এসবিএস বাংলা মি. ম্যালকমের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছে, কিন্তু শারীরিক দুর্বলতার কারণে তিনি তেমন কিছু বলতে পারেননি।
তবে আমরা কথা বলেছি তার স্ত্রী হালিমা খাতুনের সাথে। জিজ্ঞাসা করেছিলাম তিনি কেমন আছেন?
তিনি বলেন, শুরুতে মিজ হালিমা যথেষ্ট স্বচ্ছল না হলেও মি. ম্যালকমের কোন আর্থিক সমস্যা ছিল না। কিন্তু জীবন সায়াহ্নে এসে মানবেতর পরিস্থিতির মুখোমুখি এই দম্পত্তি।
ম্যালকম অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। কিন্তু তিনি কেন অস্ট্রেলিয়া ফিরে আসছেন না ?
এর উত্তরে মিজ হালিমা বলেন, তিনি আমাকে রেখে অস্ট্রেলিয়া যাবেন না, তাছাড়া সেখানে তার কোনো সম্পত্তি নেই। সেখানে গেলে কে দেখবে তাদের।
বাংলাদেশের অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশন বা অন্য কোন তরফ থেকে কোন সাহায্য পেয়েছেন কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোতে তার দুরাবস্থার কথা প্রকাশ পেলেও তেমন সাহায্য তারা পাননি।
"হাই কমিশন থেকে শুধু কোভিড টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে," বলেন তিনি।
এসবিএস বাংলাকে হালিমা বলেন, স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পর মোংলায় ওয়ার্ল্ড ভিশনের হয়ে কাজ করতেন তিনি। সে সূত্রে ২০০১ সালে ম্যালকমের সাথে মোংলায় তার সঙ্গে পরিচয় হয়। হালিমা বলেন, আমাদের বিয়ে হয় ২০০৪ সালে। সেই থেকে উনি আমার জন্যে বাংলাদেশে আছেন।
সেসময় ম্যালকম আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ছিলেন বলে জানান হালিমা।
হালিমা জানান, ম্যালকম একজন পেশাদার চিত্রশিল্পী। তবে স্ট্রোক, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতার কারণে এখন কোনো কাজ করতে পারেন না। তাছাড়া তিনি কারো সাহায্য ছাড়া চলাফেরাও করতে পারেন না।
ম্যালকমের জন্য ওষুধ কিনতে প্রতি মাসে ৬-৭ হাজার টাকা ব্যয় হয় বলে জানান হালিমা, কিন্তু এই পরিমান টাকা খরচের সামর্থ্য এখন তাদের নেই, এমনকি ঘর ভাড়াও বকেয়া পড়ে গেছে তাদের।
বাংলাদেশ ফোরাম ফর অস্ট্রেলিয়া ম্যালকমকে সহায়তা করতে এগিয়ে এসেছে।
সংগঠনের নির্বাহী কমিটির একজন সদস্য এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রকাশিত পত্রিকা 'বাংলা কথা'র নির্বাহী সম্পাদক আউয়াল খানের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করে এসবিএস বাংলা।
আউয়াল খান ম্যালকমকে সাহায্য করা যায় কিনা সে বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন।
তিনি বলেন,বাংলাদেশের গণমাধ্যমে মি. ম্যালকমের দুরবস্থার কথা জেনে তিনি তার সম্বন্ধে জানতে জানতে পারেন।
তাকে সাহায্য করার বিষয়ে তিনি বাংলাদেশ ফোরাম ফর অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি হোসেন মোহাম্মদ মহসিন এবং সাধারণ সম্পাদক আশিক আহমেদ সোহরাবের সাথে আলোচনা করলে তাদের সংগঠন মি. ম্যালকমের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে উদ্যোগী হয়।
"এর ধারাবাহিকতায় ম্যালকমকে সাহায্য করতে একটি পোস্ট করা হয়, এবং এতে বেশ কিছু সাড়া পাওয়া যায়। কিন্তু ওই সময়ে বাংলাদেশে বন্যা এবং কোরবানির ঈদের প্রস্তুতি চলছিল, এতে উদ্যোগটি আপাতত এগুতে পারে নি। তবে আমরা আবার বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি," বলেন মি. খান।
তিনি বলেন, তহবিল সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে, ব্যক্তি ও কমিউনিটি সংগঠনগুলোর সহায়তায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
পুরো সাক্ষাৎকারটি শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন।