সুইডেন জানিয়েছে যে এই গ্রীষ্মে তারা কোভিড ১৯ ডিজিটাল সার্টিফিকেট তৈরি করবে যাতে ভ্যাকসিন দেওয়া মানুষদের ভ্রমণ করতে দেওয়া হয়।
কর্তৃপক্ষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লুএইচও) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে সুইডেন তার নিজ ভূমিতে এবং বিদেশে এর ব্যবহারের জন্য কাজ করার পরিকল্পনা করছে।
মহামারীর সূচনা থেকেই সুইডেন তাদের জনগোষ্ঠীর বিশাল অংশকে উন্মুক্ত রাখার বিতর্কিত কোভিড ১৯ ব্যবস্থা নিয়েছিল।
প্রতিবেশী ডেনমার্কও এই ডিজিটাল করোনভাইরাস পাসপোর্ট তৈরি করছে বলে ঘোষণা করার একদিন পর এই ঘোষণা এসেছে যা এই বছরের শেষের দিকে ব্যবহার করা যাবে।
সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্টেফান লোফভেন বলেছেন, কোভিড ১৯ ডিজিটাল সার্টিফিকেট আন্তর্জাতিক মানের তৈরি করা জরুরি।
ব্রিটেনের হেলথ মিনিস্টার ম্যাট হ্যানকক ইংল্যান্ডে নির্দিষ্ট কোন দেশ থেকে আগতদের জন্য সরকার যেভাবে হোটেল আইসোলেশন ব্যবস্থা নিয়েছে তার সাথে তাল রেখে চলেছেন।
গত মাসে এই সরকার ঘোষণা করেছিল যে ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলি থেকে ইংল্যান্ডে আসা লোকেরা আগমনের পর একটি হোটেলে ১০ দিন অবস্থান করবে।
করোনাভাইরাসের নতুন রূপগুলি সেখানে যাতে ছড়িয়ে না যায় তা নিশ্চিত করার জন্য এই পরিকল্পনাটি তৈরি করা হয়েছিল।
তবে নীতিটি কখন কার্যকর হবে তার জন্য এখনও কোন নির্দিষ্ট তারিখ নেই এবং মিঃ হ্যানকক বলেছেন যে তারা ব্যবস্থাটি কার্যকর করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে চান।
এদিকে কোভিড ১৯- এর নতুন রূপগুলো সম্ভাব্য আরও বিপজ্জনক আকারে রূপান্তরিত হতে যাচ্ছে এই আশংকায় যুক্তরাষ্ট্র নতুন পরিবর্তনগুলি শনাক্ত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ব্রিটিশ রূপটি আরও সংক্রামক এবং মূল স্ট্রেইনের চেয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি বহন করতে পারে, অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার ভাইরাস স্ট্রেইনের জন্য ভ্যাকসিনগুলো কিছুটা কার্যকর হতে পারে।
কয়েকজন আমেরিকান বিজ্ঞানী বলেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র তার জাতীয় নেতৃত্বের অভাবে এবং ডায়াগনস্টিক পরীক্ষাগারগুলোর অতি ব্যস্ততার কারণে বিপজ্জনক মিউটেশনগুলো শনাক্ত করার দৌড়ে পিছিয়ে পড়েছে।
স্ট্যানফোর্ড ক্লিনিকাল ভাইরোলজি ল্যাবরেটরির মেডিক্যাল ডিরেক্টর বেনজামিন পিনস্কি বলেছেন, নতুন রূপগুলি স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ একই সাথে ভ্যাকসিনগুলো প্রস্তুত হচ্ছে।
এদিকে আফ্রিকান ইউনিয়নের বা এইউ'র উদ্যোগে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে বরাদ্দ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে আফ্রিকান ষোলটি দেশ কভিড -১৯ সুরক্ষা দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
ধনী দেশগুলো ব্যাপকহারে টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার ফলে আফ্রিকা পরের তিন বছরে তার ১.৩ বিলিয়ন লোকের মধ্যে ৬০ শতাংশকে টিকা দিতে চাইছে।
এদিকে মাত্র কয়েকটি মুষ্টিমেয় আফ্রিকান দেশ ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করেছে।
৫৫ সদস্যের এ-ইউ, আফ্রিকার উদ্যোগ ছাড়াও এই বছর ডাব্লুউ-এইচ-ও-এর নেতৃত্বাধীন কোভ্যাক্স প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ভ্যাকসিন ডোজ গ্রহণ করা হবে।
রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থার আফ্রিকা কেন্দ্রের প্রধান জন নেকেনগাসং বলেছেন, এই মহাদেশে কোভিড -১৯ এর মৃত্যুর হার বাড়ার সাথে সাথে মানুষকে টিকা দেওয়ার কাজ শুরু করা গুরুতর উঠেছে।
এদিকে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় বলছে যে দেশটির সক্রিয় কোভিড -১৯ কেইসের সংখ্যা ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে, যার বর্তমান সংখ্যা ১৬০,০০০-এরও কম।
ভাইরাসের প্রকোপ সম্পর্কে ভারতের দেশব্যাপী তৃতীয় সমীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে যে টিকা দেওয়ার আগে ২১.৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ইতিমধ্যে সংক্রামিত হয়েছিল।
স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন যে এর দ্বারা বোঝা যায় যে ভারতের প্রায় ১.৪ বিলিয়ন জনসংখ্যার একটি বৃহৎ অংশ অরক্ষিত রয়েছে।
ভারত এ পর্যন্ত ৪.৫ মিলিয়নেরও বেশি ডোজ ভ্যাকসিন দিয়েছে যার মধ্যে স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক এবং প্যারামেডিক কর্মীরা প্রথম গ্রহীতা।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিকেল রিসার্চ-এর মহাপরিচালক বলরাম ভার্গব বলেছেন, সংক্রমণের হার কমার পরেও আত্মতৃপ্তির কোনও অবকাশ নেই।
১০.৭ মিলিয়নেরও বেশি সংক্রমণ নিয়ে ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক কোভিড -১৯ কেইস রেকর্ড করেছে।
ভারতে এই রোগে এখন পর্যন্ত ১৫০,০০০ এরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন।
আপনার ভাষায় কোভিড -১৯ মহামারী সম্পর্কে স্বাস্থ্য এবং সহায়তা কি আছে সে বিষয়ে আরো জানতে ভিজিট করুন: sbs.com.au/coronavirus
পুরো প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে ওপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন
আরো দেখুনঃ