ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ভূমি আন্দোলনের জন্যে আলোচিত নন্দীগ্রামের জনসভায় কৃষক আন্দোলনের ধাত্রীভূমি তার কাছে লাকি জায়গা, সেক্ষেত্রে দলের সভাপতি সুব্রত বক্সিকে তাঁর নাম প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করার আবেদনও জানিয়েছেন দলনেত্রী।
তিনি বলেছেন, তিনি ২৯৪ টি আসনে প্রার্থী হয়ে লড়াই করবেন তাই হয়তো ভোট তিনি নন্দীগ্রামের জন্য বেশি সময়ে দিতে পারবেন না। কিন্তু নন্দীগ্রামের জন্য সব কাজ করে দেবেন। কেন তিনি প্রার্থী হতে চান তাও নন্দীগ্রামের সভায় দাঁড়িয়ে বলেছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী।
পশ্চিমবঙ্গের জমি আন্দোলনের অন্যতম ক্ষেত্র নন্দীগ্রামে মমতার প্রার্থী হওয়ার ঘোষণায় রাজ্য রাজনীতিতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সভার বক্তৃতা পর্বে সবার প্রথমে তিনি চান ভালো কেউ একজন প্রার্থী হন নন্দীগ্রামে। তারপর নিজেই বলেছেন তিনি প্রার্থী হলে কেমন হয় উচ্ছসিত জনতার সমর্থনের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনেকদিন শহরের এলাকা থেকে প্রার্থী হয়েছেন এবার একটি গ্রামীণ ক্ষেত্রে লড়াই করতে চান তিনি।
সদ্য দল বদলানো শুভেন্দু অধিকারীকে এই ঘোষণার মাধ্যমে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁর বর্তমান নির্বাচনী ক্ষেত্র ভবানীপুরকেও তিনি অবহেলা করছেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। এমন কি ,প্রয়োজনে ভবানীপুরেও তিনি প্রার্থী হতে পারেন।
দুই জায়গাতেই তিনি প্রার্থী হতে পারেন। তবে তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রের খবর, ভাইপো এবং সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভবানীপুরে প্রার্থী হতে পারেন। এজন্যেই দলীয় নেত্রীর এই সিদ্ধান্ত।
এর আগে, মনের নন্দীগ্রাম মনেই আছে, হাওড়ার ডুমুরজোলা স্টেডিয়াম থেকে হেলিকপ্টারে ওঠার আগেই সুর বেঁধে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।আর নন্দীগ্রামে পা রেখেই তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন ১৩ বছর আগের সেই আন্দোলনের স্মৃতি এখনও তাঁর হৃদয়ে অমলিন।
নন্দীগ্রাম আন্দোলনে যে ১০ জন আন্দোলনকারী নিখোঁজ ছিলেন, সেই দশ পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে ৪ লক্ষ টাকা করে সাহায্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী। স্মরণ করেছেন আন্দোলনের শহিদদেরও। মনে করান, ১৩ বছর আগে আন্দোলনের সময় শহিদদের পাশাপাশি ১০ জন আন্দোলনকারী নিখোঁজও ছিলেন। তাঁদের এখনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। জানিয়ে দেন, নন্দীগ্রাম এখনও তাঁর হৃদয়ে আছে।
তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, এবারে নন্দীগ্রামে এমন কাউকে প্রার্থী করব ভাবছি, যে আপনাদের কাছে পড়ে থেকে আপনাদের কাজ করবে। ভাল কাউকেই প্রার্থী করব। ভাবছিলাম, আমি নিজেই যদি দাঁড়ায় তাহলে কেমন হয়?
একটু গ্রামের জায়গা, আমার মনের জায়গা, আমি হয়তো ভোটের আগে বেশি আসতে পারব না। আমাকে ২৯৪ আসনেই লড়তে হবে। আপনারাই সব করে দেবেন। ভোটের পরে যা করার আমি করব। নন্দীগ্রামের সঙ্গে আমার আত্মার টান। নিজের বিবেক থেকেই বলছি। নন্দীগ্রাম আমার জন্য লাকি। এখান থেকেই লড়ব, এবং সবকটি আসনে তৃণমূল কংগ্রেস জিতবে।
এরপরই স্পষ্ট করে মমতা জানিয়ে দেন, দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে বলবেন নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হিসেবে যেন তাঁর নামটা রাখা হয়। তিনি নন্দীগ্রামের মানুষের মধ্যে থেকে কাজ করতে চায়। উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্য একাত্মতার বার্তা দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, এমন দল কোথাও দেখেছেন, ভালবাসার টানে আর নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারলেন না।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে ফের বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন উত্তরপ্রদেশের পরিষদীয় দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী আনন্দ স্বরূপ শুক্লা। তৃণমূল সুপ্রিমোকে সরাসরি ইসলামিক জঙ্গি বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি।
রবিবার যোগী মন্ত্রিসভার সদস্য আনন্দ স্বরূপ শুক্লা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করেছেন।
তিনি বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরোপুরি বাংলাদেশিতে পরিণত হয়েছেন এবং ইসলামিক সন্ত্রাসবাদীদের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করছেন। দেশের কাছে তিনিই সবথেকে বড় বিপদ। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পরেই তিনি বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেবেন।
তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমোকে আক্রমণ করে তিনি আরও বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ভারতীয়ত্বে বিশ্বাসী নন। তাই হিন্দু দেবদেবীদের অপমান করেন। তিনি একজন ইসলামিত সন্ত্রাসবাদী। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় মন্দির ভেঙে ও হিন্দু দেবদেবীদের অপমান করাই তাঁর কাজ। আসলে বাংলাদেশের হয়েই পুরোপুরি কাজ করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারতে বসবাসকারী মুসলিমরা যেখানে ভারত মাতা কী জয় ও বন্দে মাতরম বললে সম্মান পাচ্ছেন সেখানে তিনি ইসলামিক জঙ্গিদের সমর্থনে কাজ করছেন।
আরো দেখুনঃ