গুরুত্বপূর্ণ দিক
- গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেবে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত, বোমা হামলায় ৪৬৫১ জন নিহত হয়েছে।
- চিকিত্সকরা গাজায় সম্ভাব্য ইসরায়েলি স্থল আক্রমণ নিয়ে উদ্বিগ্ন যা আগামী দিনগুলোতে শুরু হতে পারে।
- শান্তির আহ্বান জানিয়ে পোপ ফ্রান্সিস বলেছেন যে তিনি গাজায় গীর্জা ধ্বংসের খবরে দুঃখিত।
বেসামরিক লোকজন পালিয়ে বেড়াচ্ছে, গাজা উপত্যকায় চলমান বিমান বোমা হামলার কারণে অনেকে তাদের প্রিয়জনদের মৃতদেহ ধরে রেখেছে।
আবাসিক ভবন, হাসপাতাল এবং উপাসনালয়গুলিতে আঘাত হেনেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তাদের দাবি, তারা সশস্ত্র বাহিনী হামাসের অবকাঠামো ধ্বংস করার চেষ্টা করছে যারা ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে মারাত্মক আক্রমণ শুরু করেছিল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেবে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত, বোমা হামলায় ৪৬৫১ জন নিহত হয়েছে এবং ১৪০০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ফিলিস্তিনিদের ক্রমবর্ধমান হামলার মধ্যে উত্তরে গাজা শহর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার জন্য সতর্ক করেছে এবং এই অঞ্চলের দক্ষিণ দিকে চলে যেতে বলছে যেখানে তারা বেসামরিক লোকদের আশ্বাস দিচ্ছে যে তারা নিরাপত্তা এবং মানবিক সহায়তা পেতে পারে।
তবে, এভাকুয়েশন জোনের দক্ষিণ এলাকাগুলোতে তারা অবিরত আঘাত হানছে।সেখানে দেইর আল বালাহ শহরের একজন স্থানীয় মহিলা আমাল আল-কর্ড বলেন যে তিনি গত ২৩শে অক্টোবর ইসরায়েলি বোমা হামলায় পরিবারের ১২ সদস্যকে হারিয়েছেন।
জাতিসংঘ বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে হামাস-ইসরায়েল সংঘর্ষ বৃদ্ধির পর থেকে প্রায় ১.৬ মিলিয়ন বা গাজার জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলে, হামাস বাহিনীর আক্রমণ চলাকালীন গাজায় নিয়ে যাওয়া ২১২ জন জিম্মির পরিবার গত শনিবার থেকে দুই মার্কিন নাগরিকের মুক্তির পর তাদের প্রিয়জনের খবরের জন্য উদ্বিগ্নভাবে অপেক্ষা করছে।
হামাস যোদ্ধাদের ওই ভয়াবহ হামলায় কমপক্ষে ১৪০০ জন নিহত হয়েছিল।প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন যে ওই ঘটনায় ২৩ বছর বয়সী ইসরায়েলি-আমেরিকান জিম্মি হার্শ গোল্ডবার্গ-পোলিনের একটি অঙ্গ গ্রেনেডে উড়ে গেছে।
তার বাবা জন পলিন ইসরায়েলি এবং বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন তার ছেলেকে বাড়ি ফিরিয়ে নেয়ার জন্য, সেইসাথে হার্শকে বেঁচে থাকার সর্বোত্তম সুযোগ দেওয়ার জন্য গাজায় জরুরি চিকিৎসা সহায়তার অনুমতি দেওয়ার জন্য।
গত শনিবার ২০টি ট্রাকের প্রথম বহরের পরে এই অঞ্চলের সাথে মিশরের সীমান্ত দিয়ে গাজায় খাদ্য, জল এবং ওষুধ বহনকারী আরও ১৫টি ট্রাক ত্রাণ সহায়তা নিয়ে যায়।
সহিংসতার এই সর্বশেষ সংঘাতের আগে গাজা প্রতিদিন গড়ে ৪৫০টি ত্রাণবাহী ট্রাক গ্রহণ করত, কারণ সেখানকার জনসংখ্যার প্রায় ৮০ শতাংশ নিয়মিতভাবে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সরবরাহের উপর নির্ভর করে।
লিও ক্যান মেডেসিনস সান ফ্রন্টিয়েরস-এর মিশন প্রধান, যেটি ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস নামেও পরিচিত, তিনি বলেন প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম সংখ্যক ত্রাণবাহী ট্রাক আসছে যা আসন্ন মানবিক বিপর্যয় থামাতে সক্ষম নাও হতে পারে।
এদিকে চিকিত্সকরা গাজায় সম্ভাব্য ইসরায়েলি স্থল আক্রমণ নিয়ে উদ্বিগ্ন যা আগামী দিনগুলোতে শুরু হতে পারে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, সামরিক বাহিনী ইতিমধ্যে গাজায় বেশ কয়েকটি অভিযান চালিয়েছে, যার মধ্যে সর্বশেষ আইডিএফ-এর একজন সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে।
লেবাননের দক্ষিণে হিজবুল্লাহ সশস্ত্র গোষ্ঠীর রকেট হামলার পাশাপাশি ইরান থেকে ইসরায়েলের প্রতি হুমকির পর হামাস-ইসরায়েল সংঘাত প্রতিবেশী দেশগুলিতে বিস্তৃত হতে পারে বলেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আশঙ্কা রয়েছে।
গত সোমবার ২৩শে অক্টোবর ইসরায়েলি বিমান লেবাননের দুটি হিজবুল্লাহ সেলে আঘাত করেছে। আই-ডি-এফ দাবি করেছে যে ওই গ্রূপটি গাজায় হামাস বাহিনীর সাথে যৌথভাবে ইসরায়েলের দিকে ট্যাঙ্ক-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র এবং রকেট হামলার পরিকল্পনা করছে।
২০০৬ সালে ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধের পর এটিই দুই বাহিনীর মধ্যে সীমান্ত সহিংসতার বৃদ্ধির সবচেয়ে মারাত্মক ঘটনা।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সীমান্তে সৈন্যদের উদ্দেশে বলেছেন, হিজবুল্লাহ তাদের কর্যক্রম অব্যাহত রাখলে তারা লেবাননকে পঙ্গু করে দিতে প্রস্তুত।
এদিকে ইরানও সংঘাতে যোগদানের হুমকি দিয়েছে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাইয়ান এখন সতর্ক করে বলেছেন যে ইসরায়েল যদি গাজায় আক্রমণ চালিয়ে যায় তবে যেকোনো কিছু সম্ভব।
এদিকে ভ্যাটিকানে শান্তির আহ্বান জানিয়ে পোপ ফ্রান্সিস বলেছেন যে তিনি গাজায় গীর্জা ধ্বংসের খবরে দুঃখিত, এবং প্রার্থনা করছেন যে হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের শীঘ্রই মুক্তি দেওয়া হবে।
সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ার লিঙ্কে ক্লিক করুন।
এসবিএস রেডিও সম্প্রচার-সূচী হালনাগাদ করেছে । ৫ অক্টোবর থেকে নতুন চ্যানেলে, পরিবর্তিত সময়ে সরাসরি সম্প্রচার শোনা যাচ্ছে।
প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার, বিকাল ৩টায়, এসবিএস পপদেশীতে আমাদের অনুষ্ঠান শুনুন, লাইভ।
কিংবা, পুরনো সময়সূচীতেও আপনি আমাদের অনুষ্ঠান শোনা চালিয়ে যেতে পারেন। প্রতি সোম ও শনিবার, সন্ধ্যা ৬টায়, এসবিএস-২ এ।