লাউডস্পিকারে আজান দেওয়া হচ্ছে সিডনির লাকেম্বা মসজিদে

রমযান মাসে লাউডস্পিকারে আজান দেওয়া হচ্ছে সিডনির লাকেম্বায় অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় মসজিদে। করোনাভাইরাসের এই বৈশ্বিক মহামারীর সময়ে এই উদ্যোগের ফলে কমিউনিটিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

Sydney's Lakemba mosque.

Sydney's Lakemba mosque. Source: AAP

সিডনির লাকেম্বার ইমাম আলী ইবনে তালেব মসজিদে লাউডস্পিকারের মাধ্যমে আজান দেওয়া হচ্ছে।

লাউডস্পিকারের মাধ্যমে বুধবার এক দফা আজান প্রদানের পর এই মসজিদটির পরিচালনাকারী লেবানিজ মুসলিম অ্যাসোসিয়েশন (এলএমএ)-এর একজিকিউটিভ ডাইরেক্টর আহমদ মালাস এসবিএস অ্যারাবিক-২৪ কে বলেন, ২২ মে রমযানের শেষ দিন পর্যন্ত এখানে লাউডস্পিকারে করে মাগরিবের আজান প্রচার করা হবে।

মুসলমানদের বর্ষপঞ্জিতে রমযান একটি পবিত্র মাস। এই মাসে মুসলমানরা বিভিন্ন কমিউনিটি ইভেন্টে অংশ নিয়ে থাকেন, পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবসহ একত্রে নামাজ পড়েন এবং দিনের বেলায় রোযা রাখেন।
Men gather to pray at Lakemba Mosque in Sydney, Friday, Aug. 22, 2014. (AAP Image/Tracey Nearmy) NO ARCHIVING, EDITORIAL USE ONLY
Men at the Lakemba mosque in Sydney. Source: AAP
সুবেহ সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোযা রাখেন মুসলমানরা। সূর্যাস্তের পর মাগরিবের আজান শুনে তারা ইফতার করেন। আজান শেষ হতে সাধারণত ৫ মিনিটের মতো সময় লাগে।

মিস্টার মালাস বলেন, বিশেষভাবে করোনাভাইরাসের এই বৈশ্বিক মহামারীর সময়ে লাউডস্পিকারে আজান প্রচার করার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন,

“আপনি জানেন যে, করোনাভাইরাস নিষেধাজ্ঞাগুলো এবং মসজিদ ও অন্যান্য প্রার্থনার স্থানগুলো বন্ধ রাখার কারণে লোকেরা রমযানের বিশেষ আবহ ও পরিবেশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।”

“রমযান মাসে লাকেম্বা মসজিদ বিশেষ রূপ ধারণ করে। তাই আমরা ভেবেছিলাম, মানুষ অন্তত মসজিদ থেকে আজানটা শুনতে পাক।”

মাইক্রোফোন ব্যবহার করে মসজিদের উঁচু মিনারা থেকে সাধারণত আজান দেওয়া হয়ে থাকে। যিনি আজান দেন তাকে মুয়াজ্জিন বলা হয়।
Sheikg Mohamed Harbi is getting ready to perform the call of prayer
Sheikh Mohamed Harbi will make the call to prayer. Source: Supplied
মুসলমান-অধ্যুষিত দেশগুলোতে রাস্তা-ঘাট, অলি-গলিতে আজান শোনা গেলেও অস্ট্রেলিয়ায় এটি বিরল।

মিস্টার মালাস বলেন,

“রোযা শুরু হওয়ার আগে থেকেই আমরা এই ভাবনাটি নিয়ে কাজ করছিলাম। তবে, এটি বাস্তবায়ন করতে সময় লেগে গেল। আর, এর প্রতিক্রিয়াও অনেক ইতিবাচক ছিল।”

“লাকেম্বার বহু অধিবাসীই মুসলমান। ইফতার করার সময়ে আজান শুনে তারা বিস্মিত হয়েছেন। কী হচ্ছে তা বোঝার জন্য মানুষ ঘর থেকে বাইরে বের হয়ে এসেছেন।”

“আজান শুনতে তারা খুবই উৎসুক ছিলেন। এটি এ রকমই একটা কিছু, যা পবিত্র রমযান মাসে মসজিদের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের নবায়ন ঘটায়।”
Members of the muslim community celebrate Eid al-Fitr,  at Lakemba Mosque in Sydney
File image: Members of the muslim community celebrate Eid al-Fitr, at Lakemba mosque in Sydney. Source: AAP Image/Dean Lewins
মিস্টার মালাস বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় যখন প্রথমবার আজান দেওয়া হলো তখন সেটি কমিউনিটির জন্য অনেক আবেগঘন বিষয় ছিল।”

“কোনো কোনো ব্যক্তি ভিন্ন ভিন্ন সাবার্ব থেকে গাড়ি চালিয়ে আসেন এবং মসজিদের আশেপাশে গাড়ি পার্ক করে দেখতে থাকেন যে, কী হচ্ছে। তারা এটি ভিডিও করেন এবং ব্যাপকভাবে, এমনকি আরব দেশগুলোতেও তা ছড়িয়ে দেন।”

করোনাভাইরাসের নিষেধাজ্ঞাগুলোর কারণে লাকেম্বায় রমযান মাসে অনুষ্ঠিত হওয়া অনেক কার্যক্রমই বাতিল করা হয়েছে।
বিগত বছরগুলোতে রমযান মাসে লাকেম্বা মসজিদে প্রায় ১০ হাজার মুসল্লি প্রতি রাতে তারাবিহ্ পড়তেন। এই সাবার্বটিতে রমযান মাসে অনেক বাজার চালু থাকতো।

মিস্টার মালাস বলেন,

“কাউন্সিল এবং এখানকার অধিবাসীরা এর সঙ্গে পরিচিত। বিগত বছরগুলোতে এশার নামাজ প্রায় ঘণ্টা খানেক ধরে স্পিকারে শোনা যেত। ঈদের সময়ে এবং রমযান মাসে একটি বিশেষ রাতে সাধারণত রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হতো। তবে, মাগরিবের আজান (লাউডস্পিকারে ঘোষণার বিষয়টি) আসলেই নতুন কিছু।”

“আমরা কখনই অধিবাসীদের কাছ থেকে কোনো সমস্যা বা অভিযোগ পাই নি।”

এলএমএ অনলাইনে রমযান প্রোগ্রামও পরিচালনা করে থাকে।

“এসব কিছু আমাদের ওয়েবসাইট এবং ফেসবুকে আরবী এবং ইংরেজিতে এবং কোনো কোনোটি সাইন ল্যাঙ্গুয়েজেও পাবেন।”

Follow SBS Bangla on .

Share
Published 4 May 2020 3:28pm
By Abdallah Kamal
Presented by Sikder Taher Ahmad


Share this with family and friends