একজন সাবেক কঙ্গোলিজ শরণার্থী ব্লেইজ ইটাবেলও যিনি পরবর্তীকালে মাইগ্রেশন এজেন্ট হিসেবে কাজ করছেন, তিনি মনে করেন, কোন প্রার্থীর ইংরেজিতে বুৎপত্তি থাকা এবং নিজে নিজে ভিসার আবেদন দাখিল করতে পারার দক্ষতা থাকার পরেও একজন রেজিস্টার্ড মাইগ্রেশন এজেন্টের সহায়তা নেয়ার উপকারিতা আছে।
রেফিউজি এডভাইজ এন্ড কেসওয়ার্ক সার্ভিস বা RACS আর্থিকভাবে অসচ্ছল এবং ক্ষতিগ্রস্ত আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য কোন চার্জ ছাড়াই আইনগত পরামর্শ, সহায়তা এবং প্রতিনিধিত্ব করছে। এর প্রিন্সিপাল সলিসিটর এবং সেন্টার ম্যানেজার সারাহ ডেল বলেন, যদি কোন ভিসাপ্রার্থীর আবেদন খারিজ হয়ে যায়, তখন চূড়ান্ত ফলাফলের আগে ওই প্রার্থীকে বেশ কিছু প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।
তিনি মনে করেন, তখন আশ্রয়প্রার্থীকে জটিল আইনি প্রক্রিয়ার জন্য তার লিগ্যাল রিপ্রেজেন্টেনশনের প্রয়োজন হয়ে পরে।
অস্ট্রেলিয়ায় রেজিস্টার্ড মাইগ্রেশন এজেন্টদের সংখ্যা ৩১শে ডিসেম্বর, ২০১৯ পর্যন্ত ৭২৪৯, যার মধ্যে শতকরা ৩০ ভাগ লিগ্যাল প্র্যাক্টিশনার।
এই রেজিস্টার্ড মাইগ্রেশন এজেন্টরা ডিপার্টমেন্ট অফ হোম এফেয়ার্সের অধীনে OMARA বা অফিস অফ দা মাইগ্রেশন এজেন্টস রেজিস্ট্রেশন অথরিটি দ্বারা আইনগতভাবে নিয়ন্ত্রিত।
সাম্প্রতিক সময়ে মাইগ্রেশন বিলে একটি পরিবর্তন এসেছে তাতে অভিবাসন সম্পর্কিত আইনি সহায়তা দিতে লিগ্যাল প্র্যাক্টিশনারদের মাইগ্রেশন এজেন্টের রেজিস্ট্রেশনের প্রয়োজন নেই।
রেজিস্টার্ড মাইগ্রেশন এজেন্ট জোহানা নানাতো বলেন, রেজিস্ট্রেশন নেই এমন এজেন্টরা OMARA'র নিয়ম-কানুন মানতে বাধ্য নয়।
এই বিষয়ে নানাতো একটি বিদেশী এডুকেশন কন্সাল্ট্যান্টের প্রসঙ্গ টানেন যাদের কাছে বিদেশী নার্সদের একটি গ্রুপ অভিবাসন সহায়তা চেয়েছিলো।
এদিকে অনেক অবৈধ এজেন্ট আছে যারা অস্ট্রেলিয়ায় চাকরির গ্যারান্টি দিচ্ছে ।
ডেল রেজিস্টার্ড এজেন্টগুলোর সাথে মাইগ্রেশন সার্ভিসের জন্য যে চার্জ ধরা হয় সে বিষয়ে দর কষাকষির পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, প্রতারকরা অনেক সময় ভিসা পেতে পূর্ণ নিশ্চয়তা দেয়, কিন্তু মনে রাখতে হবে ভিসা প্রদান বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয়ার ক্ষমতা শুধু ইমিগ্র্যাশন মিনিস্টারের।
ইটাবেলও বলেন, প্রতারণার বিষয়টি বোঝার জন্য একটি ইঙ্গিত হলো তারা হয় অতিরিক্ত অথবা একেবারে কম চার্জ করবে। তাই কেউ মাইগ্রেশন এজেন্ট কিনা তা নিশ্চিত হতে OMARA 'র ওয়েবসাইটে দেখে নিশ্চিত হওয়া জরুরী, কারণ রেজিস্টার্ড এজেন্টরা অস্ট্রেলিয়ার কোড অফ কন্ডাক্ট মেনে চলে এবং তাদের আইনি বাধ্যবাধকতা আছে।
