মরিসন সরকার ইউনিভার্সিটিগুলোতে ক্রমবর্ধমানহারে বাড়তে থাকা আন্ডারগ্রাজুয়েটদের জন্য আরো সুযোগ বাড়াচ্ছে, তবে অনেক শিক্ষার্থীর জন্যই এটা হবে ব্যয়বহুল।
সরকার চাচ্ছে তরুণ অস্ট্রেলিয়ানরা কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে এমন ডিগ্রীগুলোতে ভর্তি হোক। অন্যদিকে তারা আর্টস, মিউজিক কিংবা সাহিত্যের মতো মানবিক শাখার কোর্সগুলোর খরচ প্রায় দ্বিগুন করে দিচ্ছে।
ইউনিভার্সিটিগুলো ২০২১ সালের জন্য বিপুল পরিমান ভর্তির আবেদন পাচ্ছে। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে অর্থনৈতিক মন্দার বাস্তবতায় অনেক তরুণ শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তরুণদের বেকারত্ব বেড়েছে ১৬.১ শতাংশ, যেখানে মে মাসে মোট কাজ হারানোর ৪৫ শতাংশ তরুণরাই।
এডুকেশন মিনিস্টার ড্যান টেহান আজ শুক্রবার ন্যাশনাল প্রেস ক্লাবে ইউনিভার্সিটিগুলোতে তহবিল সরবরাহে কোয়ালিশনের পরিকল্পনা প্রকাশ করবেন।
তিনি আগামী তিন বছরে ইউনিভার্সিটিগুলোতে আরো ৩৯,০০০ আসন বাড়াতে যাচ্ছেন যা ২০৩০ সালের মধ্যে বেড়ে দাঁড়াবে ১০০,০০০-এ।
কোয়ালিশন সরকার গত দুই বছরে আসন সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছিলো যা ২০১৮ সালের পর্যায়ে ছিল।
তবে এই নতুন পরিকল্পনায় শিক্ষার্থী এবং করদাতাদের অর্থ ব্যয়ের মধ্যে ভারসাম্য আনা হচ্ছে। যেমন মানবিক শাখার তিন বছরের একটি ইউনিভার্সিটি ডিগ্রীর জন্য শিক্ষার্থীদের ব্যয় ২০,০০০ ডলার থেকে বেড়ে ৪৩,৫০০ ডলারে দাঁড়াবে। সরকারের যোগান কমবে ৩,৩০০ ডলার।চার বছরের আইন বিষয়ে ডিগ্রির খরচ ৪৪,৬২০ ডলার থেকে বেড়ে ৫৮,০০০ ডলারে দাঁড়াবে।
Education Minister Dan Tehan Source: AAP
অন্যদিকে, যেসব ডিগ্রী কর্মসংস্থানের ভালো সুযোগ সৃষ্টি করবে তাতে সরকার অর্থ দেবে বেশি এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কম নেবে।
তিন বছরে কৃষি এবং গণিত বিষয়ে পড়তে খরচ পড়বে ১১,১০০ ডলার যা আগে ছিল ২৮,৬০০ ডলার। শিক্ষা, নার্সিং, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি, বিজ্ঞান, স্বাস্থ্য, স্থাপত্য, আই টি, প্রকৌশল এবং ইংলিশ কোর্সের খরচও কমবে।
যারা ব্যয়বহুল কোর্স করছেন তারা সস্তা এবং 'কাজে লাগবে' এমন কোর্স নিয়ে তাদের ব্যয় কমাতে পারবেন।
মিঃ টেহান বলেন, "আমরা শিক্ষার্থীদের বিষয় বৈচিত্রের প্রতি উৎসাহ দিচ্ছি এবং তারা যাতে না ভাবে যে তাদের শিক্ষা কোন কাজেই আসবে না।"
"আপনি যদি ইতিহাস পড়তে চান, তবে ইংলিশ পড়ার বিষয়টিও ভাবুন, দর্শন পড়তে চাইলে আরেকটি ভাষা পড়ুন। আইন বিষয়ে পড়তে চাইলে আইটি পড়ার বিষয়েও ভাবতে পারেন।"
তবে কোন বর্তমান শিক্ষার্থীকে অতিরিক্ত ব্যয় করতে হবে না।
মিঃ টেহান ইউনি ফী নিয়ে অযথা ভয়ের বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে বলেন কোন কোর্স করতে ১০০,০০০ ডলার খরচ করতে হবে না; তার পূর্বসূরি ক্রিস্টোফার পেইন এর আগে ইউনিভার্সিটি ফীয়ের বিষয়ে সরকারি নিয়ন্ত্রণ তুলে দিতে চেয়েছিলেন।
মিনিস্টার ইউনিভার্সিটিগুলোকে এই পরিকল্পনায় সমর্থন দিতে চাপ দিচ্ছেন, এ বিষয়ে তিনি বলেন এই পরিকল্পনাটি তারা এই খাতের নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করেই প্রকাশ করেছেন।
এদিকে ন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ স্টুডেন্টস সরকারের এই পরিকল্পনার নিন্দা করে বলেছে যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো 'কাজ তৈরীর কারখানা' নয়।
ইউনিয়ন এক বিবৃতিতে বলেছে, "যদিও কোন কোন ডিগ্রীতে ফী কমিয়ে দিয়ে কিছু শিক্ষার্থীদের জন্য ইতিবাচক সুযোগ সৃষ্টি হবে, কিন্তু তা করা হচ্ছে হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের কোর্সের ওপর অতিরিক্ত ফী চাপিয়ে দিয়ে, তারা পড়ার জন্য এমন সব কোর্স নিয়েছে যা সরকার যথেষ্ট কাজের মনে করছে না।"
আরো পড়ুন: