আঠারো বছর আগে বাংলাদেশের পতাকা হাতে পৃথিবীর উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন লক্ষ্মীপুরের মেয়ে নাজমুন। ২০০০ সালে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত দিয়ে শুরু হয় তার ভ্রমণ অধ্যায়।
"ঘুমের মধ্যেও স্বপ্ন দেখি, আমি ভ্রমণ করছি পৃথিবীর এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়," বলেছেন পরিব্রাজক নাজমুন নাহার।
"ভ্রমণ আমার সুখের জায়গা। এ ভালোবাসা আমাকে মানুষ, প্রকৃতি ও সৌন্দর্যময় পাহাড়ের কাছে নিয়ে এসেছে।"জুনের ১ তারিখ জাম্বিয়া থেকে হেঁটে জিম্বাবুয়ে আসেন নাজমুন। সাথে সাথে শততম দেশ ভ্রমণের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। তাঁর ভ্রমণ তালিকায় পূর্ব আফ্রিকার জাম্বিয়া ছিল ৯৯তম দেশ। বিখ্যাত ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতের জিম্বাবুয়ে অংশে ঘুরে আবার জাম্বিয়ার লিভিংস্টোন শহরে ফিরে আসেন তিনি।
Moment before entering Zimbabwe as representing Bangladesh in 100 countries on June 1, 2018. Source: Supplied
তার এই বিরল কৃতিত্বে সম্মাননা দিয়েছেন লিভিংস্টোন শহরের গভর্নর হ্যারিয়েট কায়িনা। "গভর্নর আমাকে জড়িয়ে ধরেন এবং বলেন, তুমি হচ্ছো ফ্ল্যাগ গার্ল," বলেছেন নাজমুন নাহার।এসবিএস বাংলা পেইজের সাথে থাকুন।
Najmun Nahar heading to Great Barrier Reef of Australia on November, 2017. Source: Supplied
নাজমুনের ভ্রমণ তালিকায় অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান ৯২। গত বছরের নভেম্বরে কুইন্সল্যান্ড এবং নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের কয়েকটি দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখেন তিনি। তার মধ্যে গ্রেট বেরিয়ার রীফ, হোয়াইটহ্যাভেন বিচ, অপেরা হাউস এবং ব্লু মাউন্টেইন উল্লেখযোগ্য।
"পালতোলা নৌকায় করে আমি গ্রেট বেরিয়ার রীফে যাই। যাওয়ার পথে মুখোমুখি হই জীবন- মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।""পৃথিবীর অনেক দেশের মানুষই আমার গলার লকেটের প্রশংসা করেছেন। যখনই তারা লকেট নিয়ে কথা বলতে চায় তখনই আমি সুযোগ পাই বাংলাদেশকে তুলে ধরার। কারণ আমার লকেটে খচিত রয়েছে জাতীয় পতাকা," বললেন নাজমুন।
In front of a handicrafts shop in Kenya on May 20, 2018. Source: Supplied
ভ্রমণের মধ্য দিয়ে দেশকে এবং জাতীয় পতাকাকে পরিচয় করে দিয়েছেন পৃথিবীর হাজারো মানুষের কাছে! বিশ্বের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমনকি আদিবাসী মানুষের কাছেও পৌঁছে দিয়েছেন লাল সবুজের পরিচয়!সুইডওয়াচসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থায় খণ্ডকালীন চাকরি করেছেন নাজমুন। রোজকার খরচ বাদে যা জমান, তা নিয়েই ঘুরে এসেছেন নতুন কোনো দেশে। বাংলাদেশের এই নারী ২০১৬ ও ২০১৭ সালে ঘুরেছেন ৩৫টি দেশ।
Najmun Nahar. Source: Supplied
নাজমুন জানান, তার মন্টিনিগ্রো সফরের কথা। পাহাড়ি চমৎকার ভ্যালি আর অপূর্ব লেকে ভরপুর দেশটি এখনও দাগ কেটে রেখেছে তার মনে।
কথোপকথনে শুনালেন জাম্বিয়ার মানুষের আন্তরিকতার গল্প। স্মরণ করলেন কলাম্বিয়ানদের বন্ধুসুলভ আচরণের কথা।ভ্রমণের জন্য অর্থের চেয়ে নিখুঁত পরিকল্পনাটাই বেশি জরুরী বলে মনে করেন নাজমুন। "আমি কখনো আয়েশি ভ্রমণ করিনা। বেশিরভাগ ভ্রমণই আমি বাসে করেছি। শুধুমাত্র শেষ গন্তব্য থেকে আমি বিমানে চড়ি।"তরুণদের জন্য ঢাকায় ‘ইনসপিরেশন গ্লোবাল ফাউন্ডেশন’ নামে একটি উদ্যোগ শুরু করেছেন। পাশাপাশি 'প্রেরণাদায়ি বক্তা' হিসেবেও কাজ করে যাচ্ছেন নাজমুন নাহার।
Najmun Nahar with Swaziland tribal people on June 12, 2018. Source: Supplied
Najmun Nahar. Source: Supplied
পুরো কথোপকথন শুনতে অডিও লিঙ্কে ক্লিক করুন।