অস্ট্রেলিয়ার এক চতুর্থাংশ দক্ষ অভিবাসী ভিন্ন পেশায় কাজ করছে, প্রভাব পড়ছে দক্ষ জনশক্তির অর্থনীতিতে

Vijesh Cheruvathur is an IT specialist - but can't get work in his field in Australia

Vijesh Cheruvathur is an IT specialist - but can't get work in his field in Australia Source: SBS

প্রায় এক চতুর্থাংশ দক্ষ অভিবাসী যারা স্থায়ীভাবে অস্ট্রেলিয়ায় আছেন তারা বর্তমানে যে পদে কাজ করছেন তার চেয়ে তাদের দক্ষতা বেশি- স্বাভাবিকভাবেই এটি অস্ট্রেলিয়ার দক্ষ জনশক্তির অর্থনীতিকে বঞ্চিত করছে। একটি নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত প্রতি চার জনের মধ্যে একজন দক্ষ অভিবাসী তাদের বর্তমান কাজের জন্য অধিকতর যোগ্য।


অস্ট্রেলিয়ার ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কমিটি রিপোর্টে অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী দক্ষ অভিবাসীদের প্রায় ২৩ শতাংশ - বা প্রায় ৩৪,০০০ লোক - যে চাকরিতে কর্মরত তা তাদের দক্ষতার স্তরের নীচে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

প্রতিবেদনে এর সাধারণ কারণ হিসাবে যেগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে তার মধ্যে আছে, অস্ট্রেলিয়ায় কাজের অভিজ্ঞতার অভাব, পাশাপাশি স্থানীয় নেটওয়ার্কগুলিতে অ্যাক্সেস বা প্রবেশের সুযোগ না পাওয়া, তার ওপর ভাষাগত বাধা।

দেখা গেছে যে হিসাবরক্ষক, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এবং শেফ যারা অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন তাদের মধ্যে পছন্দের পেশায় কাজ খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
প্রতিবেদনে দক্ষ অভিবাসীদের মধ্যে অনেককেই চাকরি না পেয়ে ট্যাক্সি চালনার কাজ করতে হচ্ছে কারণ তারা তাদের পেশায় কাজ খুঁজে পাচ্ছেন না।

সি-ই-ডি-এ'র প্রধান নির্বাহী মেলিন্ডা সিলেন্টো বলেন যে অস্ট্রেলিয়ার দক্ষ অভিবাসন ব্যবস্থা দেশের উপকার করেছে, তবে এমন কিছু ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে বিশেষত করোনভাইরাস মন্দা থেকে বেরিয়ে আসার লড়াইয়ে দেশকে আরো উন্নততর কিছু করতে হবে।

তিনি বলেন, “কভিড -১৯ সমস্যা থেকে বের হয়ে যাবার সাথে সাথে আমাদের একটি দক্ষ মাইগ্রেশন সিস্টেমের দরকার যা অর্থনীতির জন্য হবে চটপটে এবং কার্যকরী।”

"আন্তর্জাতিক সীমান্ত বন্ধ থাকার কারণে দক্ষতার ঘাটতি সম্পর্কে আমাদের সদস্যদের কাছ থেকে আমরা ইতিমধ্যে বেশ উদ্বেগের কথা শুনে আসছি, এবং সেই সাথে তারা ডিজিটাল এবং ডাটা প্রযুক্তির সুযোগসহ অর্থনীতির বিকাশ এবং বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ কর্মী নিয়োগ দিতে পারছে না।"

দক্ষ কর্মীরা কীভাবে বেশি দক্ষতা থাকার পরও কম দক্ষতার চাকরি করছেন এবং মজুরি হারাচ্ছেন তা অনুধাবন করতে প্রতিবেদনটি স্বরাষ্ট্র বিভাগের তথ্য বিশ্লেষণ করে।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে ২০১৩ থেকে ২০১৮-এর মধ্যে অর্থনীতির সব ক্ষেত্রেই, এই বৈষম্য অভিবাসী কর্মীদের কমপক্ষে ১.২৫ বিলিয়ন ডলার মজুরি থেকে বঞ্চিত করেছে।

ভিজেস চেরুভাথুর ভারত থেকে আগত একজন আইটি বিশেষজ্ঞ এবং তার রয়েছে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা। এছাড়া তার এমবিএ, কম্পিউটার সাইন্স ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী আছে, তিনি ইউরোপ, এশিয়া, এবং মিডল ইস্ট-এও কাজ করেছেন। কিন্তু এখনো একটি উপযুক্ত কাজ পাননি।

তিনি দু'বছর আগে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছিলেন, কিন্তু কয়েক মাস চেষ্টা করেছেন কাজ পেতে কিন্তু হতাশার সাথে এবং বাঁচতে যা কাজ পেয়েছেন তাই করেছেন।

কোভিড ১৯-এর মধ্যে তার কাজ খোঁজার সংগ্রাম আরো বেড়েছে, আর এক্ষেত্রে তিনি একাই ভুক্তভোগী নন। 

নাইশাদ গাদানী একজন ক্যারিয়ার কোচ এবং গত ১৩ বছরে ৫০০ অভিবাসীকে তাদের ক্ষেত্রে কাজ পেতে সাহায্য করেছেন।

তিনি বলেন, কাজ পেতে বড় সমস্যা হচ্ছে স্থানীয়ভাবে কাজের অভিজ্ঞতার অভাব।

তিনি অনলাইন পোর্টালের বিষয়টি সমর্থন করলেও বলেন যে কর্মক্ষেত্রে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনও প্রয়োজন। 

তবে মিঃ  চেরুভাথুর আশাবাদী - যেহেতু প্রাদুর্ভাব থেকে দেশ বেরিয়ে আসছে তাই তার সুযোগও বাড়বে বলে তিনি মনে করেন।

পুরো প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে ওপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন

 শুনুন প্রতি সোমবার এবং শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় এবং আরও খবরের জন্য আমাদের  ভিজিট করুন। 

আরো দেখুনঃ



 


Share