সিডনিতে স্থায়ীভাবে বাংলাদেশী কনসুলেট হচ্ছে

HE Mohammad Sufiur Rahman

Source: SBS Bangla

অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার মান্যবর মোহাম্মদ সুফিউর রহমান সম্প্রতি সিডনিতে এসবিএস-এর সদর দপ্তর পরিদর্শন করেন। সে-সময় এসবিএস বাংলার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গায় তিনি শুনেছেন, বাংলাদেশ কমিউনিটি অস্ট্রেলিয়াতে খুবই উঁচু মানের। তাদের প্রফেশনাল দক্ষতার বিষয়টির প্রশংসা সবাই করেন।


সম্প্রতি নিউ সাউথ ওয়েলস সরকারের আমন্ত্রণে সিডনিতে এসেছিলেন অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার মান্যবর মোহাম্মদ সুফিউর রহমান ও তার দল। সফরের অংশ হিসেবে তিনি এসবিএস-এর হেডকোয়ার্টার্স পরিদর্শন করেন। তখন এসবিএস বাংলার সঙ্গে আলাপকালে এ সফরের উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন,

“নিউ সাউথ ওয়েলসের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কটা কীভাবে ভাল করা যায় সে বিষয়টি নিয়ে অনেক ধরনের আলাপ-আলোচনা করছি।”

বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া পারস্পরিক সম্পর্কের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বর্ণনার পর তিনি বলেন,

“এইডের বাইরে এসে বাণিজ্যের মধ্য দিয়ে এবং বাণিজ্যকে ব্যবহার করে এর বাইরে অংশীদারিত্বের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছি। এই বিষয়গুলো অস্ট্রেলিয়ার সাথে আমরা এখন বোঝাপড়ার পর্যায়ে আছি।”

অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্পর্কে তিনি বলেন,

“অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের গত ১০ বছরে যে-বাণিজ্যিক সম্পর্ক, সেটা বেশ প্রসারতা পেয়েছে।”

দুই দেশের বাণিজ্যিক ঘাটতি সম্পর্কে তিনি বলেন,

“আসলে অতীতে যে ঘাটতি ছিল, গত দুই-তিন বছরে এটা কিন্তু কেটে গেছে।”

“দুই পক্ষেরই প্রায় সমান আমদানি-রপ্তানি আছে।”

বাংলাদেশে কয়লা-ব্যবহার কতোটা প্রকৃতি-বান্ধব হবে- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,

“বাংলাদেশ পৃথিবীর এমন সব দেশগুলোর মধ্যে পড়ে যাদের কয়লার ব্যবহার সব থেকে কম, কার্বন ফুটপ্রিন্ট কম।”

“বাংলাদেশ হবে পৃথিবীর প্রথম ১০টি কান্ট্রি(র অন্তর্ভুক্ত) যার সব থেকে কম কয়লার ব্যবহার করে।”

“প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালে জাতিসংঘে একটা কমিটমেন্ট দিয়ে এসেছেন: বাংলাদেশ কয়লা ব্যবহার করলেও কখনই বাংলাদেশের পার ক্যাপিটা কয়লা কনজাম্পশন ডেভেলপিং কান্ট্রির অ্যাভারেজের ঊর্ধ্বে যাবে না। তার মানে, আমরা সব সময়েই দৃষ্টি রাখবো, এটা কোনোভাবেই যেন পরিবেশকে একটা সার্টেইন ডিগ্রির বাইরে ক্ষতিগ্রস্ত না করে।”

বাংলাদেশী হাই কমিশন কী রকম সেবা দিচ্ছে সে সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিডনিতে স্থায়ীভাবে বাংলাদেশী কনসুলেট হচ্ছে। ১-২ মাসের মধ্যে সিডনিতে বাংলাদেশের কনসুলেট আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হবে।

তিনি বলেন,

“আমরা একটা কনসুলেট পাচ্ছি, পারমানেন্টলি, সিডনিতে।”

অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত হওয়ার আগে সুফিউর রহমান মিয়ানমারে রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছেন। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে তিনি বলেন,

“এবারের যে সমস্যাটা, এটার গভীরতা এবং ব্যাপকতা অনেক বেশি এবং এই গভীরতা এবং ব্যাপকতা এবং জটিলতার দৃষ্টিতে আমরা যেভাবে জিনিসটা চিন্তা করেছিলাম যে, অতীতে ’৭৮,’৭৯ বা ’৯২,’৯৩ সালে যেভাবে হয়েছিল, সেভাবে এই রিপ্যাট্রিয়েশনটা সম্ভব হবে না।”

“এবার সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি এবং যারা, যাদেরকে আমরা প্রত্যাবাসন করার চেষ্টা করছি, তাদের সেফটি এবং সিকিউরিটি যদি এনশিওর না করা যায়, তাহলে এই প্রসেসটা শুধুমাত্র জাস্ট যাওয়ার জন্য এবং কিছুদিন পরে আবার ফেরত আসবে। আবার পুশব্যাক হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আমরা এটা বার বার করতে চাই না।”

রোহিঙ্গাদের উপর পরিচালিত নির্যাতন-নিপীড়নের বিচার হওয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন,

“আমরা মনে করি, অ্যাট্রোসিটি যেটা ঘটে গেছে, সেটার যদি একটা বিচার না হয়, তাহলে আস্থার জায়গাটা তৈরি হবে না।”

বাংলাদেশী কমিউনিটি অস্ট্রেলিয়ায় অনেক প্রশংসিত বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, তিনি বিভিন্ন স্থানে এই কমিউনিটির প্রশংসা শুনতে পান যে,

“বাংলাদেশ কমিউনিটি অস্ট্রেলিয়াতে খুবই উঁচু মানের। তাদের প্রফেশনাল দক্ষতার বিষয়টার সবাই প্রশংসা করে।”

Follow SBS Bangla on .

Share