ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ বলেছেন, সিডনিতে সাম্প্রতিক দু’টি ছুরি হামলার ঘটনায় কেউ কেউ যেভাবে প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন তাতে অস্ট্রেলিয়ায় সামাজিক সংহতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সিডনিতে ইহুদি, খ্রিস্টান এবং মুসলমান সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে সাম্প্রতিক উত্তেজনা ও সহিংসতা নিয়ে বিবৃতি প্রদান করা হয়েছে।
সিডনির ওয়েইকলি সাবার্বে ক্রাইস্ট দ্য গুড শেফার্ড চার্চে ছুরি হামলার ঘটনাকে পুলিশ এবং সিকিউরিটি এজেন্সিগুলো সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে অভিহিত করেছে।
গির্জায় বিশপ মার মারি ইমানুয়েল যখন প্রার্থনা পরিচালনা করছিলেন তখন তাকে এবং আরও কয়েকজনকে ছুরিকাহত করার অভিযোগে ১৬ বছর বয়সী একজন মুসলমানকে আটক করেছে পুলিশ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই হামলার সংবাদ এবং ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে বহু লোক সেই চার্চে ছুটে যায় এবং হামলাকারীকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানায়।
চার্চের বাইরে অবস্থানকারীদের সঙ্গে তখন পুলিশের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। এছাড়া, পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুড় করা হয়।
কলাম্বান সেন্টার ফর ক্রিস্টিয়ান-মুসলিম রিলেশন্স এর ডিরেক্টর, ফাদার প্যাট্রিক ম্যাকলার্নারি বলেন, এই হামলার ঘটনায় বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মাঝে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
জুইশ কাউন্সিল অব অস্ট্রেলিয়া, ইসলাম ফোবিয়া রেজিস্টার অস্ট্রেলিয়া এবং কলাম্বান সেন্টার ফর ক্রিস্টিয়ান-মুসলিম রিলেশন্স এর একটি যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যে-কোনো ধরনের ঘৃণা এবং অসহিষ্ণু আচরণ তারা অবশ্যই প্রত্যাখ্যান করে।
ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের অবমাননা করা বন্ধ করার আহ্বানও জানানো হয় বিবৃতিটিতে।
ইহুদি, খ্রিস্টান এবং ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা তাদের পূর্বপূরুষ হিসেবে হযরত ইবরাহীম (আ.)-কে অত্যন্ত সম্মানের চোখে দেখে থাকে। অস্ট্রেলিয়ায় এই তিনটি ধর্মের নেতাদেরকে একত্রিত করে একটি যৌথ বিবৃতি তৈরি করেছেন ফাদার প্যাট্রিক।
সাম্প্রদায়িক বিভেদের পেছনে শুধুমাত্র চার্চে ছুরি হামলার ঘটনাটিই দায়ী নয়। এর আগে, গত ১৩ এপ্রিল, শনিবার, সিডনির বন্ডাই জংশনের ওয়েস্টফিল্ডে ঘটনায় হামলাকারী-সহ সাত জন নিহত হয়। এ বিষয়ে পুলিশ কোনো তথ্য জানানোর আগেই, অস্ট্রেলিয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে বিভিন্ন রকম পোস্ট আসতে থাকে।
কেউ কেউ দাবি করতে থাকে যে, এটি একটি সন্ত্রাসী ঘটনা। আর, অস্ট্রেলিয়া ইসরায়েলকে সমর্থন করায় একজন আরব মুসলমান এই হামলাটি করেছে।
আবার, একটি সংবাদ মাধ্যমে সিডনির ইহুদি জনগোষ্ঠীর একজন প্রখ্যাত ব্যক্তির সন্তানের নাম প্রকাশ করা হয়েছে হামলাকারী হিসেবে।
বন্ডাই জংশনে শপিংমলে হামলাকারীর পরিচয় সনাক্ত করেছে পুলিশ। তার নাম জোয়েল কাউচি। কুইন্সল্যান্ড থেকে সিডনিতে আসা ৪০ বছর বয়সী এই ব্যক্তি মানসিক রোগ স্কিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত ছিল।
আর, দৃশ্যত সে শুধু নারীদেরকেই তার হামলার লক্ষ্যবস্তু করছিল।
বন্ডাই শপিংমলে ছুরি হামলায় নিহত ছয় ব্যক্তির মধ্যে একমাত্র পুরুষের নাম ফারাজ তাহির। ওয়েস্টফিল্ডে তিনি নিরাপত্তা-রক্ষীর কাজ করতেন। আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে শ্রীলঙ্কা হয়ে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছিলেন পাকিস্তানের আহমদীয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের এই যুবক।
এসবিএস নিউজের সঙ্গে একটি একান্ত সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থোনি অ্যালবানিজি অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসকারী সকলের প্রতি সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানান।
প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
এসবিএস রেডিও সম্প্রচার-সূচী হালনাগাদ করেছে, এখন থেকে প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার, বিকাল ৩টায়, এসবিএস পপদেশীতে আমাদের অনুষ্ঠান শুনুন, লাইভ।
কিংবা, পুরনো সময়সূচীতেও আপনি আমাদের অনুষ্ঠান শোনা চালিয়ে যেতে পারেন। প্রতি সোম ও শনিবার, সন্ধ্যা ৬টায়, এসবিএস-২ এ।
৫ অক্টোবর থেকে নতুন চ্যানেলে ও নতুন সময়ে যাচ্ছে SBS Bangla Credit: SBS