ক্যাফে আর মুদি দোকান মিলে অল্প কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আছেন এ্যাডিলেইডে। তাদেরই একজন রাশেদ কবির। এ্যাডিলেইডের মাইল এ্যান্ড সাবার্বে অবস্থিত তার ক্যাফ। যা কিনা এ্যাডিলেইডের প্রথম হালাল ব্রেকফাস্ট বার।
"২০১৩ সালে যখন শুরু করি, তখন অনেকেই অবাক হত এই ভেবে যে বেকন এবং এ্যালকোহল ছাড়া ক্যাফে চলবে কিভাবে!" বলেছেন রাশেদ।প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে আমদানিকৃত দেশীয় পণ্য পৌছে দিতে এ্যাডিলেইডে আছে মুদি এবং মাংসের দোকান। যার স্বত্ত্বাধিকারী মোল্লা জালাল উদ্দিন।
Rashed Kabir. Source: Supplied
"এ ব্যবসা শুরুর আগে আমি আরও দু'টি ব্যবসা করি। কিন্তু ভালো করতে পারিনি বলে ২০১৩ সালে মুদি এবং মাংসের দোকান ব্যবসায় আসি," বলেছেন জালাল।
চাকরির একঘেয়েমিতা ভালো লাগতো না বলেই ব্যবসায় আসেন রাশেদ কবির। তবে মোল্লা জালালের গল্পটা ভিন্ন।
জালাল জানান, "বাংলাদেশের পড়াশোনা আর চাকরির অভিজ্ঞতা দিয়ে এখানে কাজ পাচ্ছিলাম না। বিকল্প চিন্তাধারা থেকেই ব্যবসা শুরু করি।"
Mola Jalal Uddin (L). Source: Supplied
শুরুর গল্পটা দু'জনেরই প্রায় একইরকম। ব্যাংক ঋণ পাননি কেউই। তারওপর পণ্য সরবরাহকারী খুঁজতে অনেকটা বেগ পেতে হয়েছে জালালকে। ভালো বাবুর্চি এবং কর্মী খুঁজে পেতে অনেকটা সময় গিয়েছে রাশেদের।
জালাল জানান, "ব্যবসা শুরুর পরও আমি পূর্ণকালীন কাজ করি অনেকদিন। আর আমার স্ত্রী খন্ডকালীন কাজ করত পাশাপাশি ব্যবসায় সময় দিত।"
"ব্যাংক থেকে প্রায় শতকরা ১৫ ভাগ সুদে ব্যক্তিগত ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করি।" রাশেদ আরো বলেন, "ক্যাফে শুরুর এক সপ্তাহ আগে আমার প্রথম সন্তান জন্ম নেয়। তারপরও ব্যবসার শুরু থেকেই আমার স্ত্রী শামীমা আখতার ক্যাফেতে পূর্ণকালীন সময় দেয়।"জালাল এবং রাশেদ দু'জনই মনে করেন চাকরি করার চেয়ে ভালো আছেন তারা। ক্ষুদ্র ব্যবসায় নতুনদের প্রতিও তাদের উদাত্ত আহ্বান।
Love On Cafe. Source: Supplied
রাশেদ বলেন, "অর্থের জন্য নয় বরং শেখার জন্য আসতে হবে। ব্যবসাকে একটি প্রজেক্ট হিসেবে দেখতে হবে। নিজের স্বকীয়তা দিয়ে ভালো করতে পারলে অর্থ আসবেই।"
"এ্যাডিলেইডের অনেক সাবার্বেই বাংলা দোকান নেই। চাকরি ছেড়ে ব্যবসায় আসুন। সফলতা পেতে ধৈর্য্য, সহ্য আর অধ্যবসায় থাকতে হবে," বলেছেন জালাল।মানসিক চাপকে ব্যবসার অংশ হিসেবেই দেখছেন তারা। তবে, মানসিক চাপ নিরসনে মাঠপর্যায়ে সরকারের আরো কাজ করা উচিত বলেও মনে করেন প্রবাসী বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা।
Bangla Bazar SA. Source: Supplied
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য চাইল্ড কেয়ার সুবিধা বাড়ানোর পাশাপাশি বরাদ্দকৃত শতকরা ১০ ভাগ জিএসটি কমিয়ে ৮ ভাগে নামিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ী রাশেদ কবির।