১৯৭০ সালে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার লেনার্ড ক্যাসলি তার খামারকে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে ঘোষণা করে, যার নাম দেয়া হয় প্রিন্সিপালিটি অব হাট রিভার।
তিনি নিজেকে একজন প্রিন্স হিসেবে ঘোষণা করেন। ব্যাপারটি অবশ্যই বেশ রাজকীয়, কিন্তু এর পেছনে আসল কারণ ছিল খামারের উৎপাদন কোটা বাড়ানো ও সরকারকে কর দেয়া থেকে মুক্তি পাওয়া।
খুব সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত এ ধরণের মাইক্রোনেশানগুলোর আসল উদ্দেশ্য ছিল এরকমই, অর্থাৎ নিজস্ব লাভ। তবে কিছু ক্ষেত্রে অহংকারও এসব নকল দেশ তৈরির পেছনের কারণ হিসেবে কাজ করেছে।
তবে এই চিত্র এখন অনেকটাই বদলে গেছে।
হ্যারি হবস ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, সিডনির সাংবিধানিক আইনের একজন অধ্যাপক, তিনি সম্প্রতি মাইক্রোনেশানসের উপরে একটি বইও লিখেছেন।
তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, এই শতাব্দীর শুরু থেকে, নতুন জাল বা নকল দেশগুলি ইতিবাচক উদ্দেশ্য মাথায় রেখে তৈরি করা হচ্ছিল, মূলত তাদের দ্বারা, যারা উপযুক্ত কারণে সবার মনোযোগ আকর্ষণ করতে চেয়েছে।
READ MORE
নতুন এসবিএস রেডিও অ্যাপ ডাউনলোড করুন
নিলস ভারমেস্ক ত্রিশ বছর বয়সী একজন মানুষ, যার দুটি সন্তান রয়েছে। তিনি থাকেন জন্মস্থান বেলজিয়ামে, সেখানে তিনি একটি অফিসে চাকরি করেন।
তবে সেই সাথে তিনি একজন স্বঘোষিত গ্র্যান্ড-ডিউকও বটে।
মি. ক্যাসলি তার প্রিন্সিপালিটির জন্যে যে প্রচারণা পান, সেটি দেখে নিলস তার প্রিয় জায়গা অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের একটি অংশকে তার গ্রান্ড-ডাচি হিসেবে দাবি করার সিদ্ধান্ত নেন।
এই শুভ্র মহাদেশের এই অংশটির নাম দেয়া হয় গ্র্যান্ড-ডাচি অব ফ্ল্যানড্রেসিস।
নিলস অ্যান্টার্কটিকা সংরক্ষণের উপর বেশ কয়েকটি কর্মসূচীতে অংশ নেন, যেখানে তার অনুসারীরা জলবায়ু বিপর্যয় সম্পর্কে জানতে পারে এবং তা নিজেদের পরিচিতদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়। তিনি বেশ কয়েকজন পরিবেশবাদীকে পদকও প্রদান করেন।
হ্যারি হবস এই কাল্পনিক গ্র্যান্ড-ডাচিকে নতুন প্রজন্মের মাইক্রোনেশনের উদাহরণ হিসাবে দেখেন, যা অবহেলিত কিছু বিষয়কে একটি মজার কিন্তু জোরালো কণ্ঠস্বর দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে।
কিন্তু খুব বেশি দূরে যাওয়ার দরকার নেই – অন্য অনেকেই এখন নিজেদের কম্যুনিটির উপকারের উদ্দেশ্যে তাদের নিজস্ব দেশ তৈরি করছে।
দুই ফরাসি মানুষ, অলিভিয়ার এবং জ্যঁ পিয়েরে, নিজেদেরকে আইগস-মর্তেস নামের ছোট্ট এক শহরের রাজকুমার ও রাজকুমারী বলে দাবি করেছেন। কারণ তারা শহরটিকে জনপ্রিয় ও মানুষের মনোযোগের কেন্দ্রে তুলে আনতে চেয়েছেন।
তারা বিভিন্ন ইভেন্ট আয়োজন করেন ও বিভিন্ন উৎসব উদযাপন করেন। তাদের একটি স্থানীয় মুদ্রা এবং একটি স্থানীয় মিডিয়াও রয়েছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অলিভিয়ার মজা করে নিজেকে ‘রাজকুমারী অলিভিয়া’ বলে পরিচয় করিয়ে দেন।
আর তার সঙ্গী জ্যঁ-পিয়েরে একজন ক্যারিশম্যাটিক রাজকুমারের পোশাক পরিধান করেন। তিনি এই নকল দেশটিকে তার কার্যসিদ্ধির একটি উপায় হিসেবে দেখেন।
নকল দেশ বা রাজ্য এবং রয়্যালটি নতুন কিছু নয়।
কিন্তু নতুন মিলেনিয়ামে এগুলো একটিভিজমের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠেছে।
সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও লিংকে ক্লিক করুন।
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: