২০১৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিসমাস আইল্যান্ডে পাড়ি জমিয়েছিলেন বাংলাদেশী হেলাল উদ্দিন। বর্তমানে তার বয়স ৩১ বছর। ইতোমধ্যে ঘটে গেছে অনেক ঘটনা: কারাবন্দি হওয়া, প্রেম, বিয়ে, সন্তানের জন্ম এবং স্ত্রী-সন্তান ফেলে বহিষ্কৃত হওয়া থেকে শুরু করে ভালবাসার টানে পুনরায় পাপুয়া নিউ গিনিতে ফিরে আসা, গ্রেপ্তার হয়ে আবারও কারাবন্দি হওয়ার মতো ঘটনা।
২০২০ সালে তাকে পাপুয়া নিউ গিনির মেনাস আইল্যান্ডের বোমানা প্রিজনে আনা হয়। এপ্রিলে তিনি মাত্র দু’সপ্তাহের জন্য মুক্তি পান। ন্যাশনাল কোর্টের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পি-এন-জি ইমিগ্রেশন আপিল করলে তাকে আবারও বন্দি করা হয়। ১৪ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের শুনানীতে তাকে বলা হয়, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি অতিক্রম হয়ে যাওয়ার পরও সিদ্ধান্ত হয় নি। তাই তিনি তার ধৈর্যের শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছেন বলে জানিয়েছে রিফিউজি অ্যাকশন কোয়ালিশন।
টাইমলাইন
- ২০১৩: অস্ট্রেলিয়ার ক্রিসমাস আইল্যান্ডে আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে আগমন।
- ২০১৬: আড়াই বছর মেনাস আইল্যান্ড ডিটেনশন সেন্টারে থাকার পর মুক্তি। স্থানীয় নারী অ্যালিস মাইকেলের সঙ্গে প্রেম।
- ২০১৭: মার্চে বিয়ে এবং ১৯ মার্চে তাদের ছেলে মোহাম্মদ আলীর জন্ম।
- ২০১৮: মার্চে গ্রেপ্তার ও বহিষ্কৃত হন। বউ-বাচ্চা ছেড়ে বাংলাদেশে ফিরে যান। বউ-বাচ্চার টানে নভেম্বরে বোটে করে পুনরায় মনুস আইল্যান্ডে ফিরে আসেন।
- ২০১৯: মার্চে আবারও গ্রেপ্তার।
- ২০২০: তাকে পাপুয়া নিউ গিনির মেনাস আইল্যান্ডের বোমানা প্রিজনে আনা হয়। এপ্রিলে তিনি মাত্র দু’সপ্তাহের জন্য মুক্তি পান। ন্যাশনাল কোর্টের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পি-এন-জি ইমিগ্রেশন আপিল করলে তাকে আবারও বন্দি করা হয়। ১৪ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের শুনানীতে তাকে বলা হয়, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
- ২০২১: ফেব্রুয়ারি অতিক্রম হয়ে যাওয়ার পরও সিদ্ধান্ত হয় নি। তাই তিনি তার ধৈর্যের শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছেন বলে জানিয়েছে রিফিউজি অ্যাকশন কোয়ালিশন।
রিফিউজি অ্যাকশন কোয়ালিশনের একটি মিডিয়া রিলিজে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়সীমা ফেব্রুয়ারির মাঝে সুপ্রিম কোর্ট তার আপিল সিদ্ধান্ত প্রদানে ব্যর্থ হলে তিনি অনশন করা শুরু করেছেন।
অস্ট্রেলিয়া থেকে হেলাল উদ্দিনের কেসটিতে সহায়তা করছেন রিফিউজি অ্যাকশন কোয়ালিশন-এর ইয়ান রিনটৌল। এসবিএস বাংলাকে তিনি বলেন,
“এটি মর্মান্তিক যে, হেলালকে এত দীর্ঘ দিন ধরে অপেক্ষায় থাকতে হলো। প্রথমত, তার বিচার-কার্যের জন্য এবং এখন আপিল সিদ্ধান্তের জন্য। তার স্বাধীনতা এবং পরিবারের ভবিষ্যত ঝুলে আছে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের ওপরে। এই আপিলের রায় অবশ্যই জরুরি ভিত্তিতে প্রদান করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন,
“হেলালকে কখনই জেলে ঢোকানো উচিত হয় নি। তিনি যা করতে চেয়েছিলেন তার সবই ছিল, পি-এন-জিতে তার পরিবারের সঙ্গে থাকা ও তাদেরকে সহায়তা করা। সেজন্য তিনি দু’বছর ধরে জেলে রয়েছেন।”