নানাতোর মতে, OMARA এজেন্টদের কোড অফ কন্ডাক্টের বিষয়টি নিশ্চিত করতে প্রতি বছর রেজিস্টার্ড এজেন্টদের ব্যাঙ্ক একাউন্ট লেনদেন খুব ভালো করে লক্ষ্য রাখে।
ডেল বলেন RACS থেকে তারা শুনেছেন যে অনেক লোক অবৈধ এজেন্টদের খপ্পরে পড়েছে।
তিনি বলেন, আপনি যদি দেখেন যে কোন রেজিস্টার্ড মাইগ্রেশন এজেন্ট আপনাকে যথাযথ সাহায্য করছে না বা প্রতারণার চেষ্টা করছে তবে OMARA 'তে অভিযোগ করতে পারেন।
OMARA থেকে পাওয়া সর্বশেষ বার্ষিক রিপোর্টে দেখা যায় যে, মাইগ্রেশন এজেন্টদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগের ৭০ ভাগই খারিজ হয়ে গেছে কারণ কোন যথেষ্ট প্রমান ছিল না অথবা সেখানে OMARA'র কিছু করার ছিল না।
নানাতো বলেন, দুর্ভাগ্যবশত অস্ট্রেলিয়ার বাইরের কোন অবৈধ এজেন্টদের বিরুদ্ধে অফিস অফ দা মাইগ্রেশন এজেন্টস রেজিস্ট্রেশন অথরিটির কিছু করার নেই।
নানাতো বলেন, জুনিয়র মাইগ্রেশন এজেন্ট অথবা ইমিগ্রেশন ল'ইয়ার ভেদে প্রাথমিক কন্সালটেশন ফীহতে পারে ১০০ থেকে ৩০০ ডলারের মধ্যে।
ভিসা প্রসেসিং ফী কত হবে তাও নির্ভর করবে কি ধরণের ভিসায় আপনি আবেদন করছেন।
ইটাবেলও'র মতে, আবেদনকারী আর্থিকভাবে সমস্যায় থাকলে কন্সালটেশন ফী অনেক সময় অনেক কম নেয়া হয়।
ইটাবেলও বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ভিসা প্রসেসিংয়ে অকল্পনীয় রকম দীর্ঘ সময় লাগছে, এতে আবেদনকারীরা বেশ অস্থিরতার মধ্যে আছেন, বিশেষ করে যারা প্রযুক্তিতে দক্ষ নন এবং অনলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন না।
যারা নিজে নিজে ভিসা আবেদন দাখিল করতে চান, তাদেরকেও রেজিস্টার্ড মাইগ্রেশন এজেন্টদের কাছ থেকে ধারণা নিতে নানাতো পরামর্শ দেন।
এই প্রতিবেদনে যেসব মন্তব্য করা হয়েছে তা শুধু সাধারণ পরামর্শ এবং এতে সব ধরণের পরিস্থিতি বিবেচনা করা হয়নি। আপনি যদি আপনার ভিসা স্ট্যাটাস নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন, তাহলে দ্রুত আইনি পরামর্শ নিন।
আপনি অভিবাসীদের অভিবাসনের নানা ঘটনা নিয়ে নির্মিত এসবিএসের চার-পর্বের ডকুমেন্টারী সিরিজ 'হু গেটস টু স্টেই ইন অস্ট্রেলিয়া?' দেখতে পারেন প্রতি বুধবার রাট ৮টা ৩০ মিনিটে।
আপনি যদি মনে করেন আপনি প্রতারিত হচ্ছেন, তবে বর্ডার ওয়াচ অনলাইন রিপোর্টে অভিযোগ করতে পারেন।
অস্ট্রেলিয়ায় সবাইকে একে অপর থেকে ১.৫ মিটার দূরত্বে থাকতে হবে। করোনাভাইরাসের টেস্টিং-এর সুবিধা অস্ট্রেলিয়ার সর্বত্র পাওয়া যাচ্ছে। আপনার যদি ঠান্ডা, বা ফ্লু উপসর্গ দেখা দেয় তবে আপনার ডাক্তারকে কল করুন অথবা করোনাভাইরাস হেলথ ইনফরমেশন হটলাইন ১৮০০ ০২০ ০৮০ এই নাম্বারে কল করুন।
পুরো প্রতিবেদনটি শুনতে ওপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন
আরও পড়ুনঃ