কোভিড-১৯ হেলথ মেসেজ কি সহজে বোঝা যায়?

Syringe needle and vaccine in the hands of a nurse. Preparation of coronavirus vaccine for senior

Doctor or nurse in a laboratory preparing a vaccine for senior Asian people. Source: iStockphoto

কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর সময়ে গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য বার্তাগুলো অনুধাবন করতে সংগ্রামে লিপ্ত হতে হচ্ছে মানুষকে। একটি জাতীয় লিটারেসি হটলাইনে এ সময়ে কলের সংখ্যা হঠাৎ করে অনেক বেড়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি ব্যাপক আকারের সমস্যার একটি অংশ মাত্র। স্বাস্থ্য বিষয়ক ও অন্যান্য সরকারী তথ্যাবলী যেভাবে উপস্থাপন করা হয়, সেগুলো অনেকের জন্যই সংগ্রহ করা, অনুধাবন করা কিংবা অনুবাদ করা কঠিন হয়ে পড়ে।


অস্ট্রেলিয়ায় বহু লোক আছে যারা মনে করে মানুষ পাবলিক হেলথ মেসেজগুলো সহজেই বুঝতে পারবেন। কিন্তু, স্বল্প-শিক্ষিত এমন লক্ষ লক্ষ মানুষ আছেন, যাদের জন্য এসব মেসেজ পড়ে অর্থ বুঝতে পারাটা নিত্যদিনের সংগ্রামের বিষয়।

রিডিং রাইটিং হটলাইন-এর ম্যানেজার ভেনেসা আইলস বলেন, কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর সময়ে একটি উদ্বেগজনক সংখ্যক মানুষ এই হটলাইনে কল করেছেন। কারণ, তারা স্বাস্থ্য বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলীর অর্থ বুঝতে পারছিলেন না এবং এজন্য সাহায্য চাওয়ার জন্য কোথায় যোগাযোগ করতে হবে, সেটাও তারা জানতেন না।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য বিষয়ক বেশিরভাগ মেসেজ বা বার্তা লেখা হয় অ্যাডভান্সড লেভেলের ভাষা ব্যবহার করে। অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় ৪৪ শতাংশ প্রাপ্ত-বয়স্ক লোকের জন্য এগুলো অনুধাবন করাটা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে।

ইউনিভার্সিটি অফ নিউ সাউথ ওয়েলসের ইনফেকশাস ডিজিজ সোশাল সায়েন্টিস্ট হিসেবে কাজ করেন অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর হোলি সিল।

তিনি বলেন, ২০২০ সালের শুরুর দিকে স্টেট ও ফেডারাল ওয়েবসাইটগুলোতে করোনাভাইরাস সম্পর্কিত তথ্যাবলীর মান এবং সেগুলোর নাগাল পাওয়ার বিষয় নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছিল।

স্টেট ও টেরিটোরিগুলোতে করোনাভাইরাস বিষয়ক নিষেধাজ্ঞাগুলোর মাঝে ভিন্নতা থাকার কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করে।

অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর সিল বলেন, তথ্যের নাগাল পেতে ব্যর্থ হলে মানুষ বিব্রত কিংবা হতাশ হয়। আর, এর ফলে তারা সরকার বা তথ্যদাতার ওপর থেকে আস্থা হারায়।

ভেনেসা আইলস বলেন, রিডিং রাইটিং হটলাইনের বহু ব্যবহারকারীর এ রকম অভিজ্ঞতা আছে।

ভেনেসা আইলস বলেন, তথ্যাবলী সুচিন্তিতভাবে জটিল করে লেখা হয় না। আসলে সমস্যা হলো, যারা এগুলো লিখেন, প্রায় ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, তারা অনেক বেশি শিক্ষিত। সহজে বোঝা যায় এ রকম মেসেজ লিখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি বলেন, এর পরে সেই লেখাটি স্বল্প-শিক্ষিত লোকদেরকে পড়তে দিতে হবে এবং দেখতে হবে যে, তারা এর মানে বুঝতে পারে কিনা।

ফেডারাল ডিপার্টমেন্ট অফ হেলথ এর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভ্যাকসিন রোল-আউট বা টিকাদান কর্মসূচি বিষয়ক যোগাযোগ যেন যথাযথ ও কার্যকরী হয়, সেটা নিশ্চিত করার জন্য কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর পুরোটা সময় জুড়ে তারা সক্রিয়ভাবে বিভিন্ন জনগোষ্ঠী ও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে ফেডারাল সরকার অ্যাবোরিজিনাল ও টরে স্ট্রেইট আইল্যান্ডার জনগোষ্ঠীগুলোর জন্য সুনির্দিষ্ট টিকাকরণ তথ্যাবলী প্রস্তুত করছে।

অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর হোলি সিল বলেন, প্যান্ডেমিকের শুরুর দিকের তুলনায় সরকারের যোগাযোগের মান এখন ভাল হলেও এখনও উন্নতির অনেক সুযোগ রয়েছে।

তিনি বলেন, ২০২২ সালেও কোভিড-১৯ থাকবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিও আমাদের জন্য বড় হুমকি হিসেবে দেখা দিবে। তাই, ইমার্জেন্সি কমিউনিকেশন বা জরুরি যোগাযোগ ব্যবস্থার এখনই উন্নয়ন করা দরকার।

প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।

Follow SBS Bangla on .

Share