‘প্রাসঙ্গিক ভাবনা’য় এসবিএস বাংলার সঙ্গে কথা বলেছেন আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়ার সাধারণ সম্পাদক, অস্ট্রেলিয়ার লেবার দলের সক্রিয় সদস্য, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. আবুল হাসনাত মিল্টন।
অস্ট্রেলিয়ার মূলধারার রাজনীতিতে বাংলাদেশী অস্ট্রেলিয়ানদের অংশগ্রহণ সম্পর্কে তিনি বলেন,
“এটা খু্বই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়।”
“যারা বাংলাদেশী-অস্ট্রেলিয়ান হিসেবে এখানে বসবাস করছেন, আমার ধারণা, আমি নিজেও করি, নিজেও অস্ট্রেলিয়ান লেবার পার্টির একজন সক্রিয় সদস্য, নিউ ক্যাসলে। আমার ধারণা যে, এটা খুব জরুরী এবং এর ফলে যেটা হয় যে, আমরা মূলধারার রাজনীতিতে থেকে, আমরা অস্ট্রেলিয়ার মূলধারায় অনেক কিছু কন্ট্রিবিউট করতে পারি।”
“অস্ট্রেলিয়া বা যে দেশেই আমরা প্রবাসে থাকি, সুযোগ থাকলে আমাদের মূল ধারার রাজনীতিতে আসা উচিত।”
“আমরা যারা বাংলাদেশী এখানে আছি, যারা অনেক ইন্টেলেকচুয়াল, যোগ্য, সামাজিক, তাদের আমি খুব বেশি অস্ট্রেলিয়ান পলিটিক্সে ইনভলভ হতে দেখি না। কিন্তু, অস্ট্রেলিয়ান পলিটিক্সে বাংলাদেশকে, বাংলাদেশী কমিউনিটিকে রিপ্রেজেন্ট করতে গিয়ে এমন অনেকেই রাজনীতিতে জড়িয়ে যাচ্ছেন, গণতান্ত্রিক দেশে এটা তার অধিকার, তাদের যে পারফরমেন্স, তাদের পুওর পারফরমেন্স কিন্ত আমাদের দেশের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণাও অনেক সময় দেয়।”
“আপনি যদি সিডনিতে দেখেন, আমাদের অনেক কয়জন কাউন্সিলর আছেন। আমাদের হুদা ভাই আছেন, প্রিয় টিটু ভাই আছেন, মাসুদ চৌধুরী আছেন, সুমন আছেন। এরা কিন্তু আমাদের দেশটাকে পজিটিভলি রিপ্রেজেন্ট করতেছে। এটা একদিকে আনন্দের বিষয়।”
“কিন্তু আবার কিছু লোক দেখি বাংলাদেশের, যারা ঠিকমতো বাংলাই বলতে পারে না, কথা বলতে পারে না। তারা আবার এসব রাজনীতিতে আসে। তারা কিন্তু আবার বাংলাদেশ সম্পর্কে একটা নেতিবাচক ধারণা দেয়।”
“যারা যোগ্য, যারা মোর কোয়ালিফায়েড, তাদের রাজনীতিতে আসা উচিত।”
পরবর্তী প্রজন্মের বাংলাদেশী অস্ট্রেলিয়ানদের সম্পর্কে ড. মিল্টন বলেন,
“সমস্যাটা আমাদের। দ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে আমরা, এক পা বাংলাদেশে, এক পা অস্ট্রেলিয়া, এই দ্বিধা নিয়েই আছি। কিন্তু, পরবর্তী প্রজন্মের তেমন কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।”
আগামী বিশ বছরের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার ফেডারাল পার্লামেন্টে বাংলাদেশী সদস্য গেলে তিনি অবাক হবেন না, বলেন তিনি।
ড. মিল্টন অস্ট্রেলিয়ায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বাংলাদেশের রাজনীতি অস্ট্রেলিয়ায় করার উপযোগিতা কতোটুকু? এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
“আমাদের বাংলাদেশের যে আরপিও আছে, যে জনপ্রতিনিধিত্বমূলক অধ্যাদেশ আছে, এখানে স্পষ্টভাবে লেখা আছে যে, বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলের বিদেশে কোনো শাখা থাকতে পারবে না। সুতরাং, এই জায়গাটা খুব স্পষ্ট যে, আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের শাখা নই। তাহলে আমরা কী? আমাদের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংবিধানে (গঠনতন্ত্রে) লেখা আছে যে, বিদেশে বিভিন্ন দেশে তাদের সমর্থক-গোষ্ঠী তাদের আদর্শের প্রতি যারা বিশ্বাস করে, তাদের যদি কোনো সংগঠন স্থানীয় নিয়ম মেনে থাকে, তাহলে তাদের সাথে একটা সম্পর্ক থাকবে।”
আমরা অস্ট্রেলিয়ান আওয়ামী লীগ, অস্ট্রেলিয়ার একটা সংগঠন। আমরা বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যে রাজনৈতিক লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, আদর্শ সেটা আমরা বিশ্বাস করি, সেটা আমরা সমর্থন করি। এই জায়গা থেকে আমরা অস্ট্রেলিয়ায় থেকে আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিটাকে অস্ট্রেলিয়ান কনটেক্সট-এ এমনভাবে ধারণ করি, যেটা বাংলাদেশের জন্য উপকার বয়ে আনবে।
“আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, আরও বড় অর্থে বাংলাদেশকে কন্ট্রিবিউট করার জন্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কিছু সৈনিক এখানে একটা সংগঠন করেছি যেটার নাম অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগ।”
“এটা অস্ট্রেলিয়ান আইনের আওতায় এবং আমরা প্রচলিত যে প্রবাসের রাজনীতি বলতে একটা খুব নেগেটিভ ধারণা আছে, যেমন, মন্ত্রী-এমপি আসলে এয়ারপোর্টে ছুটে যাওয়া বা এর-ওর সাথে পরিচয়ের মাধ্যমে তদ্বির করা, ধান্ধাবাজি করা- এ রকম একটা নেগেটিভ-নেতিবাচক ধারণা কিন্তু প্রবাসে রাজনীতি সম্পর্কে হয়েছে, কিছু কিছু নেতা-কর্মীর কর্মকাণ্ডে।”
“আমরা সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসার জন্যই আমরা একটা ধারা তৈরি করছি, যে ধারার মধ্য দিয়ে আমরা যখনই সুযোগ পাই, আমরা অস্ট্রেলিয়ার মূল ধারায় বাংলাদেশকে প্রমোট করি।”
ড. আবুল হাসনাত মিল্টনের সাক্ষাৎকারটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।