আগামী সপ্তাহ থেকে রিজিওনাল ভিক্টোরিয়ানদেরকে ঘর থেকে বাইরে যাওয়ার সময়ে মাস্ক পরিধান করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারীর প্রাদূর্ভাব হওয়ার পর, গত এক দিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক ব্যক্তি এতে আক্রান্ত হলেন।
রবিবার রাত ১১:৫৯ পিএম থেকে রিজিওনাল ভিক্টোরিয়ার সবাইকে ঘরের বাইরে যাওয়ার সময়ে মাস্ক পরিধান করতে হবে কিংবা মুখ ঢেকে বের হতে হবে। প্রিমিয়ার ড্যানিয়েল অ্যান্ড্রুজ বৃহস্পতিবার এ ঘোষণা দেন।
গ্রেটার জিলং, সার্ফ কোস্ট, মুরাবুল, গোল্ডেন প্লেইন্স, কোলাক-অটোওয়ে এবং কুইন্সক্লিফ লোকাল গভার্নমেন্ট এরিয়াগুলোর বাসিন্দারা বৃহস্পতিবার রাত ১১:৫৯ পিএম-এর পর থেকে তাদের বাড়িতে আর কোনো দর্শনার্থী প্রবেশ করাতে পারবেন না।
বৃহস্পতিবার ভিক্টোরিয়ায় নতুন ৭২৩ টি করোনাভাইরাস কেস সনাক্ত করা হয়েছে। এক দিনে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যার দিক দিয়ে এটিই সর্বোচ্চ। এর আগের সর্বোচ্চ সংখ্যা থেকে এটি প্রায় দুই শতাধিক বেশি। সেখানে আরও ১৩ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
মিস্টার অ্যান্ড্রুজ বলেন, তিনি রিপোর্ট পেয়েছেন যে, ছিল। আজ দিনের শেষে হেলথ ডিপার্টমেন্ট প্রকৃত সংখ্যা সুনিশ্চিত করার কথা।
তিনি বলেন, রিজিওনাল ভিক্টোরিয়াতে এখন ২৫৫ টি সক্রিয় কোভিড-১৯ কেস রয়েছে। আর, মেট্রোপলিটন মেলবোর্নে নিষেধাজ্ঞাগুলোর বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা এই ভাইরাসটির প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হবে।
রিপোর্টারদেরকে তিনি বলেন,
“তাৎপর্যমূলক অর্থনৈতিক খরচ ছাড়াই রিজিওনাল ভিক্টোরিয়ায় আমরা এ ধরনের কিছু করতে পারি এবং এর মাধ্যমে আসলেই গণ-স্বাস্থ্যের জন্য সহায়ক কিছু করতে পারি।”
মিস্টার অ্যান্ড্রুজ উদাহরণ হিসেবে বলেন, গ্রেটার জিলং এবং অন্যান্য ছয়টি কাউন্সিল এলাকায় পাব এবং ক্যাপেগুলোর মতো ভেন্যুগুলো খোলা রাখা যাবে। কারণ, প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, সেসব স্থানে উচ্চ হারে সংক্রমণ ঘটছে না।
তিনি বলেন,
“(সংক্রমণের) বড় অংশ, অবশ্যই হচ্ছে কর্মক্ষেত্রে।”
“তবে সংক্রমণের একটা অংশ ঘটছে ঘর-বাড়িতে। আর, চিন্তা করে দেখবেন, মানুষ তাদের পারিবারিক জীবনে জন-দূরত্ব বজায় রাখে না।”
“এটা স্বাভাবিক বিষয়। মানুষ সতর্কতা অবলম্বন করে না।”
ভিক্টোরিয়াতে এর আগে এক দিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ৫৩২ জন। এটি ঘটে। এরপর মঙ্গলবার কেস সংখ্যা কমে গিয়ে ৩৮৪ এ দাঁড়ায় এবং বুধবারে তা ছিল ২৯৫ জন। এটা ছিল ২০ জুলাইয়ের পর সেখানকার সর্বনিম্ন সংখ্যা। সেজন্য মানুষ আশাবাদী হয়েছিল।
ভিক্টোরিয়ায় কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ৩১২ জন হাসপাতালে রয়েছেন। এদের মধ্যে ৩৪ জন রয়েছেন ইনটেনসিভ কেয়ারে। আর, এজড কেয়ারে রয়েছে ৯১৩টি সক্রিয় কেস।
বৃহস্পতিবার মিস্টার অ্যান্ড্রুজ বলেন, বৃহস্পতিবারের এই রেকর্ড-সংখ্যক কেসের ফলে “কমিউনিটিতে অনেক উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।” তিনি বলেন, মেলবোর্নে ছয় সপ্তাহের লকডাউন নিষেধাজ্ঞাকে আরও বাড়ানো হতে পারে।
তিনি বলেন,
“আমরা যদি মেট্রোপলিটন মেলবোর্নে এবং মিচেল শায়ারে আজ সবকিছু পুনরায় খুলে দিতাম তাহলে এটা একদিনে ৭০০ কেসে (সীমিত) থাকতো না। আপনাকে এর সঙ্গে আর একটি শূন্য লাগাতে হতো (৭,০০০ হয়ে যেত)।"
মিস্টার অ্যান্ড্রুজ বলেন, অস্ট্রেলিয়ার ডিফেন্স ফোর্স ৭৯৮ টি স্থাপনায় গিয়ে দরোজায় কড়া নেড়েছে।
তাদের দরোজায়, যারা ভাইরাস টেস্টে পজিটিভ হয়েছেন। এটা নিশ্চিত করার জন্য যে, তারা আইসোলেশনে রয়েছেন এবং স্বাস্থ্য বিধিগুলো মেনে চলছেন।
তিনি বলেন, এটা শুনে তিনি হতাশ হয়েছেন যে, সে-সব লোকের মধ্যে কেউ কেউ ঘরে ছিল না এবং এক জন এমনও ছিল যে, কিনা কাজে গিয়েছিল।
“আপনি যদি পজিটিভ কেস হন, তাহলে আপনাকে ঘরে থাকতে হবে এবং আপনাকে আইসোলেশনে থাকতে হবে। এমনকি একজন পাওয়াও অত্যন্ত হতাশাজনক, যে কিনা তার টেস্টের ফলাফল উপেক্ষা করে কাজে যাওয়া মনস্থ করেছে।”মেট্রোপলিটন মেলবোর্নের বাসিন্দাদেরকে ঘরে অবস্থান করার নির্দেশ অনুসরণ করতে হবে। শুধুমাত্র অপরিহার্য কাজ, পড়াশোনা, ব্যায়াম কিংবা সেবা করার জন্য ঘরের বাইরে যাওয়া যাবে। জনগণের মাঝে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে।
Victorian Premier Daniel Andrews addresses the media during a press conference in Melbourne Source: AAP
অস্ট্রেলিয়ার জনগণকে অবশ্যই পরস্পরের মাঝে কমপক্ষে ১.৫ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। ।
আপনার মাঝে যদি সর্দি-কাশির (কোল্ড কিংবা ফ্লু) লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে ঘরে অবস্থান করুন এবং আপনার ডাক্তারকে কল করে কিংবা করোনাভাইরাস হেলথ ইনফরমেশন হটলাইন, 1800 020 080 নম্বরে কল করে টেস্টের ব্যবস্থা করুন।
বাংলায় করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) বিষয়ক আমাদের সর্বশেষ আপডেটের জন্য ভিজিট করুন:
Additional reporting by AAP.