সালের ১৮ মে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ওডারল্যান্ডের জন্ম ৬ ডিসেম্বর ১৯১৭ সালে, নেদারল্যান্ডস-এর রাজধানী আমস্টার্ডামে। ঢাকায় বাট স্যু কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নেদারল্যান্ডস থেকে ১৯৭০ সালের শেষের দিকে তিনি ঢাকায় আসেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ঢাকায় যে ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ পরিচালনা করে এবং ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়, সেটা দেখে তিনি মর্মাহত হন।
ওডারল্যান্ড তার পেশাগত সুবিধা কাজে লাগিয়ে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর শীর্ষ মহলের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করেন এবং বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে মুক্তিবাহিনীকে যোগাতে থাকেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তিনি গেরিলা কমান্ডো হিসেবে লড়াই করেছিলেন। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তিনি গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ, আর্থিক সহায়তা প্রদান ছাড়াও নানাভাবে সাহায্য করতেন। এক পর্যায়ে তিনি গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে গেরিলা রণকৌশলের প্রশিক্ষণও প্রদান করতে থাকেন। অবশেষে তিনি নিজেই স্বয়ং সরাসরি যুদ্ধে নেমে পড়েন। তার পরিকল্পনা ও পরিচালনায় ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে বেশ কিছু অপারেশন সংঘটিত হয়।
ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার পার্থে ২০০১ সালের ১৮ মে ওডারল্যান্ড মৃত্যুবরণ করেন।
ওডারল্যান্ড সম্পর্কে ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েস্টার্ন সিডনির সিনিয়র লেকচারার ড. কাইউম পারভেজ বলেন,
“ওডারল্যান্ডের সাথে আমার যোগাযোগ কাকতালীয়ভাবে।” ড. পারভেজকে ওডারল্যান্ডের স্ত্রী মারিয়ার ফোন নম্বর দেন কামরুল আহসান খান। এরপর তিনি মারিয়াকে ফোন করেন।
“আমি মারিয়াকে ফোন করলাম। তিনি বললেন, ওডারল্যান্ডের বাইপাস সার্জারি হয়েছে। তিনি কথা বলতে পারেন না। তুমি আমাকে বল।”
ওডারল্যান্ডকে নিয়ে একটি কবিতা লিখেছিলেন ড. কাইউম পারভেজ। সেই কবিতাটির ইংরেজি অনুবাদ ওডারল্যান্ডকে পাঠান তিনি।
“এরপর মারিয়ার সাথে আমি যখন আবার যোগাযোগ করলাম, মারিয়া বললো, তোমার কবিতাটি আমি তাকে পড়ে শুনিয়েছি। ও তে কিছু বলতে পারে নি। ওর চোখ দিয়ে শুধু পানি বেরুচ্ছিল।”
এই ঘটনার কিছুদিন পর ওডারল্যান্ড মারা যান।ড. কাইউম পারভেজের সাক্ষাৎকারটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
ওডারল্যান্ডকে নিয়ে একটি কবিতা লিখেছিলেন ড. কাইউম পারভেজ। সেই কবিতাটির ইংরেজি অনুবাদ ওডারল্যান্ডকে পাঠান তিনি। Source: Facebook/Qaiyum Pervez