গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো
- শিশুদের মাঝে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের উচ্চ সংক্রমণ হার রয়েছে বলে কেউ কেউ উদ্বিগ্ন
- বিশেষজ্ঞরা বলেন শিশুদের মাঝে কোভিড-এর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব সম্পর্কে বলার মতো পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত এখনও পাওয়া যায় নি
- থেরাপিউটিক গুডস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন শুধুমাত্র ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ফাইজার ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছে
বেশিরভাগ শিশুই যেখানে টিকাগ্রহণের জন্য উপযুক্ত নয়, সেক্ষেত্রে তাদেরকে কীভাবে সুরক্ষা দেওয়া যাবে?
কোভিড-১৯ প্রথমে আবির্ভূত হওয়ার পর, শিশুদের ওপর এর প্রভাব নিয়ে খুব বেশি উদ্বেগ ছিল না। কিন্তু, কুইন্সল্যান্ডের সাম্প্রতিক প্রাদূর্ভাবে দেখা যায়, বেশিরভাগ সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে স্কুল-শিক্ষার্থীদের মাঝে। শিশুদের মাঝে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের উচ্চ সংক্রমণ হার রয়েছে বলে কেউ কেউ উদ্বিগ্ন।
শিশুদের মাঝে বেশি সংক্রমণ থেকে কি এটা বলা যায় যে, তারা বেশি ঝুঁকির মাঝে আছে?
ইউনিভার্সিটি অফ মেলবোর্নের চাইল্ড অ্যান্ড অ্যাডলোসেন্ট হেলথ পি-এইচ-ডি প্রোগ্রামের ডাইরেক্টর, প্রফেসর ফিওনা রাসেল অবশ্য এ রকমটি মনে করেন না। তিনি বলেন, যে-কারও ক্ষেত্রেই এটি অনেক সংক্রামক।
ডোহার্টি ইনস্টিটিউটের এপিডেমিওলজির ডাইরেক্টর, প্রফেসর জোডি ম্যাক’ভার্নন বলেন, শিশুদের সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও ২০ থেকে ৩৯ বছর বয়সীরাই মূলত সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। তিনি বলেন, বিশ্বের কোনো কোনো অংশে সংক্রমণের ক্ষেত্রে একটি বড় অংশই শিশু। কারণ, বয়স্কদের ক্ষেত্রে সাফল্যের সঙ্গে টিকাদান কর্মসূচি পরিচালিত হয়েছে।
শিশুরা যদি করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা সংক্রমিত হয়, তাহলে তার দীর্ঘ-মেয়াদী প্রভাব কী?
বিশেষজ্ঞরা বলেন, শিশুদের মাঝে কোভিড-এর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব সম্পর্কে বলার মতো পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত এখনও পাওয়া যায় নি।
তবে, এই অসুস্থতার তীব্রতা সম্পর্কে বিদেশ থেকে কিছু কিছু ঘটনা জানা যায়।
প্রফেসর ফিওনা রাসেল বলেন, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার সত্ত্বেও, এটি অত্যন্ত বিরল ঘটনা যে, শিশুরা কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে গেছে, কিংবা মারা গেছে; বিশেষত, যদি না তাদের মাঝে অন্য কোনো স্বাস্থ্য-সমস্যা থাকে।
তাহলে বাবা-মায়েরা কোন বিষয়ের প্রতি নজর দিবেন?
পার্থ চিলড্রেন্স হসপিটালের পেডিয়াট্রিক ইনফেকশন্স ডিজিজ এবং টেলেথন কিডস ইনস্টিটিউটের ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইনফেকশন্স ডিজিজের হেড, ড. আশা বোয়েন বলেন, জ্বর এবং গলায় প্রদাহ সবার জন্যই এখনও কোভিডের লক্ষণ।
তিনি আরও বলেন, শিশুদের সার্বিক কল্যাণের স্বার্থে, সংক্রমণ ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষা করে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
প্রফেসর ফিওনা রাসেল এর সঙ্গে একমত পোষণ করেন।
ড. আশা বোয়েন বলেন, একটি বহুস্তর-বিশিষ্টি রোগ নিরাময় পরিকল্পনার মাধ্যমে স্কুল বন্ধ করা রোধ করা যায়। এটি অনেকটা ট্রাফিক লাইট নিয়ন্ত্রণ করার মতো, কমিউনিটি সংক্রমণের তীব্রতা অনুসারে যা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
ড. বোয়েন আরও বলেন, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অন্যান্য স্কুল-কর্মীদেরকেও টিকাদানের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
প্রফেসর ফিওনা রাসেল তার সঙ্গে একমত পোষণ করেন।
শিশুদেরকে টিকাদানের বিষয়ে কী হবে?
এখন পর্যন্ত, থেরাপিউটিক গুডস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন শুধুমাত্র ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ফাইজার ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছে।
আর, এ সুযোগ শুধুমাত্র সে-সব শিশুর জন্য, যাদের স্বাস্থ্য সমস্যা আছে, যেমন হাঁপানি কিংবা মৃগী রোগ। এ ধরনের কম রোগ-প্রতিরোধ-ক্ষমতা-সম্পন্ন শিশু, স্থানীয় আদিবাসী কিংবা প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী শিশুরা বর্তমানে টিকাদান কর্মসূচির ফেজ 1b এর অধীনে টিকা লাভের উপযুক্ত।
আর, এই বয়স-সীমার কম-বয়সী শিশুদের সম্পর্কে প্রফেসর ফিওনা রাসেল বলেন, ১২ বছরের নিচের শিশুদের জন্য এখনও টিকা-প্রদানের সুযোগ নেই।
অস্ট্রেলিয়ার চিফ মেডিকেল অফিসার পল কেলি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদেরকে টিকা প্রদানের বর্তমান স্ট্রাটেজিটি সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন করা হতে পারে।
তবে, প্রফেসর জোডি ম্যাকভার্নন বলেন, এখন মডেলিং থেকে দেখা যাচ্ছে যে, সংক্রমণ হ্রাসের ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সী সকল শিশুকে টিকাদানের বিষয়টি কার্যকর উপায় নয়।
তিনি বলেন, অভিভাবকদেরকে টিকা দেওয়া হলে শিশুরা বেশি সুরক্ষিত থাকবে। এসব অভিভাবকদের বয়স বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ২০ থেকে ৩৯ বছরের মধ্যে। এদের দ্বারাই ভাইরাসটি বেশি ছড়াচ্ছে।
প্রফেসর ফিওনা রাসেল বলেন, এই স্ট্রাটেজিটি ইসরায়েলে ফাইজারের ওপর পরিচালিত গবেষণা এবং যুক্তরাজ্যে অ্যাস্ট্রাজেনিকার ওপর পরিচালিত গবেষণা থেকে প্রাপ্ত।
আপনার ভাষায় কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারী নিয়ে বর্তমানে যেসব স্বাস্থ্য-সেবা ও সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে তা জানতে ভিজিট করুন
প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
আরও দেখুন: