নিউ জিল্যান্ডে মসজিদ হামলাকারী বন্দুকধারী কখনোই মুক্তি পাবে না আশা করছেন আইনজীবিরা

কড়া নিরাপত্তার মাঝে অস্ট্রেলিয়ার একজন শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীর দণ্ডাদেশ প্রদানের কাজ শুরু হয়েছে নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে। ৫১ জন মুসলমান প্রার্থনাকারীকে হত্যা এবং সেই হত্যাযজ্ঞের সরাসরি সম্প্রচার করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

Mourners pay their respects at a makeshift memorial near the Masjid Al Noor mosque (AAP).jpg

Mourners pay their respects at a makeshift memorial near the Masjid Al Noor mosque (AAP).jpg Source: AP

ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে বন্দুক হামলাকারীর নিউ জিল্যান্ডের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে বিনা প্যারোলে আজীবন কারাদণ্ড হবে, এই প্রত্যাশা করছেন আইনজীবিরা। গত বছরের মে মাসে সেই হামলায় ৫১ জন মুসলমান প্রার্থনাকারী মারা যান।

আদালতে চার দিন ধরে শুনানি চলবে। রায় প্রদানের আগে, অভিযুক্ত ব্রেন্টন ট্যারান্টের বক্তব্য শোনার আগে, হাইকোর্টের বিচারক ক্যামেরন ম্যান্ডার এই হামলায় বেঁচে যাওয়া ৬৬ জন ভিকটিমের বিবৃতি শুনবেন।
নিউ জিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডেন এই ঘটনাকে বর্ণনা করেছিলেন “নিউ জিল্যান্ডের অন্ধকারতম দিনগুলোর একটি” হিসেবে। গত বছর ১৫ মার্চ একটি সেমি-অটোমেটিক রাইফেল নিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি দু’টি মসজিদে শুক্রবারের জুম্মার নামাজের সময়ে হামলা চালায়।

এরপর অচিরেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিকভাবে ৫১টি হত্যা, ৪০ জনকে হত্যা-প্রচেষ্টা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।

এ বছরের মার্চ মাসে তিনি এসব অভিযোগ স্বীকার করেন।
A police officer stands guard in front of the Masjid Al Noor mosque in Christchurch (AAP)
یک افسر پولیس نیوزیلند در حال نگهبانی از مسجد النور کرایست‌چرچ Source: AP
ক্রাইস্টচার্চের প্রখ্যাত আইনজীবি নাইজেল হ্যাম্পটন বলেন, “ভয়ানক” “অপরাধ সম্ভবত”, “অসাধারণ শাস্তির প্রয়োজন”। আর আইনের অধ্যাপক ক্রিস গ্যালাভান বলেন, “সে আর কখনও দিনের আলো দেখবে না”।

বিচারক ম্যান্ডার বলেন, ভিকটিমদের কাছে দণ্ডদানের প্রক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ এবং “মুসলমানদেরকে স্বস্তি প্রদানের জন্য কারও কারও কাছে চূড়ান্তকরণ এবং সমাপ্তি সর্বোত্তম উপায়।”

তবে তিনি অনেক বেশি কড়াকড়ি আরোপ করেছেন গণমাধ্যমে এ নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করার বিষয়ে। ২৯ বছর বয়সী এই বন্দুকধারী যদি কাঠগড়া থেকে নব্য-নাৎসি প্রচারণা চালায় সেটা যেন প্রচার না পায়।

অনেকের জন্যই কঠিন একটি সপ্তাহ

আদালতের প্রতিটি সেসনের পর গণমাধ্যমকে অবহিত করবেন বিচারক ম্যান্ডার, কী কী বিষয় রিপোর্ট করা যাবে এবং যাবে না। এসবের লঙ্ঘন হলে আদালত অবমাননার দায় বর্তাতে পারে।

তিনি বলেন,

“আদালতের একটি দায়িত্ব রয়েছে, বিশেষভাবে টেরোরিজম সাপ্রেশন অ্যাক্ট এর বিপক্ষে সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে, এটা নিশ্চিত করা যে এটি যেন একটি প্লাটফর্ম হিসেবে ব্যবহৃত না হয় ... (এবং) আরও ক্ষতি করার মাধ্যম হিসেবে এর ব্যবহার প্রতিরোধ করা নিশ্চিত করতে।”
worshippers prepare to enter the Al Noor mosque following the previous week's mass shooting (AAP)
نمازگزاران در حال ورود به مسجد النور در هفته بعد از حمله Source: AP
মিজ আর্ডেন বলেন, এটি একটি কঠিন সপ্তাহ হবে অনেকের জন্য।

রিপোর্টারদেরকে তিনি বলেন,

“আমি মনে করি না আমার কিছু বলার আছে, যার ফলে দুঃখজনক এই সময়কালটি সহজ হবে।”

আদালত-প্রাঙ্গনে পুলিশ-সংখ্যা বাড়ানো হবে এবং ভিকটিম সাপোর্ট ওয়ার্কাররাও উপস্থিত থাকবেন আর লোকাল মেন্টাল হেলথ স্পেশালিস্টরাও প্রস্তুত থাকবেন।

নিউ জিল্যান্ডের বৈচিত্রময় মুসলমান কমিউনিটির জন্য আদালতের কার্যক্রম আটটি ভাষায় সরাসরি অনুবাদ করা হবে।
এই হামলার পর নিউ জিল্যান্ডের আগ্নেয়াস্ত্র মালিকানা আইন পরিবর্তন করা হয়। আর অনলাইন থেকে সন্ত্রাসী এবং সহিংস আধেয় সরানোর লক্ষ্যে মিজ আর্ডেন একটি বৈশ্বিক প্রচার শুরু করেনে।

বন্দুকধারী হামলা করার কিছুক্ষণ আগে অনলাইনে একটি ইশতেহার প্রকাশ করেন। সেই ইশতহারটি এবং গোলাগুলির ভিডিও সংরক্ষণ করা নিউ জিল্যান্ডে বেআইনী।

নিউ জিল্যান্ডে মৃত্যুদণ্ড নেই। সেখানে সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী সাজা পেয়েছেন একজন পুরুষ, প্যারোল-বিহীন কমপক্ষে ৩০ বছরের কারাদণ্ড। ২০০১ সালে তিনি ৩ ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলেন।

অস্ট্রেলিয়ার লোকদের জন্য, মানসিক স্বাস্থ্য-সহায়তা পেতে দেখুন: . ভাষা ও সংস্কৃতির দিক দিয়ে বৈচিত্রপূর্ণ পটভূমির লোকদেরকে সহায়তা করে .

Follow SBS Bangla on .

Share
Published 24 August 2020 6:16pm
Presented by Sikder Taher Ahmad
Source: AFP, SBS


Share this with family and friends