গ্লোবাল ট্যালেন্ট স্কিম চালু করা হয়েছিল ১ জুলাই ২০১৮। ১২ মাস পরীক্ষামূলকভাবে চালানোর পর এটি স্থায়ী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ৮ আগস্ট ইমিগ্রেশন মিনিস্টার ডেভিড কোলম্যান এমপি এবং মিনিস্টার ফর ইন্ডাস্ট্রি ক্যারেন অ্যান্ড্রুজ-এর যৌথভাবে দেওয়া একটি মিডিয়া রিলিজে এ কথা জানানো হয়।
গ্লোবাল ট্যালেন্ট স্কিম-এর নাম পরিবর্তন করে এখন গ্লোবাল ট্যালেন্ট- এমপ্লয়ার স্পন্সর্ড প্রোগ্রাম () রাখা হয়েছে।
গত অর্থ-বছরে বিশেষায়িত বিভিন্ন পদের শূন্যস্থান পুরণের জন্য ২৩টি কোম্পানি জিটিইএস চুক্তি সম্পাদন করেছে।
জিটিইস চুক্তির মেয়াদ পাঁচ বছর। এর মাধ্যমে কোনো প্রতিষ্ঠিত ব্যবসার জন্য বছরে ২০ জন পর্যন্ত অতি দক্ষ কর্মীর ভিসার আবেদন করা যায়। আর নতুন ব্যবসার জন্য বছরে ৫ জন এভাবে আনা যায়।
এই প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে হলে এটা দেখাতে হয় যে, তারা অস্ট্রেলিয়ান কর্মী পাচ্ছে না, তাই বিদেশ থেকে দক্ষ কর্মী আনার প্রয়োজন রয়েছে।
যে-সব হাইলি-স্কিলড পজিশন অস্ট্রেলিয়ান কর্মীদের দ্বারা পূরণ করা যায় না এবং অন্যান্য স্ট্যান্ডার্ড ভিসা প্রোগ্রামের মাধ্যমেও পূরণ করা যায় না সে-সব ক্ষেত্রে নিয়োগদাতারা জিটিইএস-এর মাধ্যমে বিদেশী কর্মীদেরকে স্পন্সর করতে পারেন। এটা শুধু অতি-দক্ষ কর্মীদের জন্য প্রযোজ্য।
এখন অস্ট্রেলিয়ান ব্যবসা এবং উদ্যোগগুলোতে এর মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে সর্বোত্তম ট্যালেন্টরা যোগ দিচ্ছেন। তবে, খরচ অনেক বেশি হয় বলে এবং স্থানীয়ভাবে নিয়োগ-বিজ্ঞপ্তি প্রদান করতে হয় বলে এই প্রক্রিয়া আশানুরূপ গতি পাচ্ছে না বলে জানা গেছে।
গত অর্থবছরে একটি সফল পাইলট প্রোগ্রামের পর ইমিগ্রেশন, সিটিজেনশিপ, মাইগ্রেশন সার্ভিসেস ও মাল্টি-কালচারাল অ্যাফেয়ার্স মিনিস্টার ডেভিড কোলম্যান জিটিইএস-কে একটি চলমান প্রোগ্রামে রূপান্তরিত করেন।
তিনি বলেন,
“পাইলট প্রোগ্রামে দেখা গেছে ইন্ডাস্ট্রিতে জিটিইএস-এর শক্তিশালী সমর্থন রয়েছে এবং অস্ট্রেলিয়ান ব্যবসায় বিদেশী ট্যালেন্ট নিয়োগের সরাসরি অর্থনৈতিক সুবিধা রয়েছে।”
“এসব অতি-দক্ষ বিদেশী কর্মীরা তাদের সঙ্গে অনুপম দক্ষতা এবং জ্ঞান নিয়ে আসেন যা অস্ট্রেলিয়ার ব্যবসায় কাজে লাগানো হয়। এর ফলে অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য আরও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা যায়।”মিনিস্টার ফর ইন্ডাস্ট্রি, সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ক্যারেন অ্যান্ড্রুজ বলেন, এই প্রোগ্রাম স্থায়ী করা হলে প্রযুক্তি খাত বিকশিত হতে পারবে। তিনি বলেন,
Minister for Industry Karen Andrews during Question Time in the House of Representatives at Parliament House in Canberra, Wednesday, July 24, 2019. Source: AAP Image/Mick Tsikas
“এই প্রোগ্রামের ফলে আমাদের টেক কোম্পানিগুলো অস্ট্রেলিয়ায় ব্যবসা করার জন্য তাদের চাহিদা অনুসারে দক্ষ কর্মী পাবে এবং বিকশিত হবে। এভাবে আমাদের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে এবং অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য আরও কর্মসংস্থান হবে।”
“আমরা অবশ্যই চাই যেখানে সম্ভব অস্ট্রেলিয়ানরা কাজ পাক। কিন্তু, এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে টেক কোম্পানিগুলো তাদের কর্মীর অভাব পূরণে সহায়তা পাবে। ইতোমধ্যে আমরা দক্ষ কর্মীবাহিনীর উন্নয়নে কাজ চালিয়ে যাব।”
“এসব অতি দক্ষ কর্মীরা শুধু অস্ট্রেলিয়ান ব্যবসাগুলোকেই বিকশিত করতে সহায়তা করবে না, বরং এর পাশাপাশি তারা স্থানীয় কর্মীবাহিনীর সঙ্গে তাদের জ্ঞান শেয়ার করবে এবং তাদের সহকর্মীদেরকেও দক্ষতার উন্নয়নে সহায়তা করবে।”
জিটিইএস-এর দুটি স্ট্রিম রয়েছে: একটি হলো ‘স্টার্টআপস’ বা নতুন ব্যবসার জন্য, যাদের বার্ষিক টার্নওভার চার মিলিয়ন ডলারের কম এবং অপরটি হলো প্রতিষ্ঠিত ব্যবসার জন্য।
অনলাইন গ্রাফিক ডিজাইন বিজনেস ক্যানভা হলো অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সফল একটি স্টার্ট-আপ ব্যবসা। এটি জিটিইএস পাইলট প্রোগ্রামের সঙ্গে যুক্ত। এর সিইও এবং কো-ফাউন্ডার মেলানি পার্কিন্স বলেন, এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে এই মাল্টি-বিলিয়ন ব্যবসার গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করা সহজ হয়েছে।
“বিদেশ থেকে শীর্ষস্থানীয় ট্যালেন্টদের এখানে আমরা আনতে পারি। এটি আমাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়তা করবে যা ক্যানভার ব্যবসায়িক সাফল্যের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।”
“স্কিল ট্রেইনিং এবং নলেজ ট্রান্সফারের মাধ্যমে আমরা প্রযুক্তিতে এবং ইনোভেশনে আমাদের জনগণের দক্ষতা বাড়াতে পারবো। এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবে আরও কর্ম-সংস্থানের পথ খুলে যাবে এবং অস্ট্রেলিয়ায় অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পাবে।”
সকল জিটিইএস চুক্তি দুই সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্তকরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে ডিপার্টমেন্ট অফ হোম অ্যাফেয়ার্স।