৩ নভেম্বর দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলায় ভারতের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। দিল্লির বায়ু দূষণের পরিমাণ মারাত্মক পর্যায়ে রয়েছে এখন। বিশেষ করে দীপাবলির পর এই দূষণ নতুন কোনো ঘটনা নয় দিল্লির জন্য। ভারতের বিরুদ্ধে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে দিল্লি পৌঁছেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। অনুশীলনেও নেমেছে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। তবে বায়ু দূষণের কারণে তাদের মাস্ক পরে অনুশীলন করতে হচ্ছে। রবিবার দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দিয়ে শুরু হতে চলেছে বাংলাদেশ-ভারত সিরিজ। এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) এরই মধ্যে দিল্লির বাতাসকে ‘মারাত্মক’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। দীপাবলির সকাল থেকেই দিল্লিতে বায়ুদূষণের মাত্রা বেড়েছে। বাতাস ব্যবস্থাপনা ও আবহাওয়া গবেষণা (এসএএফএআর) প্রতিষ্ঠানের মতে দিল্লির বাতাসের অবস্থা ‘খুবই বাজে’। একিউআইয়ের মানদণ্ড অনুযায়ী, দিল্লির বাতাসে দূষণের মাত্রা ৩০১-৪০০, যা শ্বাসকষ্ট ও অন্যান্য শারীরিক অসুস্থতার কারণ হতে পারে।
দীপাবলির পর বায়ুর দূষণমাত্রা ক্রমশ খারাপ হচ্ছে দিল্লির আবহাওয়া। সে কারণেই বেশ কয়েকজন পরিবেশবিদ বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলীকে একটি খোলা চিঠি লিখে দাবি জানিয়েছেন, দিল্লি থেকে ম্যাচ অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার। দিল্লিতে বায়ুদূষণের মাত্রা খুব বাজে হলেও ম্যাচ নির্ধারিত সময়েই মাঠে গড়াবে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম। ভারতের সংবাদমাধ্যম এ নিয়ে বিসিসিআইয়ে এক সূত্রের উদ্ধৃতি প্রকাশ করেছে, ‘দিল্লির দূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিটির কাছ থেকে আমরা অনুমতি নিয়েছি। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ৩ নভেম্বর খেলার ছাড়পত্র পাওয়ার পর ভেন্যু হিসেবে দিল্লিকে বেছে নেওয়া হয়েছে।’ কিন্তু মাঠে বায়ুদূষণের কারণে পরিস্থিতি খারাপ হলে সামলানোর ব্যবস্থা কী? এ প্রশ্নের জবাবে বিসিসিআইয়ের সেই সূত্র বলেছেন, ‘এখন সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে তাই পরিকল্পনা পাল্টানোর সুযোগ নেই।’
এই পরিস্থিতিতে খেলা এবং অনুশীলন খুবই দুরহ হয়ে পড়ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য।
ভারতের মাটিতে প্রথম পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ দল। টাইগারদের জন্য ভীষণ কঠিন হবে এই সিরিজ এমনি আশঙ্কা ক্রিকেট বোদ্ধাদের। নিয়মিত অধিনায়ক বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে এক বছর ক্রিকেটের সব আসর থেকে নিষিদ্ধ করেছে আইসিসি। নতুন অধিনায়ক এর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে দু’জনকে। টি-টোয়েন্টি সিরিজে নেতৃত্ব দিবেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। আর টেস্টে বাংলাদেশের ১১তম অধিনায়ক হচ্ছেন মুমিনুল হক। দুই অধিনায়কের সামনেই এখন কঠিন চ্যালেঞ্জ। অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহর চেয়ে চাপটা মুমিনুলের ওপর বেশি থাকবে। এবার কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে প্রথমবারের মতো ভারত-বাংলাদেশ খেলবে গোলাপি বলের দিবা-রাত্রির টেস্ট।
পরিসংখ্যান বলছে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি এই দুই ফরমেটে বাংলাদেশ এখনো জয় পায়নি ভারতের বিপক্ষে। এখন পর্যন্ত ৯ টেস্টের ৭টিতেই হেরেছে টাইগাররা। যার শেষটি দুই বছর আগে হায়দ্রাবাদে। সেবারই প্রথম ভারতের মাটিতে একমাত্র টেস্ট খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। আর টি-টোয়েন্টিতে ৮ ম্যাচের সবগুলোতে হার।
কেমন হবে সাকিব বিহীন ভারত সফর?
সাকিব আল হাসানকে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ করার রেশ তীব্রভাবে দেখা দিচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেট অঙ্গনে। বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে সাকিবের অনুপস্থিতিতে টিম সামলানোর প্রস্তুতি নিয়েছে বিসিবি। আগামী এক বছরে বাংলাদেশ দল খেলবে ১৩টি টেস্ট! একটি ছাড়া সবকটি ম্যাচ আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। আগামী বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বলে সংক্ষিপ্ত এই সংস্করণের ম্যাচ খেলবে ১৭টি।
অন্যদিকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও প্রথম পর্বের তিন ম্যাচে বাংলাদেশ সাকিবকে পাচ্ছে না। পরের পর্বে উঠতে পারলেও কমপক্ষে একটি বা সর্বোচ্চ দুটি ম্যাচ থাকবে সাকিবের নিষেধাজ্ঞার সময়ে। তাই ৪-৫টি ম্যাচ খেলতে পারবেন না সাকিব। এতগুলো ম্যাচ, খেলার জন্য বাংলাদেশকে এখন পরিকল্পনা করতে হবে।