রুশ সেনাবাহিনী ইউক্রেনে ঢুকে পড়ে তাণ্ডব চালাচ্ছে, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করছে। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধ থামাতে একসঙ্গে কাজ করার আরজি জানিয়েছেন জেলেনস্কি। এর আগে যুদ্ধ পরিস্থিতির প্রথমদিকে দিল্লিতে অবস্থিত ইউক্রেন দূতাবাস থেকে রাষ্ট্রদূত এ বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাহায্য চেয়েছিলেন। সেইমতো ওইদিন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। শান্তির বার্তা দিয়ে জানান, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে।
READ MORE
নতুন এসবিএস রেডিও অ্যাপ ডাউনলোড করুন
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ফোনালাপের পর সে দেশের শান্তির পক্ষে সওয়াল করে বিবৃতি জারি করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাশিয়া এবং ইউক্রেনের বিবাদে জীবন এবং সম্পত্তিহানি হচ্ছে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী আরও একবার হিংসা ছেড়ে বিবাদ মেটানোর জন্য বৈঠক করতে বলেছেন। পাশাপাশি ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয়দের প্রতি বাড়তি নিরাপত্তায়ও গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটদানে বিরত থাকার পর বলা হয়েছিল নয়াদিল্লি এই সংঘাতে রাশিয়ার তরফে রয়েছে। কিন্তু, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাথে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ফোনে কথা বলার পর সম্পূর্ণ যুদ্ধ বিরোধী বিবৃতি দিয়েছে ভারত।
উল্লেখ্য, এর আগে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টি এস তিরুমূর্তি, ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে হিংসার ও শত্রুতা স্থগিত করার জন্য অবিলম্বে বৈঠক করার কথা বলেছিলেন। টি এস তিরুমূর্তি বলেছেন, ইউক্রেনের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে ভারত গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। অবিলম্বে বৈরিতা এবং হিংসা বন্ধের আবেদন জানাচ্ছে ভারত। একমাত্র আলোচনার মাধ্যমেই ইউক্রেন সঙ্কট সমাধানের পথ মিলতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য ভারতের তরফে আগেই ইউক্রেন-পরিস্থিতি নিয়ে ভারসাম্যের কূটনীতির পথে হাঁটার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল।
এর মধ্যে ইউক্রেন-ফেরত ভারতীয়দের স্বাগত জানানোর জন্য গোলাপ হাতে দাঁড়িয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অসামরিক উড়ান পরিবহন মন্ত্রী জ্য়োতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। রবিবার ভোরে দিল্লির বিমানবন্দরে রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্ট থেকে ২৫০ জন ভারতীয়কে নিয়ে ফিরেছে দ্বিতীয় উদ্ধারকারী বিমান এআই ১৯৪২। তাদেরকেই গোলাপ দিয়ে স্বাগত জানিয়েছেন উড়ান পরিবহন মন্ত্রী জ্য়োতিরাদিত্য সিন্ধিয়া।
অন্যদিকে, কেন্দ্রের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, রবিবার এআই ১৯৪০ বিমানটি বুদাপেস্ট থেকে ২৪০ জন ভারতীয় নাগরিক নিয়ে দিল্লিতে অবতরণ করবে। ১৫ ফেব্রুয়ারি বিদেশমন্ত্রকের তরফ থেকে ইউক্রেনে থাকা ভারতীয়দের সতর্ক করা হয়েছিল। তারপর হঠাৎই রাশিয়া ইউক্রেনের উপর হামলা চালালে কেন্দ্র তৎপর হয়ে পড়েছিল তাদের উদ্ধার করার জন্য। বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা জানিয়েছিলেন, প্রায় ১৮ হাজার ভারতীয় নাগরিক ইউক্রেনে আটকে পড়েছিল তাদের মধ্যে ১৬ হাজার পড়ুয়া রয়েছেন।
রাশিয়ার আক্রমণের পর ইউক্রেনের এয়ারস্পেস বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তাই নাগরিকদের বিভিন্ন দেশের সীমান্ত পার করিয়ে নেওয়া নিয়ে আশা হচ্ছে। ভারতীয়দেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার সরাসরি দায়িত্ব নিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। উল্লেখ্য, শনিবার রাতে রোমানিয়া থেকে ২১৯ জন পড়ুয়াকে নিয়ে প্রথম উদ্ধারকারী বিমান মুম্বই বিমানবন্দরে অবতরণ করেছিল।
আর, ইউক্রেনে রাশিয়ান হামলার সময়ে ঘটে যাওয়া এক ঘটনা নিয়ে গান লিখছেন গায়ক এবং তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ কবীর সুমন। নিজের ফেসবুকে গানটি পোস্ট করেছেন তিনি। পুরো গানের লিরিকটি পোস্ট করে লিখেছেন, তাঁর ছেলে অনির্বান সাধুর দাবিতে, ইউক্রেনের এক ঘটনার খবরের ভিত্তিতে লিখেছেন। সুর দেবেন, যাতে অনির্বাণ আর ইরফান হিন্দিতে রূপান্তর করতে পারেন। গানটি হলো:
“কেউ তোলে বন্দুক, কেউ দেয় ফুল,যাকে ফুল দেয় তার ট্রিগারে আঙুল।
কেউ করে বেদখল, কেউ করে ঘর, ফাশিস্ট দখল করে, আমার শহর।”
তারপরই কবীর সুমন লিখেছেন,
“কেউ বলে হাত তোলো, কেউ ধরে হাত, দখল করে কি কারো, খুলেছে বরাত।
বরং ফুলের বীজ, মাটিতে ছড়াও, যুদ্ধ না হয় যেন, আর একটাও।”
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: