অস্ট্রেলিয়ানদের একটি বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ অভিবাসন এবং বহুসংস্কৃতির নীতির পক্ষে থাকলেও কমিউনিটির মধ্যে সম্প্রীতির বিষয়ে একটি বার্ষিক সমীক্ষায় দেখা যায় এশীয়, আফ্রিকান এবং মধ্য প্রাচ্যের ব্যাকগ্রাউন্ডের মানুষদের প্রতি অস্ট্রেলিয়ানদের মধ্যে নেতিবাচক আছে।
স্ক্যানলন ফাউন্ডেশন রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ২০২০ এর সামাজিক সংহতি রিপোর্টটি বড় ধরনের সংকটে পড়লে অস্ট্রেলিয়ানদের মধ্যে সহিষ্ণুতার মাত্রা কেমন হয় সে সম্পর্কে ধারণা দেয়।
এ বিষয়ে দুটি সমীক্ষা - জুলাই ও নভেম্বর মাসে করা হয়েছিল - জনসংখ্যার সমস্যা এবং সম্প্রদায়গত সম্প্রীতি সম্পর্কে জনগণের মতামত জানতে এতে ১৪০টিরও বেশি প্রশ্ন অন্তর্ভুক্ত ছিল।
প্রতিবেদনের লেখক, ইমেরিটাস অধ্যাপক অ্যান্ড্রু মার্কাস বলেছেন, এতে বোঝা যায় অস্ট্রেলিয়া চাপের মধ্যেও শক্তিশালী অবস্হানে থাকতে সক্ষম হবে।
তবে কোনও জরিপেই ইমিগ্র্যাশনের জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে এবং বিশ্ববাসীর জন্য অস্ট্রেলিয়ার দরজা বন্ধ হোক এমন ইঙ্গিত পাওয়া যায় নি।
৫,০০০ এর বেশি উত্তরদাতাদের একটি বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ উন্মুক্ত বাণিজ্য এবং বৈচিত্র্যময় অভিবাসন গ্রহণকে সমর্থন করে। তবে অস্ট্রেলিয়ানরা ধারাবাহিকভাবেই সংহতির পক্ষে।
লকডাউন, সীমান্ত বন্ধ এবং কর্মী ছাঁটাইয়ের পরেও অস্ট্রেলিয়ার ঐক্যকে দুর্বল করতে পারে, বা অস্ট্রেলিয়ায় জাতিবিদ্বেষ বাড়াতে পারে সমীক্ষায় এমন কোন প্রমাণ পাওয়া যায় নি।
তবে এশীয়, আফ্রিকান এবং মধ্য প্রাচ্যের পটভূমির অস্ট্রেলিয়ানদের প্রতি বেশ নেতিবাচক মনোভাব দেখা গেছে। ৪৯ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন যে তারা ইরাকি ও সুদানীদের প্রতি 'অত্যন্ত নেতিবাচক' বা 'কিছুটা নেতিবাচক' মনোভাব পোষণ করে।
আর এদিকে ৪৭ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন চাইনীজদের প্রতি তাদের নেতিবাচক অনুভূতি রয়েছে।
এক বিবৃতিতে রেস ডিসক্রিমিনেশন কমিশনার চিন টান বলেছেন যে বৈষম্যের এসব বিষয়গুলি ধীরে ধীরে সঠিক দিকেই যাচ্ছে, তবে এখনও অনেক কাজ বাকি আছে।
বিগত বছরগুলির মতো বিপুল সংখ্যক উত্তরদাতারা মুসলিম অস্ট্রেলিয়ানদের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছিল। ২০২০ সালে, ৩৭ শতাংশ উত্তরদাতা মুসলমানদের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে, এর আগের বছর এটি ৪১ শতাংশ ছিল।
তবে এশীয় অস্ট্রেলিয়ান উত্তরদাতারা বৈষম্য নিয়ে বড়ো ধরণের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এশিয়ান দেশে জন্ম নেওয়া উনষাট শতাংশ উত্তরদাতাই মনে করেন যে বর্ণবাদ 'খুব বড় সমস্যা' বা 'মোটামুটি বড় সমস্যা'।
এবং উনচল্লিশ শতাংশ বলেছে যে তারা বৈষম্যের শিকার হয়েছে - যা ২০১৮-১৯ সালের গড় ৪১ শতাংশ থেকে কিছুটা কম।
চাইনীজ-অস্ট্রেলিয়ানদের একটি বিশেষ সমীক্ষায় দেখা গেছে যে বড় সংখ্যক উত্তরদাতা তাদের নেতিবাচক অভিজ্ঞতার ব্যাপারে উত্তর দিতে চায়নি।
চীনা অস্ট্রেলিয়ান উত্তরদাতাদের বাইশ শতাংশ জানিয়েছেন যে কোভিড ১৯ মহামারী শুরুর পর থেকে তারা প্রায়শই বৈষম্যের শিকার হন।
ভিক্টোরিয়ায় এশীয় অস্ট্রেলিয়ান জোটের শীর্ষ আহ্বায়ক, মোলিনা আস্তানা বলেছেন যে এটি অবিশ্বাস্য, তবে অবাক হওয়ার মতো নয়।
গত এপ্রিলে, এশিয়ান অস্ট্রেলিয়ান অ্যালায়েন্স একটি অনলাইন সাইট চালু করে, যেখানে এশীয় অস্ট্রেলিয়ানরা কোভিড ১৯-এর সাথে সম্পর্কিত বর্ণবাদী ঘটনার রিপোর্টগুলো জানাতে পারে।
বেশিরভাগ ঘটনা রাস্তায় ঘটেছিল, কয়েকটি ঘটেছে সুপারমার্কেটে। এর মধ্যে নব্বই শতাংশ ঘটনা কোনও কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়নি।
আরও দেখুনঃ