ব্রিটিশদের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের ট্রায়াল যদি নিরাপদ ও কার্যকর হয় তাহলে অস্ট্রেলিয়ার সবাইকে এটি বিনামূল্যে প্রদান করবে সরকার। প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এ নিয়ে একটি চুক্তি করেছেন।
মিস্টার মরিসন বলেন, অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ওষুধ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি হয়েছে। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির সঙ্গে মিলে ওষুধ কোম্পানিটি এখন ভ্যাকসিনটির স্টেজ থ্রি ট্রায়াল চালাচ্ছে।
মিস্টার মরিসন বলেন,
“অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনটি হলো বিশ্বের অন্যতম একটি অগ্রসর এবং প্রতিশ্রুতিশীল ভ্যাকসিন। আর, এই চুক্তির মাধ্যমে আমরা প্রত্যেক অস্ট্রেলিয়ানের জন্য শুরুতেই ব্যবস্থা করে রাখলাম।”
“এই ভ্যাকসিনটি যদি সফল বলে প্রমাণীত হয়, তাহলে আমরা এটি উৎপাদন করবো এবং সরাসরি এটি সরবরাহ করবো আমাদের নিজেদের চেষ্টার মাধ্যমে এবং ২৫ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ানকে এটি বিনামূল্যে প্রদান করা হবে।”
মিস্টার মরিসন স্বীকার করেন যে, এই ভ্যাকসিনটির সাফল্যের বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা দেওয়া সম্ভব নয়। তাই, সরকার ক্রমাগতভাবে অন্য পক্ষগুলোর সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছে এবং অস্ট্রেলিয়ান গবেষকদেরকেও সমর্থন যুগিয়ে যাচ্ছে।
প্যাসিফিক এবং সাউথ-ইস্ট এশিয়ার দেশগুলোকে আগে-ভাগে ভ্যাকসিন পাওয়াটা নিশ্চিত করতে অস্ট্রেলিয়া দৃঢ়প্রতীজ্ঞ।
অ্যাস্ট্রোজেনেকার সঙ্গে ‘লেটার অফ ইনটেন্ট’ এবং বেকটন ডিকিনসন-এর সঙ্গে একটি ‘নিডল অ্যান্ড সিরিঞ্জ’ চুক্তি হলো একটি ‘ন্যাশনাল কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন অ্যান্ড ট্রিটমেন্ট স্ট্রাটেজি’র অধীনে প্রথম ঘোষণা।
চূড়ান্ত আনুষ্ঠানিক চুক্তিতে বিতরণ, সময় এবং মূল্য নির্ধারণের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এই ভ্যাকসিন স্ট্রাটেজির মূল্যমান কয়েক বিলিয়ন ডলার হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যুক্তরাজ্য, ব্রাজিল এবং সাউথ আফ্রিকায় অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ট্রায়াল চলছে। আর, যুক্তরাষ্ট্রে অচিরেই, ২০২১ সালের শুরুতে ট্রায়াল চালু করার কথা রয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার মেডিকেল অ্যাডভাইজাররা প্রি-ট্রায়াল এবং ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ১৬৭ টি ভ্যাকসিন ক্যানডিডেটের ব্যাপারে সচেতন আছেন। এর মধ্যে ২৯টি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে মানুষের ওপরে।
অস্ট্রেলিয়ানরা যেন একটি ভ্যাকসিনের উপরেই তাদের সকল আশা-ভরসা না রাখে সেটা নিশ্চিত করার জন্য হেলথ ডিপার্টমেন্টের সেক্রেটারি ব্রেন্ডন মার্ফির নেতৃত্বে এক দল বিশেষজ্ঞ সমস্ত বিকল্প খতিয়ে দেখছেন।
Gavi নেতৃত্বাধীন কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটির সঙ্গেও কথা বলছে অস্ট্রেলিয়া। তারা ভ্যাকসিনগুলোর উন্নয়ন ও বিতরণের ক্ষেত্রে গতি আনার জন্য বৈশ্বিকভাবে বিভিন্ন উপায়-উপকরণ একত্রিত করে সবাই মিলে-মিশে ব্যবহার করার লক্ষ্যে কাজ করছে।
এই ফ্যাসিলিটিতে অংশ নেওয়ার জন্য একটি ‘নন-বাইন্ডিং এক্সপ্রেশন অফ ইন্টারেস্ট’ ইতোমধ্যে দাখিল করেছে সরকার।
বায়োটেকনোলজি কোম্পানি সিএমএল বলেছে, ইউনিভার্সিটি অফ কুইন্সল্যান্ডের ভ্যাকসিন প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। তবে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনকা ভ্যাকসিনের জন্য স্থানীয় উৎপাদন-সহায়তা প্রদানের জন্য, তারা অ্যাস্ট্রাজেনকা এবং ফেডারাল সরকারের সঙ্গেও আলোচনা করছে।
এক বিবৃতিতে সিএমএল বলেছে,
“বেশ কিছু টেকনিক্যাল ইস্যু আছে যেগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে এবং এসব নিয়ে আলোচনা চলছে।”অস্ট্রেলিয়ার জনগণকে অবশ্যই পরস্পরের মাঝে কমপক্ষে ১.৫ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। জন-সমাগমের সীমা সম্পর্কে জানতে আপনার রাজ্যের নিষেধাজ্ঞাগুলো দেখুন।
Source: SBS
আপনার মাঝে যদি সর্দি-কাশির (কোল্ড কিংবা ফ্লু) লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে ঘরে অবস্থান করুন এবং আপনার ডাক্তারকে কল করে কিংবা করোনাভাইরাস হেলথ ইনফরমেশন হটলাইন, 1800 020 080 নম্বরে কল করে টেস্টের ব্যবস্থা করুন।
আপনার যদি শ্বাস-কষ্ট কিংবা মেডিকেল ইমার্জেন্সি দেখা দেয়, তাহলে 000 নম্বরে কল করুন।
বাংলায় করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) বিষয়ক আমাদের সর্বশেষ আপডেটের জন্য ভিজিট করুন: