বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭০ সালে রিপাবলিক অব কঙ্গো-তে প্রথম মাঙ্কিপক্স সনাক্ত হয় নয় বছর বয়সী এক শিশুর দেহে। তার মাত্র দুই বছর আগেই ঐ এলাকা থেকে স্মলপক্স নির্মূল করা হয়েছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন এ রোগ সাধারণত ‘ক্লোজ-কন্টাক্ট’এর মাধ্যমে ছড়ায়, তাই সাধারণ জনগণের আতঙ্কিত হবার এখনই কোনও কারণ নেই।
মাঙ্কিপক্স বিষয়ে সাধারণ তথ্য ও সাবধানতা নিয়ে জানতে এসবিএস বাংলা আলাপ করেছে নিউ সাউথ ওয়েলসে জিপি হিসেবে কর্মরত ড: চিত্রা দাশ-এর সঙ্গে।মাঙ্কিপক্স কী এবং কীভাবে হয়?
Dr Chitra Das, GP Consultant, NSW Source: Dr Chitra Das
মাঙ্কিপক্স মূলত একটি ভাইরাস-বাহিত রোগ। এটি সাধারণত কোনও পশুর দেহ থেকে ভাইরাসের মাধ্যমে মানুষের দেহে ছড়ায়।
মানুষ থেকে মানুষেও এটি ছড়াতে পারে, তবে তা সাধারণ মেলামেশার মাধ্যমে সহজে ছড়ায় না। এটি মূলত ‘ক্লোজ-কন্টাক্ট’-এর মাধ্যমে ছড়াতে পারে।
এই রোগ কি প্রাণঘাতী?
এই মুহুর্তে মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকায় এই ভাইরাসের দু’টি স্ট্রেইন সক্রিয় রয়েছে, যার একটি বেশ ক্ষতিকর। তবে বহির্বিশ্বে যেটি ছড়াচ্ছে তা কম প্রাণঘাতী।
ড: চিত্রা বলেন, এই ভাইরাসটি আসলে স্মলপক্সের ভাইরাসের সাথে সম্পর্কিত। তবে এটি স্মলপক্সের মত প্রাণঘাতী বলে এখনও প্রমাণিত হয়নি, এবং এর সংক্রমণও স্মলপক্সের তুলনায় কম।
READ MORE
নতুন এসবিএস রেডিও অ্যাপ ডাউনলোড করুন
মাঙ্কিপক্স নিয়ে অস্ট্রেলিয়ানদের উদ্বিগ্ন হবার কারণ আছে কি?
বিশেষজ্ঞদের মতে, জনসাধারণের মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার হার অনেক কম, তাই এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
তবে, যেহেতু এই রোগ নিয়ে আমাদের শরীরে স্বাভাবিক রোগপ্রতিরোধক ক্ষমতা নেই, তাই খুব বেশি ছড়ানোর আশঙ্কা না থাকলেও এটি নিয়ে জানা থাকা এবং সতর্ক থাকা জরুরী।
ড: চিত্রা জানান, এ রোগের বিষয়ে গবেষণা এখনও শেষ হয়নি। যেহেতু কিছু দেশে এখন এটি ছড়াচ্ছে, এবং আন্তর্জাতিক ভ্রমণের মাধ্যমে এটি অস্ট্রেলিয়ায়ও আরও বেশি চলে আসতে পারে, তাই এটি নিয়ে আমাদের সতর্ক থাকা উচিৎ।
কোনও প্রতিষেধক কি আছে?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, বেশ কিছু ক্ষেত্রে স্মলপক্সের জন্যে ব্যবহৃত ভ্যাকসিনই এখন ব্যবহার করা হচ্ছে।
তবে সেই সাথে নতুন ভ্যাকসিনের জন্যে গবেষণা ও তৈরির কাজও চলছে। ফ্রান্স ও ডেনমার্ক ভাইরাসের ‘ক্লোজ-কন্টাক্ট’দের টীকা দেয়ার কাজ শুরু করেছে। জার্মানীও সেই পথে এগোচ্ছে।
তবে অস্ট্রেলিয়ায় এই মুহুর্তে মাঙ্কিপক্সের ভ্যাকসিন বিষয়ক কোনও নীতিমালা নেই।
উপসর্গগুলো কী কী এবং কীভাবে সাবধান থাকা যায়?
এই রোগের প্রাথমিক উপসর্গ হচ্ছে উচ্চতাপমাত্রার জ্বর, মাথাব্যথা, শরীরের বিভিন্ন পেশীতে ব্যথা করা এবং শরীরে নানা রকম ছোট ছোট র্যাশ দেখা যেতে পারে।
ড: চিত্রা বলেন, আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে এবং কিছু উপসর্গের দিকে লক্ষ রাখতে হবে। যেমন: কারও যদি জ্বর, মাথাব্যথা বা এরকম কোনও উপসর্গ দেখা দেয়, এবং একই সাথে শরীরে র্যাশ দেখা দেয়, সে ক্ষেত্রে অতি সত্ত্বর ডাক্তারের কাছ থেকে পরামর্শ নেয়া উচিৎ।
ড: চিত্রা দাশের সাথে সম্পূর্ণ আলাপটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ার বাটনে ক্লিক করুন।
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত।