দুর্গাপূজা হিন্দু দেবী দুর্গার পূজাকে কেন্দ্র করে প্রচলিত একটি উৎসব। দুর্গাপূজা পুরো হিন্দুসমাজে প্রচলিত হলেও বাঙালি হিন্দু সমাজে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব।
বিশ্বের অন্যান্য স্থানের মত অস্ট্রেলিয়াতেও বেশ ধুমধামের সাথে পালিত হয় দুর্গাপূজা। তবে কোভিড ১৯ রেস্ট্রিকশনের কারণে গত দুবছর ধরে অনেকটা ঘরোয়াভাবেই পালিত হচ্ছে এই উৎসবটি।
বাংলাদেশ ও ভারতে দুর্গাপূজা উৎসবের স্মৃতি এবং কোভিড ১৯ রেস্ট্রিকশন মেনে কিভাবে পালন করছেন উৎসবটি, এ নিয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন মেলবোর্ন ও রিজিওনাল এলাকার বাঙালি হিন্দু কমিউনিটির কয়েকজন সদস্য।মেলবোর্নের অদূরে বালারাট শহরের বাসিন্দা মিজ অনিন্দিতা ব্যানার্জী বলেন, দুর্গাপূজার সময়ে তার নিজ শহর কলকাতার কথা তার ভীষণ মনে পড়ে। কারণ তিনি কলকাতায় বড় হয়েছেন।
Anindita Banerjee Source: Anindita Banerjee
তিনি বলেন, বাইরে থেকেও তারা নিজেদের মত করে দুর্গাপূজা উদযাপন করেন, তবে লকডাউনের কারণে স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্যবারের মত উদযাপন করা হবে না।
"দুর্গাপূজার নয় দিনে নয় ধরণের রঙে দুর্গা ঠাকুরকে সাজানো হয়, আমরা সেই নয় দিনে নানা রঙে পূজা পালন করব," বলেন মিজ ব্যানার্জী।মেলবোর্নের মি: হিমাদ্রি চক্রবর্তী বলেন, "লকডাউনের কারণে কারো সাথে দেখা করা যাচ্ছে না, তাই বাসায় থেকে নতুন জামাকাপড় পড়ে, ভগবানের উদ্দেশ্যে কিছু উৎসর্গ করে, বাসাতেই যতটুকু আনন্দ করতে পারি।"
Himadri Chakraborty Source: Himadri Chakraborty
তবে অনলাইনে স্থানীয় পূজা কমিটির আয়োজনে পূজা উদযাপন করবেন বলে প্রত্যাশা করেন মিঃ চক্রবর্তী।
মেলবোর্নের পশ্চিমে ব্যাকাশ মার্শের বাসিন্দা সানি সঞ্জয় তাদের 'কৃষ্ণা কুটিরে' প্রতিবছরই দীর্ঘদিন ধরে পালন করে আসছেন দুর্গাপূজা।তিনি বলেন, "অতিমারীর কারণে গতবছরের মত এবছরেও শুধু বাড়ির বাসিন্দাদের নিয়ে পূজা পালন করতে হচ্ছে।"
Sunny Sonjoy Source: Sunny Sonjoy
"তবে অনলাইনে লাইভে এসে পূজার পুষ্পাঞ্জলি এবং ঢাকঢোল বাজিয়ে মায়ের আরতি করা, এসব রিচুয়ালগুলো পালন করে আসছি," বলেন মিঃ সঞ্জয়।
মেলবোর্নের মিজ চন্দ্রিমা চক্রবর্তী তার পূজা ভাবনা শেয়ার করে বলেন, "২০২০ থেকে পূজা উদযাপন ডিজিটাল হয়ে দাঁড়িয়েছে, অনলাইনে অঞ্জলি, অনলাইনে আরতি দেখা, অন্যান্য প্রোগ্রাম-রিহার্সেল কত্ত কি! এবং এবছরও মেলবোর্নে তাই হতে চলেছে।"ভারতের আসামে তাদের নিজ বাড়িতে ছোট্ট করে পূজা পালন করা হতো, সেই স্মৃতি রোমন্থন করে মিজ চক্রবর্তী বলেন, "বহুবছর ঘরে ফেরা হয়নি, তবে অনেকদিন ধরে মেলবোর্নে থাকার ফলে আমাদের এবং বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে একধরণের একান্নবর্তী পরিবার গড়ে উঠেছে। তাদের নিয়েই পালন করা হতো পূজার উৎসব।"
Chondryma Chakrobortti Source: Chondryma Chakrobortti
এবারো সবাইকে নিয়ে উদযাপন করা সম্ভব না হলেও, তার প্রত্যাশা আগামী বছর ডিজিটাল পূজা উৎসব থেকে বেরিয়ে এসে প্রকৃত উৎসব তারা পালন করতে পারবেন।
পুরো প্রতিবেদিনটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন।
আরও দেখুন: