একটি ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে, আশ্রয়প্রার্থী এক ব্যক্তিকে পাঁচ বছর ডিটেনশন সেন্টারে আটকে রেখে ‘অপরাধী’র মতো আচরণ করেছেন অ্যাক্টিং ইমিগ্রেশন মিনিস্টার অ্যালান টাজ। একজন বিচারক এ কথা বলেছেন।
বুধবার ফেডারাল কোর্টে বিচারপতি জিওফ্রে ফ্লিক এই কঠোর মন্তব্য প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এই মন্ত্রী ‘যে আচরণ করেছেন, তা শুধুমাত্র অপরাধীর আচরণ বলেই বর্ণনা করা যেতে পারে’।
মিস্টার টাজ দাবি করেছেন তিনি কোনো অন্যায় করেন নি। তিনি বলেন, এ বিষয়ে তিনি আর কোনো কথা বলবেন না।
৩৪ বছর বয়সী একজন আফগান ব্যক্তির ক্রিমিনাল রেকর্ড থাকা সত্ত্বেও একটি প্রটেকশন ভিসা মঞ্জুর করা নিয়ে ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তকে ঘিরে এই আইনী লড়াই।
ফেডারাল কোর্ট দেখতে পেয়েছে, ৩৪ বছর বয়সী সেই আফগান ব্যক্তিকে ক্রমাগত ডিটেনশনে রেখে মন্ত্রী তাকে স্বাধীন চলাফেরা থেকে বঞ্চিত করেছেন। মন্ত্রীর এই আচরণকে আদালত ‘অসম্মানজনক’ এবং ‘আইনানুগ কর্তৃত্ব বিহীন’ বলে বর্ণনা করেছে।
আদালতের নথিতে বলা হয়েছে,
“মন্ত্রী নিজেকে আইনের ঊর্ধ্বে স্থাপন করতে পারেন না এবং একই সঙ্গে এটা আশা করতে পারেন না যে, এই আদালত তাকে মর্জিমাফিক স্বস্তি দেবে।”
“তার আচরণ দেওয়ানী এবং সম্ভাব্য ফৌজদারী সাজার জন্য তাকে তুলে ধরে, যা শুধু অবমাননার আচরণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।”
আদালতের নথিতে সেই আফগান ব্যক্তিকে উল্লেখ করা হয়েছে PDWL হিসেবে। তিনি ২০১৬ সালে প্রটেকশন ভিসার জন্য আবেদন করেছিলেন।
২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর হোম অ্যাফেয়ার্সের একজন কর্মকর্তা তাকে ভিসা প্রদানে অস্বীকৃতি জানান। কারণ, ২০১৮ সালের মার্চ মাসে তিনি ফৌজদারী অপরাধের দায়ে দণ্ডিত হয়েছিলেন।
এটা বোঝা যায় যে, এই অপরাধটি ছিল মদ্যপ অবস্থায় মোবাইল ফোনকে নিয়ে লড়াইয়ের ঘটনা।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে PDWL তার ভিসা সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করার জন্য অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অ্যাপিলস ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন।
১১ মার্চ ২০২০ তারিখে ট্রাইব্যুনাল পূর্ববর্তী সিদ্ধান্ত বাতিল করে তাকে প্রটেকশন ভিসা প্রদান করতে বলে।
এই সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও সেই আশ্রয়প্রার্থী ব্যক্তিকে অস্ট্রেলিয়ার ইয়ংগাহ হিল ইমিগ্রেশন ডিটেনশন সেন্টার থেকে মুক্তি দেওয়া হয় নি।
PDWL এখনও কেন ইমিগ্রেশন ডিটেনশনে রয়েছে, তার কারণ ব্যাখ্যা করে অ্যাফিডেভিট করতে মন্ত্রীকে নির্দেশ দেন ফেডারাল কোর্টের একজন বিচারক।
আদালত পরবর্তীতে উপসংহার টানে,
“...PDWL-কে ইমিগ্রেশন ডিটেনশন থেকে মুক্তি দেওয়া হয় নি শুধুমাত্র এ জন্য যে, ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত পছন্দ করেন নি মন্ত্রী।”
ট্রাইব্যুনাল আইনটি ভুলভাবে নিলেও ফেডারাল কোর্ট সিদ্ধান্ত দেয় যে, সেই ব্যক্তির প্রটেকশন ভিসা বহাল রাখতে হবে।
এক বিবৃতিতে মিস্টার টাজ বলেন, অযথার্থ আচরণের যে কোনো অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করেন তিনি।
লেবার দলের হোম অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক মুখপাত্রী ক্রিস্টিনা কেনেলি বলেন, মিস্টার টাজের এই আচরণের অবশ্যই ব্যাখ্যা দিতে হবে।
সিনেটর কেনেলি বলেন,
“স্কট মরিসনকে ব্যাখ্যা করতে হবে, কেন তিনি মনে করেন আইন তার প্রতি কিংবা তার মন্ত্রীদের প্রতি প্রযোজ্য নয়। কেন এটা মনে হচ্ছে যে, তার মন্ত্রীদের জন্য এক আইন এবং সাধারণ মানুষের জন্য ভিন্ন আইন?”