বাংলাদেশের সিলেট উইমেন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ-এর প্রেসিডেন্ট স্বর্ণলতা রায় সম্প্রতি সিডনি এসেছেন অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ ট্রেড কনফারেন্সে যোগ দিতে। গত ১৩ থেকে ১৫ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়াতে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয় অস্ট্রেলিয়া - বাংলাদেশ ট্রেড কনফারেন্স।
একজন নারী উদ্যোক্তা হিসেবে বাংলাদেশে কাজ করার নানা প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরেন তিনি। এসবিএস বাংলাকে তিনি বলেন,
“গতানুগতিকভাবে আমাদের যে নারী উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছেন, প্রথম দিকের সারিতে আমি আছি। যেহেতু, আমি যখন ব্যবসা শুরু করতে গিয়েছি, যখন চিন্তা করছিলাম, তখন ছিল পারিবারিক একটা বাধা, যে বাইরে গিয়ে কিছু করা যাবে না।”
“আমি যখন জায়গা খুঁজতে গেলাম, দেখা গেল যে, মেয়ে হিসেবে কেউ আমাকে আউটলেট দিচ্ছেন না। অনেক খোঁজার পরে একটা (জায়গা) খুঁজে পেলাম। তখন আমার ল্যান্ড-লর্ড আমাকে বলেছিলেন যে, আপনার ফ্যামিলিকে আমি জানি। সো, এটা তো সম্ভব না।”
শুধু নিজের ক্ষেত্রে নয়, তিনি বাধা পেয়েছেন তার কর্মীদের ক্ষেত্রেও।
“বুটিকস এবং বিউটিফিকেশন, দুটোই আমার ছিল। আমার কর্মীদের জন্য যে আমার হাউজ রেন্ট নেওয়া, সেটা ছিল আমার জন্য চরম কষ্টদায়ক একটা বিষয়। কারণ, ওরা সকলেই ট্রাইবাল গ্রুপের ছিল। এদেরকে কেউ বাসা ভাড়া দিচ্ছিল না।”
প্রায় ১৪ বছর আগে তিনি ব্যবসা শুরু করেন। তখন ব্যাংক-লোন পাওয়াও কঠিন ছিল। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,
“অর্থনৈতিকভাবে ব্যাংক আমাকে কখনও লোন দেয় নি। আমার হাজব্যান্ডের নামে লোন নিয়ে তারপরে কিন্তু আমি শুরু করেছি।”
তবে, এখন অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। তার ভাষায়,
“নারী উদ্যোক্তাদের যে প্রতিবন্ধকতা থাকে, সেটা কিন্তু এখন আর তেমনভাবে নেই।”
এখন “নারী উদ্যোক্তা এবং ব্যাংকের মধ্যে একটা সুসম্পর্ক স্থাপন হয়েছে।”
“আমি যখন শুরু করেছিলাম, তখন কিন্তু আজকের অবস্থাটা ছিল না। আজকে নারী উদ্যোক্তাদের এগিয়ে দেওয়ার জন্য আমাদের যেমন সরকারী প্রয়াস রয়েছে, বেসরকারীভাবেও আমরা এগিয়ে যেতে পারছি।”
অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ বাণিজ্যিক সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন,
“অস্ট্রেলিয়ার সাথে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কটা আরও জোরদার হবে, সেই আশাটাই আমাদের এখন পর্যন্ত আছে।”
নিজের কাজ সম্পর্কে তিনি বলেন,
“আমার মূল উদ্দেশ্য হলো উদ্যোক্তা তৈরি করা এবং আধুনিক, উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে যাতে আমাদের এই শিক্ষাটা সমানভাবে থাকে, সেই কারণে কাজ করার জন্য আমি এটা করছি।”
সবকিছু মিলিয়ে তিনি বলেন,
“পুরুষ-শাসিত সমাজে নারীদের এগিয়ে যেতে একটু কষ্ট হচ্ছে।”
স্বর্ণলতা রায়ের সাক্ষাৎকারটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।