১৭ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার ছিল অস্ট্রেলিয়ার সিটিজেনশিপ ডে। এই উপলক্ষে জমে থাকা নাগরিকত্বের আবেদনগুলোর প্রতি দৃষ্টি দিতে মরিসন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সিটিজেনশিপ অ্যাডভোকেটরা (সমর্থকরা)।
সেদিন অস্ট্রেলিয়া জুড়ে ৮ হাজারেরও বেশি আবেদনকারী নাগরিকত্ব লাভ করেছেন। তবে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে দেখা যাচ্ছে, নাগরিকত্বের জন্য এখনও অপেক্ষায় রয়েছেন আরও ১৯৮ হাজার আবেদনকারী।
মাইগ্রেশন কাউন্সিল অস্ট্রেলিয়ার সিইও কার্লা উইলশায়ার এসবিএস নিউজকে বলেন, নাগরিকত্বের-আবেদন সম্প্রতি এতোটাই জমে গেছে যে ইতোপূর্বে তা কখনই দেখা যায় নি।
তিনি বলেন,
“হ্যাঁ, (এ বছর) এটি সামান্য কমেছে কিন্তু এটি গত দশকগুলোর তুলনায় এবং অস্ট্রেলিয়ার মাইগ্রেশন মডেলের তুলনায় পুরোপুরিই তাৎপর্যপূর্ণ।”“মানুষ যেভাবে অনুভব করে অস্ট্রেলিয়াকে নিজের মনে করার জন্য নাগরিকত্ব একটি মৌলিক বিষয়। আপনি যখন একটি মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম চালান তখন আমরা যা করতে চাই তা হলো, মানুষ এর সঙ্গে পুরোপুরি যুক্ত এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রতি নিবেদিত, এটা নিশ্চিত করতে চাই। তাদের জীবনে স্বল্প-মেয়াদী এবং দীর্ঘ-মেয়াদী উভয়ভাবে।”
More than 220,000 waiting for citizenship Source: AAP
নাগরিকত্ব-আবেদন প্রক্রিয়াকরণের সময়সীমা নিয়ে মিজ উইলশায়ার উদ্বেগ প্রকাশ করেন। গত কয়েক বছরে এক্ষেত্রে কিছুটা উন্নতি হলেও ডিপার্টমেন্ট অফ হোম অ্যাফেয়ার্স-এর সূত্রে জানা যায়, শতকরা ৯০ ভাগ নাগরিকত্ব-আবেদন (সিটিজেনশিপ বাই কনফেরাল)-এর প্রক্রিয়াকরণের জন্য এখনও ২৪ মাস সময় লাগে।
মিজ উইলশায়ার বলেন,
“বিভিন্নভাবেই মানুষের জীবন ব্যাহত হয় … দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষায় থাকার বিষয়টি মানুষের উপর প্রভাব ফেলে।
How long it is currently taking to process Australian citizenship by conferral. Source: Department of Home Affairs
‘৮০শতাংশবৃদ্ধিপেয়েছে’
২০১৭-২০১৮ অর্থ-বছরে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্বের অনুমোদন সংখ্যা ছিল ৮১ হাজার। এটি ছিল বিগত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। তবে এখন এ সংখ্যা বাড়ছে।
এসবিএস নিউজকে সরবরাহ করা একটি স্টেটমেন্টে ডিপার্টমেন্ট অফ হোম অ্যাফেয়ার্স বলেছে,
“পূর্ববর্তী অর্থ-বছরের তুলনায় ২০১৮-১৯ অর্থ-বছরে নাগরিকত্বের আবেদন অনুমোদনের সংখ্যা ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।”
স্টেটমেন্টটিতে বলা হয়েছে,
“২০১৮-১৯ সালে ১৪৫ হাজারের বেশি অভিবাসীর নাগরিকত্বের আবেদন (সিটিজেনশিপ বাই কনফেরাল) অনুমোদন করা হয়েছে, যা ২০১৭-১৮ অর্থ-বছরের ৮১ হাজার অনুমোদনের চেয়ে বেশি।”
“এছাড়া, অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকত্ব প্রদানের সংখ্যা ৮০ শতাংশ বৃদ্ধির পাশাপাশি আবেদনকারীর নাগরিকত্বের সাক্ষাৎকার এবং আবেদন চূড়ান্তকরণের মধ্যবর্তী সময় অর্ধেক কমিয়ে এনেছে সরকার।”
মিনিস্টার ফর ইমিগ্রেশন ডেভিড কোলম্যান একটি স্টেটমেন্টে বলেন,
“প্রোগ্রামের সবদিক ঠিক রেখে নাগরিকত্বের আবেদনগুলো যেন যতোটা সম্ভব দক্ষতার সঙ্গে সামলানো হয় তা নিশ্চিত করার জন্য গত ১২ মাস ধরে আমি কাজ করছি।”
“আমাদের বিভিন্ন ব্যবস্থাপনা এবং কর্মীদের জন্য ৯ মিলিয়ন ডলার আমরা বিনিয়োগ করেছি এবং বিভিন্ন জটিল কেসগুলোর প্রতি মনোযোগ দেওয়ার জন্য আমরা একটি টাস্ক ফোর্স প্রতিষ্ঠা করেছি। এছাড়া, আবেদনকারীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ এবং সিটিজেনশিপ টেস্টের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্টের সংখ্যাও বৃদ্ধি করেছি,” বলেন তিনি।ফেডারাল সরকারের সূত্রে জানা যায়, অস্ট্রেলিয়ান সিটিজেনশিপ ডে-তে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্বের গুরুত্ব তুলে ধরা হয় এবং এই দিনে নতুন নাগরিকদেরকে স্বাগত জানানো হয় ও দেশ জুড়ে বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
David Coleman wants to ramp up the number of working holiday makers in Australia. Source: AAP
গত মঙ্গলবার ১৩০টি জাতির ৮ হাজারেরও বেশি আবেদনকারী অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব লাভ করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত ১৯৪৯ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়ায় ৫ মিলিয়নেরও বেশি নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়েছে।