ক্যানবেরায় একটি অন্তরঙ্গ অনুষ্ঠানে ছয়টি দেশের ১১ ব্যক্তি অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্বের শপথ নেন। কোভিড-১৯ এর কারণে অনুষ্ঠানটিতে আলিঙ্গন ও করমর্দনের সুযোগ ছিল না। তবে, দীনেশ কুমার বলেন, এর জন্য তিনি দীর্ঘ দিন ধরে অপেক্ষা করছিলেন।
গত মাস থেকে কোনো কোনো স্টেট এবং টেরিটোরিতে স্বল্প-সংখ্যক ব্যক্তির উপস্থিতিতে নাগরিকত্বের শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন পুনরায় শুরু করা হয়েছে। এভাবে, ১৩০০ ব্যক্তিকে তাদের নাগরিকত্বের সনদ প্রদান করা হয়েছে। হোম অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টের জিওফ ফার্নস বলেন, এদের বড় একটি অংশ অনলাইনের মাধ্যমে এটি গ্রহণ করেছেন।
গত অর্থ-বছরে ২০৪,০০০ এরও বেশি নতুন নাগরিক তাদের শপথ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪৫,০০০ অনলাইনে গ্রহণ করেছেন। ইতোপূর্বে যাদের নাগরিকত্ব মঞ্জুর করা হয়েছে, কিন্তু শপথ গ্রহণ করা বাকি ছিল, সে-রকম জমে থাকা আবেদনগুলোর ব্যাকলগ বা বোঝা এভাবে ৪০ শতাংশ কমানো হয়েছে। অ্যাক্টিং ইমিগ্রেশন মিনিস্টার অ্যালান টাজ বলেন, সরকার এই ব্যাকলগ আরও কমাতে চায়।
২০১৯-২০২০ অর্থ-বছরে রেকর্ড-সংখ্যক, সবচেয়ে বেশি লোক অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছে। এর আগের বছরের তুলনায় এই সংখ্যা ৬০ শতাংশ বেশি এবং ২০১৮ সালের তুলনায় তা দ্বিগুণেরও বেশি।
গত অর্থ-বছরে নাগরিকত্ব গ্রহণকারী ব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিলেন ভারতীয়রা। ৩৮,০০০ এরও বেশি ভারতীয় নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। এর পরে রয়েছে যুক্তরাজ্য। তাদের সংখ্যা ২৫,০০০ এরও বেশি। আর, ১৫,০০০ এর সামান্য কম নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে চীন।
যেখানে গ্রহণকৃত আবেদনকারীদের ব্যাকলগ বা বোঝা কমানো হয়েছে, তবে ১,৪০,০০০ ব্যক্তির আবেদন এখন পেন্ডিং অবস্থায় রয়েছে।
নিউ সাউথ ওয়েলস এবং ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়াসহ কোনো কোনো স্টেট এবং টেরিটোরিতে স্বল্প-সংখ্যায় সিটিজেনশিপ টেস্ট এবং ইন্টারভিউ পুনরায় চালু করা হয়েছে। তবে, ভিক্টোরিয়াতে অপেক্ষার সময় আরও বাড়বে।
আমুল জাহনি তার পরিবার নিয়ে ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ায় আসেন। করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারী শুরু হওয়ার মাত্র কয়েকদিন আগে তারা মেলবোর্নে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেন। মিস্টার জাহনি বলেন, কখন তার সিটিজেনশিপ টেস্ট কিংবা ইন্টারভিউ গ্রহণ করা হবে, সে সম্পর্কে তাকে এখনও বলা হয় নি। তিনি বলেন, যতদিনই লাগুক, তিনি অপেক্ষা করবেন।
কেউ কেউ বলেছেন, এই ব্যাকলগের কারণে আবেদনকারীরা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেন অভিজিৎ সেন। তিনি বলেন, কেউ কেউ তাদের চাকুরি হারিয়েছে এবং তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে।
অ্যাক্টিং ইমিগ্রেশন মিনিস্টার অ্যালান টাজ বলেন, এই প্রক্রিয়াটি গতিশীল করতে কাজ করছে সরকার। তবে, তাদেরকে অবশ্যই সেফটি অ্যাডভাইস মেনে কাজ করতে হয়।