নন্দিত লেখক হুমায়ূন আহমেদের ৭০তম জন্মদিন আজ। ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কুতুবপুরে জন্ম নেন জনপ্রিয় এ কথাশিল্পী।
১৯৭২ সালে প্রকাশিত হয় হুমায়ূন আহমেদের প্রথম উপন্যাস 'নন্দিত নরকে'। যাকে বলা হয় বাংলা সাহিত্যের পালাবদলের উপন্যাস। এরপর আরো তিন শতাধিক গ্রন্থ লিখেছেন তিনি।
উপন্যাস ও নাটকে তার সৃষ্ট চরিত্র ‘হিমু’, ‘মিসির আলী’, ‘শুভ্র’ তরুণ-তরুণীদের কাছে হয়ে ওঠে অনুকরণীয়। আজও ঢাকার রাজপথে হলুদ পাঞ্জাবি পড়ে ঘুড়ে বেড়ায় হিমুরা।
হুমায়ূন আহমেদের প্রতিটি সৃষ্টকর্ম কতটা প্রভাব ফেলত মানুষের মাঝে, তার একটি উদাহরন 'বাকের ভাই' চরিত্র। ১৯৯৩ সালে বিটিভি-তে প্রচারিত 'কোথাও কেউ নেই' ধারাবাহিক নাটকের প্রধান এ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন বর্তমান সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর। নাটকে তার ফাঁসির প্রতিবাদে ঢাকার রাজপথে মিছিল- সমাবেশ করেছিলেন সাধারণ মানুষ।
তার ছোঁয়ায় পরিবর্তন আসে চলচ্চিত্রেও। ১৯৯৪ সালে মুক্তি পায় তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘আগুনের পরশমণি’। পরবর্তীতে শ্যামল ছায়া, শ্রাবন মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা ও নয় নম্বর বিপদ সংকেত। তার সর্বশেষ চলচ্চিত্র ‘ঘেটুপুত্র কমলা’। হুমায়ূন আহমেদ নিজেই তার চলচ্চিত্রের মৌলিক গানগুলোর রচয়িতা, যার বেশিরভাগই পায় তুমুল জনপ্রিয়তা।জনপ্রিয় এ লেখককে রং তুলিতে ফুটিয়ে তুলেছেন প্রবাসী চিত্রশিল্পী পার্থ প্রতিম বালা। সিডনির লাকেম্বা সাবার্বের একটি বাংলা রেষ্টুরেন্টের বর্ধিত অংশে অংকন করা হয়েছে হুমায়ূন আহমেদের এ দেয়ালচিত্র।
শিল্পী পার্থ প্রতিম বালা আঁকছেন জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদের দেয়ালচিত্র। Source: Supplied
"তিনি নিজেই বড় শিল্পী। যখন আঁকছিলাম মনে হচ্ছিল তিনি আমায় দেখছেন। সাতদিন সময় লেগেছে দশ ফুট বাই পনেরো ফুটের এ চিত্র আঁকতে," বলেছেন শিল্পী পার্থ প্রতিম বালা।
"এখানে পরিনত মানুষ হুমায়ূন আহমেদকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি। যেখানে শান্ত এবং চিন্তাশীল তিনি।"
রেষ্টুরেন্ট ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম বলেন, "উনার বই পড়ে আমরা বড় হয়েছি। তাকে সবসময় স্মরণে রাখতে এবং আগামী প্রজন্মের কাছে পরিচিত করতেই এ উদ্যোগ নিয়েছি।"জীবনের শেষ দিনগুলোতে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে হুমায়ূন আহমেদ লিখেছেন 'দেয়াল' উপন্যাস। মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০১২ সালের ১৯ জুলাই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন দুই বাংলার নন্দিত এই কথাশিল্পী ও নির্মাতা।
নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। Source: Supplied