ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত ‘বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েটে)’-এর প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া’-“বুয়েটাওয়া” (BUET-AAWA) এক পুনর্মিলনীর আয়োজন করে। পার্থের ‘মিলসপার্ক সেন্টার’ মিলনায়তনে ০৩ অক্টোবর ২০২১ সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত এই পুনর্মিলনীটিতে অংশ নেন সাবেক শিক্ষার্থীরা।
READ MORE
নতুন এসবিএস রেডিও অ্যাপ ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া, দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে মূল অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। এরপর সংগঠনটির সভাপতি ড. মো. জায়েদুর রহমান এর সূচনা বক্তব্যের পর অনুষ্ঠিত হয় “নবীন বরণ” পর্ব।
অনুষ্ঠানের পরবর্তী অংশে প্রবীণ শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণ উপভোগ করেন উপস্থিত সবাই। এসময় ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত সবচেয়ে বয়োজেষ্ঠ্য ছাত্র ড. মহসিন মুত্তাকি’র স্মৃতিচারণায় প্রাক্তন ছাত্ররা আরও একবার তাদের বুয়েট ক্যাম্পাসে হারিয়ে যান।
ড. মহসিন মুত্তাকি তার স্মৃতিচারণায় বলেন, তিনি ১৯৬৭-’৬৮ সালের ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি সে-সময়ের ঢাকা এবং বুয়েটের কিছু চিত্র ও নগরজীবনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন, যা পরবর্তী প্রজন্মের ছাত্রদের চমকিত করে।
মিলনমেলা সম্পর্কে ড. মুত্তাকি বলেন, “পার্থে যত বুয়েট অ্যালামনাই আছে আমি তাদের মধ্যে সবচেয়ে বয়োজেষ্ঠ্য। আমার ব্যাচের আরো দু’জন আছে এখানে। পার্থে বুয়েট অ্যালামনাই দু’বছরের একটু বেশি হলো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম যখন পুর্ণমিলনী হলো তখন খুব আগ্রহ নিয়ে এসেছিলাম আর খুব ভালো লেগেছে সবাইকে কাছে পেয়ে।”“আজকের এই মিলনমেলায় আমরা ষাটের দশক, সত্তরের দশকের এবং পরবর্তী সময়ের স্মৃতিচারণ শুনলাম। অনেকের সাথে দেখা হচ্ছে ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে, সব মিলিয়ে অনেক ভালো লাগছে। আয়োজকরা তাদের শত ব্যস্ততার মাঝে বিভিন্ন কর্মসূচীর আয়োজন করে যাচ্ছেন এবং খুব ভলো হয়েছে সবকিছু। আমি অবশ্যই আয়োজকদের এতো সুন্দর আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ দিতে চাই।”
Source: BUET-AAWA
বুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ড. মো. জায়েদুর রহমান সংগঠনটি গঠনের প্রসঙ্গে বলেন, “দশ বছরের বেশি সময় ধরে আমরা একটা প্লাটফর্ম তৈরি করার কথা ভাবছিলাম। যার ফলে ২০১৯ সালে আমরা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সংগঠিত হই। আর আজকে আমরা এখানে মিলিত হতে পেরেছি।”
“আমরা আজ অনেকেই অস্ট্রেলিয়ায় প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু, প্রতি বছর নতুন নতুন বুয়েট গ্রাজুয়েটরা পার্থে আসছেন। পার্থে তাদের প্রাথমিক প্রতিষ্ঠাসহ চাকুরী ক্ষেত্রে বিভিন্ন সহায়তা প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশের চাকুরীর পরিবেশ আর অস্ট্রেলিয়ার চাকুরীর পরিবেশ এক নয়, এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হতে বিভিন্ন সহায়তাসহ তথ্যগত পরামর্শও তাদেরকে অনেক সহায়তা করবে। ব্যক্তিগতভাবে আমি হয়তো দু’জনকে জানি-সহায়তা করি, কিন্তু যদি একটা প্লাটফর্ম থাকে তাহলে সমষ্টিগতভাবে আরো বৃহত্তর পর্যায়ে অনেকে উপকৃত হবে। এই প্রয়াস নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।”
“আমাদের প্রতিষ্ঠানটি অস্ট্রেলিয়ায়; কিন্তু, কীভাবে আমরা অস্ট্রেলিয়ার উন্নত প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় আমাদের অর্জিত অভিজ্ঞতা দিয়ে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করতে পারি সেজন্য কাজ করে যাওয়ার ইচ্ছা থাকবে সবসময়।”
‘বুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন’-এর কার্যনির্বাহী পরিষদের অন্যতম সদস্য ড. ফয়সাল আনোয়ার বলেন, “আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো পার্থে বুয়েটের অ্যালামনাইদের মাঝে একটা দৃঢ় বন্ধন তৈরি করা; বিশেষ করে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের মাঝে দেশাত্ববোধ সবসময় জাগ্রত রাখা। তারা যেন কখনো ভুলে না যায় যে বাংলাদেশ আমাদের শিকড়, বাংলা আমাদের মাতৃভাষা সেইসাথে আমাদের সমৃদ্ধ একটি বাংলাদেশী সংস্কৃতি আছে।”
তিনি আরো বলেন, “অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে প্রকৌশলীরা যখন প্রথম পার্থে আসবে তখন তাদের বিভিন্নভাবে সহায়তা করা আমাদের লক্ষ্য। কেননা, আমরা জানি যে, প্রথম বিদেশে আসার পর প্রাথমিক প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, এরকম পরিস্থিতিতে আমরা তাদের পাশে থাকতে চাই। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক বা প্রাকৃতিক দূর্যোগে কেউ যেন অসহায় বোধ না করে সেজন্য ভুক্তভোগীদের সহায়তা করার পরিকল্পনাও আমাদের আছে।”মূল অনুষ্ঠানের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম নেয়া এবং বেড়ে ওঠা পরবর্তী প্রজন্মের শিশুদের অংশগ্রহণে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এসময় শিশুরা বাংলাদেশ বিষয়ক বিভিন্ন ছবি আঁকায় তাদের পারদর্শিতা প্রমাণ করে। পরে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
Source: BUET-AAWA
বুয়েটের প্রায় দেড় শতাধিক প্রাক্তন শিক্ষার্থী, তাদের পরিবার ও অস্ট্রেলিয়াতে বেড়ে ওঠা তাদের পরবর্তী প্রজন্মসহ প্রায় তিন শতাধিক অংশগ্রহণকারী অনুষ্ঠানে আনন্দঘন সময় কাটান। অনুষ্ঠানের শেষ অংশে ‘মজার গেম শো’ এবং ‘র্যাফেল ড্র’ অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি