নতুন প্রযুক্তি কি আত্মহত্যার হার কমাতে পারবে?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৪ সালের তথ্য অনুযায়ী বিশ্বে প্রতিবছর আট লাখ (আটশ’ হাজার) মানুষ আত্মহত্যা করে। অস্ট্রেলিয়ায় প্রতিদিন কমপক্ষে ৬ ব্যক্তি আত্মহত্যা করে। আর, প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ জন আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে। বাংলাদেশে ৬৫ লাখ (৬৫০ হাজার) মানুষ আত্মহত্যার ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এদের মধ্যে শতকরা ৯০ শতাংশই নারী। আত্মহত্যার হার কমাতে প্রযুক্তি কতোদূর ভূমিকা রাখতে পারে এখন সেটা নিয়ে গবেষণা হচ্ছে।

Generic photo of a child sitting

New technology may provide new avenues to address mental health and reduce suicide. Source: AAP

নতুন প্রযুক্তি কি অস্ট্রেলিয়ায় আত্মহত্যার হার কমাতে পারবে? হতাশা কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে প্রযুক্তি কি কোনো সাহায্য করতে পারবে? অস্ট্রেলিয়ায় আত্মহত্যার হার কমানোর ক্ষেত্রে এখন এ প্রশ্নগুলো প্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে।

অনলাইনে গুগল সার্চের মাধ্যমে নানা বিষয় সম্পর্কে খোঁজ করে মানুষ। কেউ কেউ নিজের কিংবা ঘরের লোকের চিকিৎসার জন্যও গুগল সার্চের আশ্রয় নেয়। তবে স্বীকৃত ডাক্তাররা এই ’-এর সমর্থন করেন না, তারা সত্যিকারের ডক্টরের কাছেই আসতে বলেন।
Director of the Black Dog Institute, Helen Christensen.
Director of the Black Dog Institute, Helen Christensen. Source: SBS News
মানসিক স্বাস্থ্য-সেবার ক্ষেত্রে বিষয়টি কিছুটা ভিন্নরকম। মানসিক স্বাস্থ্য-সেবার প্রথম ধাপ হিসেবে অনলাইন-সেবা মানুষের জীবন রক্ষা করতে পারে। এসবিএস নিউজ-এর একটি দেখা যায়, ডিরেক্টর হেলেন ক্রিস্টেনসেন বলেন:

“অনলাইনে দিনে-রাতে সর্বক্ষণই তথ্য পাওয়া যায় এবং অটোমেটেড চ্যাটবক্স থেকে সাড়া পাওয়া যায়।”

তার মতে, আত্মহত্যা-প্রবণ বেশিরভাগ লোকই প্রচলিত চিকিৎসা-সেবা গ্রহণ করতে চান না। এর মানে হলো, অনলাইন টুলসগুলো এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

দি মেন্টাল হেলথ রিসার্চ অর্গানাইজেশনের একটি অনলাইন ও সেল্ফ-হেল্প প্রোগ্রাম আছে। এটি বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়। এর নাম । সম্প্রতি এটি নতুনভাবে চালু করা হয়েছে। এতে ভিডিও রিসোর্সও যুক্ত করা হয়েছে।

অ্যাংজাইটি, ডিপ্রেশন এবং স্ট্রেস-এর চিকিৎসার জন্য ব্যক্তিভেদে প্রয়োজন অনুসারে এর মাধ্যমে সেবা প্রদান করা হয়।
Suicide prevention campaigner Shannai Pearce speaks about her experience.
Suicide prevention campaigner Shannai Pearce speaks about her experience. Source: SBS
শানাই পিয়ার্সের বয়স যখন ১৪ বছর ছিল তখন তিনি প্রথম আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। অনলাইন হেল্প সম্পর্কে তিনি বলেন:

“কারও সঙ্গে মুখোমুখি এ বিষয়ে কথা বলার আগে অনলাইনের এই সেবার মাধ্যমে কিছুটা হলেও আড়াল পাওয়া যায়।”

দি ব্ল্যাক ডগ ইনস্টিটিউট আরও একটি গবেষণা প্রকল্প শুরু করেছে। এর নাম দি সেন্টার অফ রিসার্চ এক্সেলেন্স ইন সুইসাইড প্রিভেনশন। (সিআরইএসপি)। আত্মহত্যার হার কমানোর ক্ষেত্রে প্রযুক্তি কতোটুকু ভূমিকা রাখতে পারে সেটাই খতিয়ে দেখা হবে এই গবেষণায়।

মিজ হেলেন ক্রিস্টেনসেন বলেন:

“সবার কাছে পৌঁছানোর মাধ্যমেই আমরা আত্মহত্যার হার কমাতে পারবো। এটাই একমাত্র পথ। কারণ, আমরা জানি না কে আত্মহত্যা করতে যাচ্ছে।”

এদিকে, বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের রিপোর্টে দেখা যায়, সেখানে ৬৫ লাখ (৬৫০ হাজার) মানুষ আত্মহত্যার ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এদের মধ্যে শতকরা ৯০ শতাংশই নারী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৪ সালের অনুযায়ী বিশ্বে প্রতিবছর আট লাখ (আটশ’ হাজার) মানুষ আত্মহত্যা করে।

বাংলাদেশের জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকরা অভিযোগ করেছেন, আত্মহত্যার প্রতিবেদন প্রকাশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান মানছে না। তাদের মতে, আত্মহত্যার প্রতিবেদন এমন হওয়া উচিত, যেন সেই প্রতিবেদন পড়ে অন্য কেউ আত্মহত্যায় অনুপ্রাণিত না হয়, কিংবা আত্মহত্যার নতুন কোনো পরিকল্পনার পথ খুঁজে না পায়।

বাংলাদেশে আত্মহত্যা প্রতিরোধে সরকারি হটলাইন চালু করার দাবি উঠেছে বিশেষজ্ঞদের মধ্য থেকে।

Follow SBS Bangla on .


Share
Published 14 September 2018 5:40pm
By Sikder Taher Ahmad

Share this with family and friends