বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার বিকালে করোনাভাইরাস টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে প্রথম পাঁচজনকে টিকা দেওয়া দেখেন তিনি। ভেরোনিকা কস্তা টিকা নিয়ে বলেন ‘জয় বাংলা’। প্রধানমন্ত্রীও তার সঙ্গে কণ্ঠ মেলান।
এরপর একে একে টিকা নেন এ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আহমেদ লুৎফুল মোবেন, স্বাস্থ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহা পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা, মতিঝিল বিভাগের ট্রাফিক পুলিশ সদস্য মো. দিদারুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম ইমরান হামিদ।টিকাদান শুরুর আগে দেওয়া বক্তব্যে দিনটিকে ঐতিহাসিক দিন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, টিকা আসা শুরু হয়েছে, আরও আসবে। এরপর সারা দেশে টিকা দেওয়া শুরু হবে, যাতে দেশের মানুষ করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষা পায়। প্রথম দিন সব মিলিয়ে মোট ২৬ জনকে টিকা দেওয়া হয়। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার পাঁচটি হাসপাতালে ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে টিকা দেওয়া হবে, সে প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে।
A woman wearing a face mask amid the coronavirus pandemic in Dhaka, Bangladesh (File image) Source: AAP Image/EPA/MONIRUL ALAM
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল এবং কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে টিকা দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় বুথ তৈরি করা হয়েছে।
বাংলাদেশে দেওয়া হচ্ছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা। সরকার সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে যে তিন কোটি ডোজ টিকা কিনছে, তার প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ সোমবার দেশে পৌঁছেছে।
এছাড়া সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত আরও ২০ লাখ ডোজ টিকা ভারত সরকারের উপহার হিসেবে পেয়েছে বাংলাদেশ। এরপর প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে বাকি আড়াই কোটি ডোজ দেশে আসার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশে যেহেতু এ টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়নি, তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী প্রথম দফায় ঢাকার পাঁচটি হাসপাতালে নির্দিষ্ট সংখ্যক ব্যক্তির উপর এ ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে তাদের পর্যবেক্ষণ করা হবে।
এছাড়া টিকা প্রয়োগের পরবর্তী পর্যবেক্ষণ ও কারো পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তাদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার ব্যবস্থা রেখেছে হাসপাতালগুলো।
সব ঠিক থাকলে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে। সরকার তিন ভাগে (ফেইজ) মোট পাঁচ ধাপে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। এর মধ্যে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সম্মুখসারিতে থাকা কর্মীদের অগ্রাধিকার দিয়ে এক কোটি ৬৯ লাখ ৩৭ হাজার ৯৭৩ জনকে প্রথম পর্যায়ে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হবে।
আরো দেখুনঃ